দীর্ঘ সময় ধরে এত প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও, রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের যুদ্ধ বাধার পর আমেরিকা কেবল রাশিয়ার ওপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যা দেখে সত্যিই অবাক হয়েছে জাপান। ঠিক এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বলেছেন, যদি রাশিয়ার দেখানো পথেই চীন হাঁটতে শুরু করে।
আর ঠিক সেই পথ ধরেই যদি তাইওয়ান দখল করার উদ্যোগ গ্রহণ করে চিন, তাহলে কি এখানেও আমেরিকা এভাবেই চুপ করে বসে থাকবে? এক্ষেত্রে আমেরিকার অবস্থান কি হওয়া উচিত সেটা জানার জন্য প্রশ্ন তুলেছেন শিনজো আবে। এমনকি জাপানের আণবিক নীতি বদল এর ক্ষেত্রেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনকে নিজেদের করে নিতে চাইছে, ঠিক এভাবেই তাইওয়ান কেউ চীন নিজেদের করে নিতে চাইছে বহুদিন থেকে।
তাইওয়ান কে চিন নিজেদের বিচ্ছিন্ন প্রদেশের অংশগুলি মনে করছে বহুদিন থেকে। এর সাথেই চীনের সার্বভৌমত্বের দাবি ফলাতে চাইছে তাইওয়ান এর ওপর বহুদিন থেকেই। কিন্তু চীনের এই ধরনের কর্মকান্ডের জন্য তাইওয়ান সরকার জানিয়েছেন, আমরা শান্তি চাই কিন্তু নিজেদের দেশকে বাঁচাতে নিজেদের আত্মরক্ষা করতে প্রয়োজনে যা করণীয় তাই করব। তবে তাইওয়ানকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে আমেরিকা।
আরো পড়ুন: মার্চ মাসে কি কি ক্ষে’ত্রে নি’য়’ম পরিবর্তন হ’চ্ছে দেখে নিন
কিন্তু তাইওয়ানের সাথে যদি চীনের যুদ্ধ বেধে যায় ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে, তাহলে কি ইউক্রেনের মত তাইওয়ান একাই লড়াই করবে? না পাশে এসে দাঁড়াবে আমেরিকা? এই ধরনের প্রশ্ন উঠে এসেছে শিনজো আবের গলায়। তিনি এখানেই শেষ করেননি।
তিনি আরো বলেছেন, চীন যদি তাইওয়ান এর ওপর হামলা করে তাহলে জাপানের ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। চুক্তি অনুযায়ী তাইওয়ানকে রক্ষা করার স্বার্থে আমেরিকাকে পাশে দাঁড়াতেই হবে।
কিন্তু বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করে দেখা যাচ্ছে, ইউক্রেনের মত দেশগুলোর যখন খুবই সাহায্যের সময় তখন আমেরিকা চুপচাপ বসে রয়েছে। যদি এমন তাইওয়ানের ক্ষেত্রেও ঘটে, তাহলে পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধা যোগ্য হবেনা বলেই মনে করছে শিনজো আবে। শুধু তাইওয়ান নয়, জাপানের সেনকাকু দ্বিতীয় হামলা করার সম্ভাবনা রয়েছে চীনের। এক্ষেত্রে এই হামলা জাপানের পক্ষে অনেকটাই চাপের হবে বলে মনে করছে।
চীনের মতো পরমাণু শক্তিধর দেশ যদি জাপানের উপর হামলা করে, তাহলে পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটাই অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে তাদের। কারণ ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে জাপানের মাটিতে আনবিক অস্ত্র উৎপাদন হয় না।
এর জন্য তারা সরাসরি আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল এই মুহূর্তে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, যদি অসুবিধার সম্মুখীন হয় তারা , তাহলে আমেরিকা কি আদৌ তাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে? এই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।