সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

এখানে ভুঁড়িওয়ালাদের দেওয়া হয় সর্বোচ্চ স’ম্মা’ন, যাদের “ভুঁড়ি” আছে তারাই বে’শি সুন্দর

আজকাল মানুষ নিজের স্বাস্থ্য এবং সৌন্দর্য সম্পর্কে এতটাই সচেতন হয়ে উঠেছেন যে পেটে একটু মেদ জমলেই তাদের মুখ কেমন যেন হাঁড়ি হয়ে যায়। তাই বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ শরীরের মেদ জমাতে এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ সচল রাখতে জিমে দৌড়ান, যোগা করন, ডায়েট চার্ট ফলো করেন, হিসেব করে খাবার খান।

অথচ, এই পৃথিবীতেই এমন এক উপজাতি রয়েছে যেখানকার পুরুষরা তাদের গ্রামের বার্ষিক মোটা প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়ার জন্য ভুঁড়ি বাড়ান এবং তার জন্য জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন। গ্রামের বার্ষিক মোটা প্রতিযোগিতায় প্রথম হলেই সে সারা জীবনের জন্য নায়ক হয়ে যাবে।

এই উপজাতির মানুষদের কাছে মোটা মানুষদেরই কদর বেশি। ভুঁড়িতেই তাদের সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে। এমনকি বিয়ের ক্ষেত্রেও ভুঁড়িওয়ালা মোটা পুরুষদেরই কদর বেশি। এই উপজাতির নাম হল বদি উপজাতি। এটি একটি আফ্রিকান উপজাতি। ইথিওপিয়ার ওমো উপত্যকার এক প্রত্যন্ত কোণে এদের বাস। তাদের গ্রামে রয়েছে একটি বিশেষ নিয়ম।

আরো পড়ুন: এই কয়েকটি গুণ থা’কা নারীদের স’ঙ্গ কখনো ছাড়তে চান না কো’নো পুরুষ!

সেখানে ‘হিরো’ বলতে কোনো সাহসিকতার পরিচয় লাগে না। কি লাগে বলুন তো! চলুন আসল ঘটনা কি তা জেনে নেওয়া যাক। প্রতি বছর নববর্ষের সময় এই গ্রামে একটি উৎসব হয় যার নাম ‘কায়েল’। ওই উৎসবকে কেন্দ্র করে হয় একটি প্রতিযোগিতা। তাই উৎসবের ছয় মাস আগে প্রতিযোগিতার জন্য ওই গ্রাম থেকে কিছু যুবককে বাছাই করা হয়।

পরের ছয় মাস তাদের নিভৃতবাসে রেখে আদর আপ্যায়ন সহযোগে বিশেষ খাবার এবং পানীয় খাওয়ানো হয়। তারপর, সেই উৎসবে তারা তাদের নতুন মোটা শরীর প্রদর্শন করে। সেই শরীর প্রতিযোগিতায় যে বিজয়ী হয়, সে সারা জীবনের জন্য ওই গ্রামে নায়কের সম্মান পায়। আপনাদের নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছা করছে যে কি এমন খাবার খাওয়ানো হয় যার জেরে তার এই ক’মাসেই এতটা মোটা হয়ে যায়।

সূত্রে খবর, গরুর রক্ত ​​এবং দুধ মিশিয়ে এক বিশেষ মিশ্রণ তৈরি করে গ্রামের মহিলারা ওই যুবকদের নিয়মিত পরিবেশন করে থাকেন। মনে করা হয়, এই বিশেষ পানীয়ই তাদের বড় পেট বা ভুঁড়ির উৎস। একটি দুই-লিটারের পাত্রে ওই মিশ্রন দেওয়া হয়। সেই মিশ্রন খানিকক্ষণ রাখলেই জমাট বেঁধে যেতে পারে। তাই অত্যন্ত দ্রুত পান করতে হয়।

তবে সেখানকার প্রচন্ড গরমের মধ্যে দ্রুত গতিতে ওই মিশ্রন পান করা সবার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। অনেকে, বমিও করে ফেলে। তারা অযোগ্য হিসাবে বিবেচিত হয় এবং প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ে। তাই শেষ পর্যন্ত যারা টিকে যায় তারাই কায়েল উৎসবের ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।

আরো পড়ুন: মুখোমুখি মাধুরী-করিশ্মা, দুজনকে একসাথে দেখে আ’বে’গে ভা’স’লে’ন জনতা

গরুর রক্ত মানে তো গরু হত্যা করতে হবে। তবে জানা গেছে এই মিশ্রন তৈরির জন্য কোন গরুকেই হত্যা করা হয় না। কারণ বদি উপজাতির কাছে গরু খুবই পবিত্র। তাই, গরুর রক্ত সংগ্রহের জন্য একটি বর্শা বা একটি কুড়ুল দিয়ে গরুর একটি শিরা কেটে রক্ত বের করে আবার কাদামাটি দিয়ে ওই ক্ষত নিরাময় করে দেওয়া হয়।

ছয়মাস ধরে এই বিশেষ ডায়েটের মধ্যে থেকে তাদের শরীরের আশ্চর্য রকম পরিবর্তন ঘটে। সেই শরীরে তারা মাটি এবং ছাই দিয়ে নকশা আঁকে। মহিলারা তাদের শরীরে বেঁধে দেন নানারকম রঙিন পাথরের তৈরি অলঙ্কার। আর এমন সাজেই ওই প্রতিযোগীরা নিভৃতবাস থেকে বেরিয়ে হেঁটে অনুষ্ঠানস্থলে আসে।

এরপর, একটি পবিত্র গাছের চারপাশে দীর্ঘ কয়েক ঘন্টা ধরে বৃত্তাকারে হাঁটতে হয় তাদের। গ্রামের বাকি পুরুষরা চারপাশে দাঁড়িয়ে তাদের হাঁটা দেখেন। তবে অতিরিক্ত ওজন এবং ভুঁড়ির চাপে, ওই যুবকদের পক্ষে এই হাঁটাটা অত্যন্ত কষ্টকর। অনেকেই, সেই পরিশ্রম সহ্য করতে পারেন না।

আরো পড়ুন: ভোটে কে’ন হা’র হলো? পর্যালোচনা করতে গোয়াতে নতুন ক’মি’টি গ’ঠ’ন তৃণমূলের

গ্রামের মহিলাদের এই প্রতিযোগিতায় আলাদা দায়িত্ব থাকে। তারা প্রতিযোগীদের মদ পান করান। তাদের ঘাম মুছিয়ে দেন। সবচেয়ে মোটা ব্যক্তি নির্বাচিত হওয়ার পর, গ্রামের প্রবীণরা বিজয়ীর ভবিষ্যত নির্ণয়ের জন্য তার ভুঁড়ি ও রক্ত ​​পরীক্ষা করেন। সবশেষে একটি বড় পবিত্র পাথর দিয়ে একটি গরু জবাই করে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

কায়েল উৎসব শেষ হওয়ার পর তারা খাওয়া কমিয়ে দেয়, তাই বেশ কিছু সপ্তাহের মধ্যেই এই পুরুষরা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন। তাদের অধিকাংশেরই ভুঁড়ি কমে যায়। তারপর আবার আগামী বছরের প্রতিযোগিতার জন্য কয়েকজন পুরুষকে বেছে নেওয়া হয়। ভাবছেন কি! ভুঁড়ি কমে গেল মানে তাদের সম্মানও কমে গেল! তা কিন্তু নয়। কায়েল-এর বিজয়ীরা সারা জীবনই গ্রামে সম্মান পেয়ে থাকেন। ছোট থেকেই সম্মান পাওয়ার আশায় এই উপজাতির পুরুষদের স্বপ্ন থাকে কায়েল প্রতিযোগিতা জেতার।