প্রেম বা ভালোবাসা সব সময়ই খুব প্রবিত্র একটা বিষয়। দুটো ভালো মানুষ একে অপরের সাথে জুড়লে তাদের জীবন যাপন অনেক সুন্দর হয়। একে অপরকে বুঝলে অনেক সমস্যাই কাটিয়ে উঠতে পারে যায়। কিন্তু মনের মানুষ নির্বাচনে ভুল হয়ে গেলে অনেক ভালো স্বাভাবিক সম্পর্কও শেষ হয়ে যায়। আর সম্প্রতি ভালোবাসার যে নৃসংশ নমুনা দেখলো দিল্লি তাতে সকলের গা শিউরে উঠছে। গোটা দিল্লি জুড়ে এখন যে খবরটি সব চেয়ে বেশি চর্চিত হচ্ছে প্রেমিকের হাতে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছেন প্রেমিকা। আর এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন ওই প্রেমিকা অর্থাৎ শ্রদ্ধা ওয়েলকারের বাবা বিকাশ মদন ওয়েলকার।
তিনি তাঁর মেয়ের এই পরিণতিতে চূড়ান্ত মর্মাহত। এফআইআর ও করেন তিনি। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি জানান, “শ্রদ্ধা খুব ভাল মেয়ে ছিল। ফ্যাশন ট্যাশন কিছু করত না। একদম সাধারণভাবে থাকত। যখন থেকে ও প্রথম চাকরি করা শুরু করেছিল এবং ওর সঙ্গে এই ছেলেটির দেখা হয়েছিল, তখন থেকেই লাইফস্টাইলে পরিবর্তন এসেছিল শ্রদ্ধার।”
আসলে ২০১৮ সালে কল সেন্টারে এই জবটা পায় শ্রদ্ধা। আর এই আফতাব ছেলেটি শ্রদ্ধায় অফিসের সহ কর্মী ছিল। সেখানে কাজ করতে করতেই তারা প্রেমে পড়ে। এবং একসময় ঠিক করে তারা লিভ ইন রেলেশনশিপ – এ থাকবে। আর এই বিষয়ে শ্রদ্ধা তার বাবা মা কে জানালে তারা আপত্তি করেন।আর এটা শোনার পরেই শ্রদ্ধার জেদ আরো বেড়ে যায়। শ্রদ্ধা বলেছিলেন, “আমার বয়স ২৫। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সম্পূর্ণ অধিকার আছে আমার। আমি আফতাবের সঙ্গে লিভ-ইন সম্পর্ক থাকতে চাই। আজ থেকে তোমরা ভাবতে পারো যে, তোমাদের কোনও মেয়ে ছিল না।”
আরো পড়ুন: বেডরুমে থা’কা আলমারিতে রা’খা এই জিনিসগুলো আপনার ভা’গ্য ব’দ’লে দিতে স’ক্ষ’ম!
এরপর তিনি তাঁর জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তখনও বোঝেনি যে মানুষটার উপর এত ভরসা করে বেরিয়ে যাচ্ছেন সে আদৌ সুস্থ মানুষ কিনা। ভালো মন্দ তো অনেক দূরের ব্যাপার। কারণ এই খুনের তদন্তে সামনে এসেছে যে আফতাব আমিন পুনেওয়ালা একজন সুস্থ মানুষই নয়। মেন্টাল ডিসঅর্ডার আছে তাঁর। মনস্তত্ত্ববিদ ওম প্রকাশ সিং এই বিষয়ে জানান যে, “একে আমরা বলি সাইকোপ্যাথিক পার্সোনালিটি।
এরা নিজেদের ছাড়া আর কারোর কথা ভাবে না। সব সম্পর্কই তারা গড়ে নিজেকে খুশি করার জন্য। বাকিরা তাদের কাছে অবজেক্ট বা বস্তু। তাদের মানুষ বলেই মনে করে না। শুধু উনি নন মনস্তত্ত্ববিদ প্রদীপ সাহা বলেছেন, “যারা পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা অত্যন্ত সুন্দর কথা বলতে পারে।
যে কোনও মানুষের সঙ্গে খুব সহজেই বন্ধুত্ব করতে পারে, মিশে যেতে পারে। এরা সবসময় আত্মকেন্দ্রিক।” তাই শ্রদ্ধা একটা ভুল মানুষকে ভালোবেসেছিলো, যে কখনো ভালোই বসেনি ওকে। শুধু নিজের জন্যই শ্রদ্ধাকে নিজের কাছে আটকে রেখেছিল আফতাব। আর তাই তার পরিণতি এমন হলো।