সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

লোকনৃত্যে অবদানের জ’ন্য রূপান্তরকা’মী শি’ল্পী পেলেন পদ্মশ্রী, সৌজন্যমূলক আ’চ’র’ণ ভাইরাল

মঞ্চে তাঁর নাম ঘোষণা হতেই মঞ্জাম্মা সেদিকে হেঁটে যান সাবলীল ভঙ্গিতে৷ সম্মাননা গ্রহণের দিন তাঁর পরনে ছিল উজ্জ্বল বেগুনি রঙের শাড়ি৷ পায়ে ছিল রুপোর মোটা মল। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে যা তা হল তাঁর পা ছিল পাদুকাহীন৷ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন, তার আগে ভূমিপ্রণাম করেন৷ তার পর রাষ্ট্রপতিকে শুভেচ্ছা জানান মঞ্জাম্মা৷ এর পর সম্মাননা গ্রহণ পর্ব শুরু হয়। পদ্ম সম্মান গ্রহণের আগে তাঁর অনবদ্য সৌজন্য আচরণ ভঙ্গিমা কেড়ে নিয়েছে নেটিজেনদের মন৷

মঞ্জাম্মার জন্ম বল্লরী জেলায়৷ তাঁর জন্ম নাম ‘মঞ্জুনাথ শেট্টী’। দশম শ্রেণি অবধি পড়াশোনা করার পর মঞ্জুনাথ যখন কৈশোর বয়সে পদার্পণ করেন তখন তিনি বুঝতে পারেন তিনি দেখতে পুরুষ হলেও অনুভূতিতে তিনি প্রকৃতপক্ষে একজন নারী। খুব স্বাভাবিক ভাবেই আর পাঁচটা পরিবারের মতো তাঁর এই অনুভূতি মেনে নিতে পারেননি তাঁর পরিবার পরিজনরাও৷

পরিবার থেকে পরিত্যক্ত হন মঞ্জুনাথ। তারপর থেকে পরনে শাড়ি দিয়ে চলতে থাকে ভিক্ষাবৃত্তি, এইভাবে ভিক্ষা করে দিন কাটত তাঁর। তাঁর কথায়, সেই পরিস্থিতি তে দাঁড়িয়ে বহু বারযৌনলাঞ্ছিত হতে হয়েছে তাঁকে। এমনকি এত কষ্ট সহ্য করেও অনেক বার নিজের জীবন শেষ করে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন৷ কিন্তু সবকিছু কি এতোই সহজ! জীবন সত্যিই হয়তো তাঁকে অন্যরকম কিছু উপহার দিতে চেয়েছিল।

তারপর এক সহৃদয় ব্যক্তি কল্লাভা যোগাথির সান্নিধ্যে আসেন মঞ্জুনাথ৷ তাঁর কাছেই শেখেন যোগাপ্পা সম্প্রদায়ের লোকনৃত্য যোগাথি৷ ক্রমে বিভিন্ন জায়গায় পারফর্ম করতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে মঞ্জুনাথ নৃত্যকলার সাহচর্যে হয়ে ওঠেন স্বপ্নসন্ধানী৷ আর তার সাথেই ‘মঞ্জুনাথ’ থেকে ‘মঞ্জাম্মা’ হয়ে ওঠেন ৷

নৃত্যগুরু কল্লাভা যোগাথির মৃত্যু হয়েছে। এখন তিনিই নাচের দলের কর্ণধার। তাঁর হাত ধরে এই নৃত্যশৈলী খুবই জনপ্রিয় হয়েছে৷ শিল্পকলার প্রসারের উদ্দেশে কর্নাটক সরকারের সংস্থা ‘জনপদ অ্যাকাডেমি’-র প্রথম রূপান্তরকামী প্রেসিডেন্ট মঞ্জাম্মা৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় মঞ্জাম্মার পুরস্কার গ্রহণের আগের আচরণ-ভঙ্গিমা চূড়ান্ত ভাইরাল হয়েছে৷ আর নেটিজেনদের সবথেকে বেশি প্রভাবিত করেছে তাঁর বর্ণময় জীবনসংগ্রাম৷