সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

ভা’বা যায়! লঙ্কা মা’ত্র ৭০০ টা’কা কেজি, ২০০ টা’কা কেজি আলু, হাহাকার শু’রু

ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় খাদ্যদ্রব্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম এতটাই বেড়েছে যে চারিদিকে মানুষের হাহাকার উঠেছে। অনেক মানুষ খাবারও পাচ্ছে না। শ্রীলঙ্কার Advocata Institute-এর Bath Curry Indicator (বিসিআই) থেকে প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির তথ্যে বলা হয়েছে দেশে নভেম্বর ২০২১ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অর্থাৎ এক মাসে খাদ্যদ্রব্যের দাম ১৫ শতাংশ বেড়েছে। এই বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ, সবজির দামের ব্যাপক বৃদ্ধি।

শ্রীলঙ্কায় ১০০ গ্রাম মরিচের দাম যেখানে ছিল ১৮ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭১ টাকা। অর্থাৎ এক কেজি মরিচের দাম ৭১০ টাকা। এক মাসে মরিচের দাম বেড়েছে ২৮৭ শতাংশ। একইভাবে বেগুনের দাম ৫১ শতাংশ, লাল পেঁয়াজের দাম ৪০ শতাংশ এবং শিম, টমেটোর দাম ১০ শতাংশ বেড়েছে। এক কেজি আলু কিনতে হলে ২০০ টাকা লাগছে। ভাবতে পারেন? শুধু কি তাই! শ্রীলঙ্কায় আমদানি না হওয়ায় দুধের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

অন্যান্য সবজিতেও আগুন লেগেছে –

টমেটো – ২০০ টাকা/কেজি
কাঁচা কলা – ১২০ টাকা/কেজি
গাজর – ২০০ টাকা/কেজি
বেগুন – ১৬০ টাকা / কেজি
মটরশুটি- ৩২০ টাকা/কেজি
ভিন্ডি – ২০০ টাকা/কেজি
করলা – ১৬০ টাকা / কেজি
বাঁধাকপি – ২৪০ টাকা/কেজি

২০১৯ সাল থেকে দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় এখন দাম ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। এর মানে হল যে চারজনের গড় পরিবার, যারা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে খাদ্য সামগ্রীর জন্য সাপ্তাহিক ১১৬৫ টাকা খরচ করেছিল, তাঁরা এখন একই জিনিসের জন্য ১৫৯৩ টাকা দিচ্ছে। অনেক দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা তিন বেলার পরিবর্তে মাত্র দুই বেলা খেয়ে কোনোরকমে জীবন কাটাচ্ছে।

খাদ্যদ্রব্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষ দেশে অর্থনৈতিক জরুরি অবস্থা জারি করেছেন। এর আওতায় সরকার নির্ধারিত মূল্যে সাধারণ মানুষ যাতে খাদ্য ও পানীয় পায় তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কোভিডের অতিমারি পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্প প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। সরকারি কোষাগার শূন্য এবং দিন দিন শ্রীলঙ্কার ওপর বৈদেশিক ঋণের বোঝাও বাড়ছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, কোভিডের শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কায় পাঁচ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। আর ডিসেম্বরে খাদ্যদ্রব্যের দাম ২২.১ শতাংশ বেড়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা যেতে পারে বলে খবর। শ্রীলঙ্কার বিরোধী সাংসদ ও অর্থনীতিবিদ হর্ষ ডি’সিলভাও এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি পার্লামেন্টে বলেন, শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য এবং ঋণ বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কা পুরোপুরি দেউলিয়া হয়ে যাবে। এমনকি শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের প্রাক্তন ডেপুটি গভর্নর ওয়া উইজেওয়ার্দেনার বক্তব্য, শ্রীলঙ্কা ঋণ খেলাপি হওয়ার সম্পূর্ণ ঝুঁকিতে রয়েছে এবং যদি এটি ঘটে তবে এর খুব খারাপ পরিণতি হবে।