সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

বি’স্ম’য়’ক’র! মানুষের র’ক্তে এই প্রথম পাওয়া গে’লো মাইক্রো প্লা’স্টি’ক

বর্তমানে প্লাস্টিকের ব্যবহার ছাড়া মানুষ চোখে অন্ধকার দেখে। তবে সম্প্রতি গবেষণায় উঠে এসেছে এমন এক ভয়ানক তথ্য, যেখানে বলা হয়েছে প্লাস্টিকের সরঞ্জাম থেকেই মানবদেহে বাসা বাঁধছে মাইক্রো অর্থাৎ অতি সূক্ষ্ম এবং ক্ষুদ্র প্লাস্টিক। যা থেকে মানুষের শরীর বিষক্রিয়ায় ভরে উঠছে। সৃষ্টি হচ্ছে কঠিনতম রোগের।

সুদূর নেদারল্যান্ডের একদল গবেষকদের বক্তব্য, সারাদিন ব্যবহৃত প্লাস্টিকের বিভিন্ন উপকরণ থেকে মানুষের রক্তে মিশে যাচ্ছে মাইক্রো প্লাস্টিক।

সম্প্রতি বেশ কয়েকজন মানুষের রক্ত পরীক্ষা করে রক্তের মধ্যে মাইক্রো প্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছেন ওই বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, বর্তমানে প্লাস্টিকের ব্যাপক ব্যবহারের ফলস্বরূপ মাইক্রো প্লাস্টিকের বিষক্রিয়া তৈরি হচ্ছে মানুষের শরীরে। তার থেকেই বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে মানবদেহে।

আরো পড়ুন: ল’ক্ষ্যে ডিরেক্ট হিট, স’ফ’ল পরীক্ষণ হলো সারফেস টু এয়ার মিসাইলের

• গবেষণায় পাওয়া তথ্য : নেদারল্যান্ডসের ভ্রিজ ইউনিভার্সিটির এক দল গবেষক মানবদেহে মাইক্রো প্লাস্টিকের উপস্থিতি খুঁজে পেয়েছেন। এনভায়রনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে ওই গবেষণা তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে। ২২ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ওই ২২ জনের মধ্যে ১৭ জন মানুষের রক্তে তাঁরা মাইক্রো প্লাস্টিকের সন্ধান পেয়েছেন। তবে এও জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তিরা কেউই অসুস্থ ছিলেন না।

• মানব শরীরে মাইক্রো প্লাস্টিক প্রবেশ : সারাদিন মানুষ নিত্য প্রয়োজনে ব্যাপকহারে প্লাস্টিক ব্যবহার করে, আর প্লাস্টিকের বড় উপকরণ থেকেই মাইক্রো প্লাস্টিক অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত ছোট উপাদান মানুষের রক্তে মিশে যায়। এ প্রসঙ্গে বিজ্ঞানীদের দাবি, এগুলো মানবদেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করা এক প্রকার অসম্ভব।

গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাপ্তবয়স্ক কয়েকজন ব্যক্তির রক্ত পরীক্ষা চলাকালীন অর্ধেকের রক্তের নমুনায় পানীয় জলের বোতল তৈরিতে ব্যবহৃত পিইটি প্লাস্টিক পাওয়া গেছে। আবার এক তৃতীয়াংশের শরীরে পলিস্টেরিন রয়েছে। এগুলো মূলত খাদ্য এবং অন্যান্য দ্রব্যের প্যাকেজিংয়ের কাজে লাগে। আর এক চতুর্থাংশের শরীরে পাওয়া গেছে প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরিতে ব্যবহৃত পলিথিন।

• মাইক্রো প্লাস্টিক : বিজ্ঞানীদের কথায়, ০.২ ইঞ্চি বা ৫ মিলিমিটার ব্যাস যুক্ত প্লাস্টিক কণার তুলনায় ছোট কণাকে মাইক্রো প্লাস্টিক বলে। অর্থাৎ এটি হল প্লাস্টিকের একটি টুকরো। মাইক্রো প্লাস্টিকের পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত বড় কণাগুলোও বর্তমানে গোটা পৃথিবী জুড়ে দূষণ ঘটাচ্ছে।

আরো পড়ুন: এনকাউন্টারের ভ’য়ে জ’ব্দ অ’প’রা’ধী’রা, যোগী ক্ষ’ম’তা’য় ফিরতেই ৫০ জনের আত্মসমর্পণ

এমনকি গবেষকরা এও জানিয়েছেন, গবেষণা চলাকালীন শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মলে মাইক্রো প্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গেছে। পরিবেশের সাথে সাথে মানুষের রক্তে তা মিশে যাচ্ছে। এগুলোর কোনও ক্ষয় নেই বলেই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এর ফল মানবদেহে মারাত্মক বিষক্রিয়ার সৃষ্টি করে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

• মাইক্রো প্লাস্টিক তৈরি : প্লাস্টিকের বড় জিনিস ভেঙে গিয়ে পরিবেশে মাইক্রো প্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রসাধনী দ্রব্য এবং সৌন্দর্য পণ্যগুলিতে ব্যবহার করা বড় প্লাস্টিক উপাদান ভেঙে মাইক্রো প্লাস্টিক তৈরি হয়। এছাড়াও প্লাস্টিকের বোতল, ব্যাগ, মাছ ধরার জাল এবং খাদ্য প্যাকেজিংয়ের মতো প্লাস্টিক পণ্যগুলি মাইক্রোপ্লাস্টিকে ভেঙে যায়।

অবশেষে ওই মাইক্রো প্লাস্টিক কণাগুলো মাটি, জল এবং বাতাসের সঙ্গে পরিবেশে মিশে যায়। পাশাপাশি মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় দাঁত মাজার টুথপেস্টের উপাদানগুলিতে মাইক্রো প্লাস্টিকের ব্যবহার করা হয় পলিথিন হিসাবে। তবে এই মাইক্রো প্লাস্টিক উপাদানটিকে ‘কুলিং ক্রিস্টাল’ হিসাবে টুথপেস্টে মিশিয়ে তা বাজারে বিক্রি করা হয়।

• মানুষের শরীরে মাইক্রো প্লাস্টিকের প্রভাব : মাইক্রো প্লাস্টিকের অতি ক্ষুদ্র কণা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে তা রক্তের সঙ্গে মিশে থাকে। তবে এই ক্ষুদ্র কণার প্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত কোনো তথ্য দিতে না পারলেও মানবদেহের কোষে যে এগুলো মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এই বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। তাই প্লাস্টিক উপাদান ব্যবহার না করার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।