সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মাটি-বাঁশ-সিমেন্ট দি’য়ে বা’না’নো পদ্মা সেতু!

সোহাগ ধামরাইয়ের সুতিপাড়া এলাকার কৃষক মোহাম্মদ সুলতান আলীর ছেলে নিজ বাড়িতে অবিকল পদ্মা সেতুর আদলে একটি সেতু তৈরি করেছে। সেতুটি তৈরি করতে সোহাগ ব্যবহার করেছে মাটি, বাঁশ, সিমেন্ট, মোবাইলে ব্যবহার করা ছোট আলো ও সাদা-কালো রঙ। বাড়ির আঙ্গিনায় এই পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে।

সেতুটিতে চারটি লেন করা হয়েছে। নীচ দিয়ে তৈরি রেললাইন করা হয়েছে। তার নীচে মাটি খুঁড়ে রূপ দেওয়া হয়েছে পদ্মা নদীর। দুই লেনের মাঝখানে ফুলের চারা রাখা হয়েছে, তার এক ধারে রয়েছে চেকপোস্ট। এক কথায় এটি যেন আসল পদ্মা সেতু।

সেতুটি দেখতে গ্রামবাসীদের পাশাপাশি দূর-দূরান্তের অনেক লোক ভিড় জমাচ্ছেন বলে খবর। এই সেতু তৈরী করার শুরুতে বাবা-মা প্রতিবেশীদের অনেক বকাঝকা শুনতে হয়েছে তাকে। যদিও এখন সকলে মুগ্ধ।

সোহাগ ভালুম আতাউর রহমান খান স্কুল ও কলেজে ব্যবসা শাখার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ প্রসঙ্গে সোহাগ বলে, এর আগে ২০১৯ সালে সে একটি সেতু তৈরি করেছিল। তবে সেতুটি শুধু মাটি ও বাঁশ দিয়ে তৈরি করায় তা তৈরীর কিছু দিন পরেই ভেঙে নষ্ট হয়ে যায়। তাই সে পরে হুবহু পদ্মা সেতু বানানোর পরিকল্পনা করে।

আরো পড়ুন: এই পদবীর ছেলে-মেয়েদের বিনামূল্যে বি’য়া’র খাওয়াবে এই বিখ্যাত রেস্তোরাঁ, জানুন বিশদে

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২০ সালের ১ নভেম্বর সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু করে। দীর্ঘ পাঁচ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের পর পর ২৬ মার্চ তার পদ্মা সেতু বানানোর কাজ শেষ হয়। মানিকগঞ্জ থেকে এই সেতু দেখতে আসা সাথী নামে এক তরুণীর থেকে জানা যায়, ইতিমধ্যে এই সেতুটির খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে সোহাগের বাবা সুলতান আলী বলেন, সোহাগের এই সেতু বানানোর সময় লেখাপড়ায় তেমন মনোযোগ ছিল না তার। এজন্য সোহাগকে অনেক বকাবকি করেছি। এখন সোহাগের বানানো পদ্মা সেতু দেখতে যখন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছে তখন গর্বে আমার বুকটা ফুলে উঠছে।সবাই ওকে আশীর্বাদ করুক এটাই আমি চাই।

সোহাগ সেতু বানানো প্রসঙ্গে বলে, পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানোর দিনই সিদ্ধান্ত নিই আমি একটি সেতু বানাবো। কিন্তু কোনো ধরনের নকশা ও পর্যাপ্ত অর্থ ছিল না। এজন্য পর পর দুটি সেতু তৈরি করলেও তা ভেঙে যায়।

আরো পড়ুন: বিগ বিগ ব্রেকিং: তেলের দাম ১৫ টা’কা ক’মা’লো মোদি সরকার

পরে ইন্টারনেট থেকে নকশা সংগ্রহ করি। হাত খরচের টাকা দিয়ে সিমেন্ট ও বাঁশ সংগ্রহ করে ধীরে ধীরে সেতুটি তৈরি করি। প্রথম দিকে বাবা-মার অনেক বকাঝকা শুনেছি। কিন্তু আমি আমার মত কাজ করেছি। আজ মানুষ এসে ভিড় করছে সেতুটি দেখার জন্য। এতেই বাবা-মা অনেক খুশি। আমারও ভালো লাগছে।

সোহাগ বলে, বড় হয়ে একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সখ আমার যাতে আমি দেশসহ বিদেশে গিয়ে কাজ করতে পারি। দেশে আর কোনো সেতু তৈরিতে যেন বিদেশিদের সহযোগিতা প্রয়োজন না হয়, সেজন্য আমি প্রস্তুত হতে চাই।