বাবা ধার করে মারা গিয়েছেন। আর প্রয়াত বাবার সেই ধার মেটাতে নাজেহাল অবস্থা হয়েছে কর্ণাটকের বাসিন্দা নাজারের। মৃত্যুর আগে কর্ণাটকের বাসিন্দা নাজার বাবার একজনের কাছেই ধার ছিল, আর তার শেষ ইচ্ছে ছিল সেই ব্যক্তির ধার মেটানো।
কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে একই নামের একাধিক ব্যক্তি পাওনাদার বলে দাবি করছেন। লুইস নামে এক ব্যক্তির খোঁজে স্থানীয় সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলেন নাজার। আর তার পরেই শুরু হয় যত ঝামেলা।
আরো পড়ুন: ৩ পাক পাচারকারী খ’ত’ম ভারতীয় সেনার গুলিতে, উ’দ্ধা’র ১৮০ কো’টি’র মা’দ’ক
১৯৮০ সালে দুবাইয়ে থাকাকালীন তিরুবনন্তপুরমের বাসিন্দা আবদুল্লা প্রায় বিপদে পড়ে ২২ হাজার টাকা ধার নেন লুইস নামের এক ব্যক্তির থেকে। সেই সময় কাজ না থাকায় হাতে ছিল না কোনো টাকাপয়সা। এই অবস্থায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই লুইসের থেকে ওই টাকা ধার করেন নাজার বাবা আবদুল্লা।
পরে আবদুল্লার আর্থিক অবস্থার উন্নতি ঘটলেও সেদিনের সেই উপকারী ব্যক্তি লুইসের সঙ্গে তাঁর কোনোরূপ যোগাযোগ ছিল না। গোটা জীবনে কাউকে কিছু জানতে না দিয়ে দেনার ভার বয়ে বেরিয়েছেন আবদুল্লা। অবশেষে মৃত্যুর দু’বছর আগে সেই ‘ঋণে’র কথা পরিবারকে জানান তিনি। গত ২৩ জানুয়ারি মৃত্যু হয়েছে আবদুল্লার। শেষ ইচ্ছায় লুইসের দেনা শোধ করার কথা আবদুল্লা সকলকে বললে তার আক্ষেপ দূর করতে আবদুল্লার পরিবার পরোপকারী লুইসের খোঁজ শুরু করেন।
আরো পড়ুন: লতা মঙ্গেশকর কেন বি’য়ে করেননি? কারণ ব্য’ক্ত করলেন বোন
যদিও লুইসের সম্পর্কে আবদুল্লা শুধু বলে গেছিলেন, লুইসের বাড়ি কোল্লামে, তাঁর ভাইয়ের নাম বেবি। এটুকু তথ্য নিয়েই প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে বাবার পাওনাদারের খোঁজ শুরু করেন নাজার। এরপর অন্য কোনো উপায় না পেয়ে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেন তিনি। গত ৩১ জানুয়ারি একটি মলয়ালম সংবাদপত্রে টাকা পরিশোধের কথা উল্লেখ করে সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। আর তারপরেই শুরু হয় এক অদ্ভুত ঝামেলার।
একাধিক ব্যক্তি নিজেদের লুইস বলে দাবি করা শুরু করেন। বিজ্ঞাপনে দেওয়া নাজার ফোন নম্বরে বারংবার ফোন আসতে থাকে। দু’জন জানান, তাদের বাবাই লুইস। তাঁর মৃত্যু হয়েছে। একজন ফোন করে বলেন, তাঁর বাবা লুইস তবে তাঁদের টাকার প্রয়োজন নেই। এক ব্যক্তি নিজেকে লুইসের সন্তান বলে দাবি করে টাকার দাবি জানিয়েছেন । বর্তমানে তাদের আর্থিক অবস্থা নাকি ভাল নেই।
আরো পড়ুন: শীত নিয়ে এ কেমন বা’র্তা দিলো আবহাওয়া দপ্তর! তাপমাত্রা ক’ম’বে না গরম বা’ড়’বে?
এর মধ্যে নাজার খোঁজ পেয়েছেন এমন এক ব্যক্তির যিনি আবদুল্লা ও লুইস উভয়কেই চিনতেন। তাঁর নাম রশিদ। রশিদের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন নাজার। এমতাবস্থায় দাবিদারদের লুইসের ছবি নিয়ে দেখা করতে বলেছেন নাজার। ইতিমধ্যে পাঁচ জন ছবি-সহ যোগাযোগ করলেও রশিদ জানিয়েছেন, এরা কেউই সেই লুইস নন। এতকিছু হওয়া সত্ত্বেও নাজার পিছু হটেননি বরং তিনি বলেন, “বাবাকে সেই সময় যে টাকা দিয়েছিলেন লুইস। তার থেকে বেশি টাকা দিতে রাজি আছি আমরা। কিন্তু বাবার দেনা শোধ করবই।”