গঙ্গাসাগর মেলা বা কুম্ভ মেলাতেই সাধারণত নাগা সন্ন্যাসীদের দেখা যায়। ন”গ্ন শব্দটি থেকে এসেছে নাগা শব্দটি। এই সন্ন্যাসীরা শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সবসময় পোশাকহীন অবস্থায় থাকেন। এদের সারা গায়ে চিতার ভষ্ম মাখা থাকে। মাথায় থাকে জট। বিজ্ঞানকে হার মানায় এই নাগা সাধুদের ক্ষমতা।
এরা হিমালয়ে শূন্যের থেকে কম তাপমাত্রাতেও সম্পূর্ণ ন”গ্ন অবস্থায় মাসের পর মাস বেঁচে থাকেন, এমনকী অনেক দিন না খেয়েও থাকতে পারেন। নাগা সাধু হতে গেলে ১২ বছরের কঠোর সাধনা ও তপস্যার প্রয়োজন। নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার পথে সাধনার মধ্যে যখন তাঁরা থাকেন, সেই সময় তারা শুধু কৌপীন ধারণ করে থাকেন।
কুম্ভ মেলায় স্নান করে সেই কৌপীন বিসর্জন দিয়ে তারা পূর্ণাঙ্গ নাগা সন্ন্যাসী হন। নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার প্রথম ধাপের শিক্ষা হচ্ছে ব্রহ্মচর্য। এরপর তাঁকে নিজের যজ্ঞোপবীত বা পৈতে বিসর্জন দিতে হয়। এরপর নিজের পরিবারের পিণ্ডদান করতে হয়। এবং তারপর নিজের পিণ্ডদান করতে হয়, যা বিজওয়ান নামে পরিচিত।
কারণ নাগা সন্ন্যাসী হওয়ার পর এঁদের কাছে পরিবারের মৃত্যু হয় এবং পরিবার ও সমাজের কাছে এঁদের মৃত্যু হয়। এরা বিছানায় ঘুমায় না, ১২ মাস মাটিতে শুয়ে থাকেন। দিনে মাত্র একবার এরা খাদ্য গ্রহণ করে থাকেন। ভিক্ষেই এদের আহার্য সংগ্রহের একমাত্র পথ।
আরো খবর: ১ মে থেকে কল ও SMS-এ নয়া নিয়ম চা’লু হ’চ্ছে, জানুন অবশ্যই
কিন্তু একদিনে মাত্র সাতটি বাড়িতে এরা ভিক্ষের জন্য প্রার্থনা করতে পারেন। এই সাতটি বাড়িতে কিছু খাবার না পেলে সেদিন অভুক্তই থাকেন তারা। এই নাগা সন্ন্যাসীদের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। মহেঞ্জোদারোর মুদ্রাতেও নাগা সন্ন্যাসীদের ছবি পাওয়া যায়।
সেখানে পশুপতিনাথ-রূপী মহাদেবের উপাসনা করতে দেখা যায় তাঁদের।এমনকি সম্রাট আলেকজান্দারও এ দেশ নাগা সন্ন্যাসীদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছিলেন। এই নাগা সন্ন্যাসীদের তিনটি ভাগ রয়েছে।
যাঁরা উজ্জয়িনীতে দীক্ষা নেন, তাঁদের বলা হয় ‘খুনি নাগা’; যাঁরা হরিদ্বারে দীক্ষা নেন, তারা ‘বর্ফানি’ নাগা;আর যাঁরা নাসিকে দীক্ষা নেন, তাঁদের বলা হয় ‘খিচড়িয়া নাগা’।