থার্ড জেন্ডার বা তৃতীয় লিঙ্গ এই শব্দ গুলোকে একটু অন্যভাবে দেখে সমাজ। সংবিধানে সমান অধিকার আইন প্রদান করলেও সমাজ এখনও যেনো ততটা মেনে নিতে পারেনি। ফলে তাদের জীবিকা অনেকেরই আগে যা ছিল আজও তেমনি আছে।
অনেকে আবার বহু লড়াই করে জীবনের একটা লক্ষ্যে পৌঁছতে পারছে। ঠিক সেরকমই কিছু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের ছত্রিশগড় সরকার দিলেন এক বিশেষ সন্মান। যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
সম্প্রতি, রাজ্যের বস্তার বিভাগের সাতটি মাও অধ্যূষিত জেলায়, মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য ‘বস্তার ফাইটার ফোর্স’ নামে এক নতুন বাহিনী গঠন করা হয়েছে। এই বাহিনী মোট ২১০০ জনকে নিয়ে গঠন করা হবে। এবং এখানে স্থানীয় যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে শুধু যুবকদেরই নয় এই প্রথমবার তৃতীয় লিঙ্গের ৯ জনকে নেওয়া হয়েছে এই পদে। এবার, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হবেন তাঁরাও। এরাও মাওবাদীদের ঘাঁটি খুঁজে বের করবে।
তাদের আস্তানায় ঢুকে লড়াই করবে। এই সন্মান ওই সমাজের মানুষগুলোর জন্য খুব আনন্দের তা তারা জানিয়েছে। এই ‘বস্তার ফাইটার ফোর্স নির্বাচনের পরীক্ষা মোটেও সহজ ছিল না। মাওবাদীদের মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা প্রয়োজন। তার ভিত্তিতেই এই বাহিনীর সদস্যদের বেছে নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে মোট ৫৩,০০০ আগ্রহী প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচিত হয়েছেন মাত্র ২১০০। আর এত কঠিন পরীক্ষাতেও ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ জায়গা করে নিতে পেরেছে।
আরো পড়ুন: রূপঙ্করের গান আগেই বা’দ দিয়েছে Mio Amore, এবার সংস্থার ন’তু’ন গান গাইলেন সোমলতা
সাধারণত পুংলিঙ্গের বা স্ত্রী লিঙ্গের মানুষদের যোগ্যতার মাপকাঠি যেমন হয় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদেরও একই মাপকাঠি ছিল।তৃতীয় লিঙ্গের যে নয় জন জায়গা করে নিলেন এই ফোর্স তে তারা হলেন দিব্যা, দামিনী, সন্ধ্যা, সানু, রানি হিমাংশি, রিয়া, সীমা এবং বরখা। এঁদের মধ্যে ৮ জন কাঙ্কের জেলার বাসিন্দা এবং অপরজন বস্তার জেলার। এই ৯ জন ছত্তীশগড়পুলিশে চাকরি পাওয়ায়, রাজ্যের রূপান্তরকামী সমাজে স্বাভাবিকভাবেই আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে।
এই ৯ জনের অন্যতম বরখা বলে যিনি রয়েছেন তাঁর জীবনটা আরো সকলের থেকে একটু বেশি প্রতিকূল ছিলো বলে জানা গিয়েছে। রূপান্তরকামী বরখা ওরফে অনিলের, একজন নপুংসক সমাজের মানুষ। এই সমাজে গুরু-শিষ্য ঐতিহ্য রয়েছে। ঐ সমাজ থেকে সরে এসে তাঁর পুলিশ বাহিনীতে চাকরি করতে যাওয়াটা, তাঁর সমাজর প্রবীণদের ক্ষিপ্ত করে তুলেছিল। তাঁরা কেউ পছন্দ করেনি তার এই সিদ্ধান্ত। ফলত তার উপর অত্যাচারওহয় বলে জানা যায়।
তার মনের জোর কমিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা করা হয়। চুল ছোট করে কেটে দেওয়া হয়। তার পরেও অনেক লড়াই পর সে এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে বলে জানা যায়। বরখা বলেন, “আমাদের সম্প্রদায়কে সমাজের মূল স্রোতে যুক্ত করার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা দরকার। আমরা সবাই স্বাভাবিক জীবন চাই। জীবিকার প্রশ্নটাই আমাদের সামনে সবচেয়ে বড়।”