ইতিহাসের পাতায় দেবী চৌধুরানীর অসামান্য কাজের জন্য বাঙ্গালীদের সঙ্গে তার একটি নিবিড় সম্পর্ক। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের মাধ্যমে সুচিত্রা সেনের অভিনীত একটি সিনেমার মাধ্যমেই দেবী চৌধুরানীর চরিত্রটি সকলের সামনে এসেছে।
এই মহান রানীর জন্য একটি মন্দির রয়েছে যেটা গোটা ৪ বছর পর আবার খুলেছে, সেই খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন হিন্দু মুসলিম ভক্তরা। দেবী চৌধুরানীর এই মন্দিরটি রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর চা বাগানে।
এই মন্দিরটিতে ছিল দেবী চৌধুরানীর এবং ভবানী পাঠকের বিগ্রহ সহ আরও কয়েকটি মূর্তি, কিন্তু এই মন্দিরটি ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে পুড়ে ছারখার হয়ে যায় যার ফলে তিনশো বছরের পুরনো এই মন্দির টির অনেক সম্পদ নষ্ট হয়ে যায়।
এরকম একটি ঘটনার পরে বাংলার ঐতিহ্যকে রক্ষার্থে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ওই মন্দিরে ছুটে যান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং তারপরেই ওই মন্দিরের বিগ্রহ গুলোকে আবার নতুন করে তৈরি করার কথা বলা হয়।
২৭শে মার্চ এই মন্দির গুলোকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার নতুন করে উদ্বোধন করেন এবং মন্দিরের বিগ্রহগুলোকে বরণ করে আনেন রাজবংশী সমাজের মহিলা। এরপরে ওই বিগ্রহ গুলিতে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং শুরু করা হয় নতুন করে ভক্তদের জন্য পূজা-অর্চনা।
এই মন্দিরটি সম্পর্কে বৈকুন্ঠপুর রাজ এসএস এর মাধ্যমে জানা যায়, মন্দিরটি তিনশো বছরের পুরনো। যখন ছিয়াত্তরের মন্বন্তর হয়েছিল সেই সময়ে দিনাজপুর, বৈকন্ঠপুর রংপুরের ইজারাদার ছিলেন দেবী সিংহ, তিনি অত্যন্ত অত্যাচারী প্রকৃতির ছিলেন।
এসময় দেবী চৌধুরানী এবং ভবানী পাঠক মিলে ধনী ব্যবসায়ী মানুষদের থেকে অর্থ সম্পদ লুঠ করে গরীব অসহায় মানুষদের বিলাতেন। এইরকম ঘটনার পরেই সেই সমস্ত অসহায় মানুষেরা দেবী চৌধুরানী এবং ভবানী পাঠকের বিগ্রহ তৈরি করে নিজেদের মতো করে দেবতা জ্ঞানে পূজা করতে শুরু করেন।