গত ৩১ জানুয়ারি ৪৭-এ পা রেখেছেন প্রীতি। হ্যাঁ একসময় বলিউড কাঁপানো জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রীতি জিন্টার কথাই বলছি। কিন্তু তাকে দেখলে তার বয়স কিন্তু ঠাহর করতে পারবেন না আপনি।বরং দুষ্টুমিষ্টি, আদুরে এক মেয়ে, যার দু’গালে বড়সড় টোল। হাসি ছড়ালে ডাগর চোখেও ঝলকানি খেলে যায়। বড়পর্দায় তাঁকে কখনোই খুব একটা ডাকাবুকো চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়নি। কিন্তু এই প্রীতিই এক আন্ডারওয়ার্ল্ড ডনের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। সেই ডন নাকি ছোটা শাকিল!
প্রীতি যে কখনও ছোটা শাকিলের মতো ডনের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারেন, তা নাকি অনেকেই আঁচ করতে পারেননি। ২০০১ সালে যখন সলমন খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে ‘চোরি চোরি চুপকে চুপকে’ ফিল্মের শ্যুটিং এ ব্যস্ত তখন প্রীতির কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চেয়ে হুমকি ফোন আসে বলে অভিযোগ।
এ প্রসঙ্গে মুম্বইয়ের আদালতে দাঁড়িয়ে প্রীতি দাবি করেছিলেন যে অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে তাঁর কাছ থেকে ৫০ লক্ষের বেশি টাকা চাওয়া হত। এমনকি আদালতে ছোটা শাকিল-সহ মাফিয়াদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যও দেন প্রীতি।
ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী প্রীতি এক সময় স্নাতকোত্তর পর্বে ক্রিমিনাল সাইকোলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তাই এ হেন প্রীতি তোলাবাজির হুমকি পাওয়ার পর চুপচাপ বসে থাকেননি।
ঘটনার ১৭ বছর পর অর্থাৎ ২০১৮ সালে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সম্মেলনে তোলাবাজির বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে খোলাখুলি কথাও বলেন প্রীতি। কী হয়েছিল, কোন পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হন, তা-ও খোলসা করেছেন তিনি।
আরো পড়ুন:এ কেমন মা? নিজের কন্যাকে ভাল্লুকের খাঁ’চা’য় ফে’লে দিলেন যুবতী, রইলো রো’মহ’র্ষ’ক ভিডিও
ছোটা শাকিলের ভয়ে সিঁটিয়ে ছিলেন তাঁর ফিল্মের লোকজনও। বলিউডি পাড়ায় এ জল্পনাও ছড়িয়েছিল যে ‘চোরি চোরি… ’ ফিল্মের প্রযোজক নাজিম রিজভি এবং লগ্নিকারী ভরত শাহের মাথায় নাকি গ্যাংস্টার ছোটা শাকিলের হাত ছিল। কানাঘুষোয় শোনা যায়, শুধু প্রীতি নয়, বরং বলিউডের নামজাদা অভিনেতা যেমন অমিতাভ বচ্চন, সলমন খান, রাকেশ রোশন এবং মহেশ মঞ্জরেকর – তাঁরাও ছোটা শাকিলের হুমকি-ফোন পেয়েছিলেন। তবে আদালতে বিবৃতি দেওয়ার ঠিক আগেই পিছু হঠেন তাঁরা। তারকা হলেও তো প্রীতির মতো এত সাহস দেখাতে পারেননি তাঁরা।
তারকাদের নিঃশ্চুপ দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রীতি। তিনি বলেছিলেন, “সকলেই যদি পিছিয়ে আসবেন জানা থাকলে আমিও বোধ হয় মুখ খুলতাম না। হুমকি পাওয়ার পর জীবনে সবচেয়ে বেশি ভয় পেয়েছিলাম। আমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। কারণ আদালতে সাক্ষী দেওয়ার মিনিট দশেকের মধ্যেই তা টিভির মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসে গিয়েছিল।”
আরো পড়ুন:বাচ্চাদের আধার কা’র্ড নিয়ে ন’য়া ঘোষণা, জানুন আবেদনের নি’য়’ম
প্রীতির সাহস দেখে বাহবা দিয়েছিলেন অনেকেই। ঘটনার ১৭ বছর পর প্রীতি বলেছিলেন, ‘‘ওরা আমাকে ভয় দেখালেও ঠিকঠাক ছিলাম। কিন্তু এক সময় আমাকে গালিগালাজ করতে শুরু করেছিল। চাপের মুখে মাথা ঠান্ডা রাখতে অসুবিধা হয় না।
তবে লোকে আমাকে গালিগালাজ করবে আর আমি চুপ করে বসে থাকব, সেটা অসহ্য! সৌভাগ্যের কথা যে আমার নামডাক রয়েছে। না হলে যে কী সমস্যাই হত!’’ এ প্রসঙ্গে প্রীতি এও বলেন, ‘‘সে সময় তো আমার কোনও পিছুটান ছিল না। সংসার শুরু করিনি। বাচ্চাকাচ্চাও নেই। ফলে সাহস জুটেই গিয়েছিল!’’