প্রাকৃতিক বিপর্যয় এমনি একটা বিষয় যেটা না আসে বলে কয়ে না তাকে আটকানো যায়। আর এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় যে দেশে আসে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় সেই দেশকে। সম্প্রতি তুরস্কে হটাৎ আসা ভূমিকম্পে বিশাল ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। আর এই ভূমিকম্পের ফলে অ্যানাটোলীয় এবং আরবীয় টেকটনিক প্লেটের মধ্যে ২২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যুতিরেখা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যার ফলে তুরস্ক তার আগের ভৌগোলিক অবস্থান থেকে ১০ ফুট দূরে সরে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন এক ভূবিজ্ঞানী। ইটালির ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক কার্লো ডগলিয়োনি বলেন, টেকটনিক প্লেটগুলির সঞ্চালনের কারণে তুরস্ক প্রায় ২০ ফুট পশ্চিমে সরে গিয়েছে।
তবে এটি প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন ডগলিয়োনি। তাঁর মতে, আগামী দিনে উপগ্রহচিত্রের মাধ্যমে এই ছবিটি আরও স্পষ্ট হবে। মূলত, ভূবিজ্ঞানীদের মতে, টেকটনিক প্লেটগুলি যেখানে একে অপরের সঙ্গে মেশে সেই চ্যুতিরেখায় কোনও সংঘর্ষের ফলে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়।
আরো খবর: রাজ্যের বিভিন্ন প্রা’ন্তে আদিবাসী সংগঠনের রেল অবরোধ, স’ম’স্যা’য় যাত্রীরা
কিন্তু মাঝারি এবং হালকা ধরনের ভূমিকম্প প্লেটের মাঝ বরাবর সৃষ্ট কোনও দোলাচলের কারণে হয়ে থাকে। কিন্তু এই তুরস্কের ভৌগোলিক অবস্থান এমনই যে, এটি তিনটি টেকটনিক প্লেটের মাঝবরাবর রয়েছে। তুরস্কের বেশির ভাগটাই রয়েছে অ্যানাটোলীয় প্লেটের উপর।
এর উত্তরে রয়েছে ইউরেশীয় প্লেট। দক্ষিণে রয়েছে আফ্রিকা প্লেট এবং পূর্বে আরবীয় প্লেট। ফলে দু’টি বড় চ্যুতিরেখা সৃষ্টি হয়েছে। একটি পূর্ব অ্যানাটোলীয়, অন্যটি উত্তর অ্যানাটোলীয়। যে দু’টি চ্যুতিরেখা অত্যন্ত কম্পনপ্রবণ।
আর আরবীয় প্লেট যখন উত্তর দিকে ইউরেশীয় প্লেটের দিকে সরতে থাকে, তখন অ্যানাটোলীয় প্লেটের উপর চাপ বাড়ে এবং সেটিকে পশ্চিম দিকে অ্যাজিয়ান সাগরের দিকে ঠেলতে থাকে। সোমবার তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছিল সেটি পূর্ব অ্যানাটোলীয় চ্যুতিরেখার দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে।
Animated map of seismicity near Turkey quakes starting ~3am local time plotting Feb 6 M7.8 mainshock (pink), early aftershocks (orange), M7.5 aftershock to the north (tan), and subsequent aftershocks in the north (tan). Time vs. magnitude progression shown on bottom graph. pic.twitter.com/TTa7qdZWzO
— USGS Earthquakes (@USGS_Quakes) February 7, 2023
প্রথম কম্পনটির কেন্দ্রস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮ কিলোমিটার গভীরে এবং দ্বিতীয়টি ১০ কিলোমিটার গভীরে। এছাড়াও ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ট্রাকচারাল জিওলজির অধ্যাপক বব হোল্ডসওয়ার্থ ডেইলি মেল-কে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের যে তীব্রতা ছিল তাতে প্লেটের অবস্থান বদলের সম্ভাবনা স্বাভাবিক।
তাঁর কথায়, “৬.৫ থেকে ৬.৯ তীব্রতার ভূমিকম্পের ফলে এক মিটার মতো প্লেটগুলি সরে যায়। তবে তার থেকে বড় মাপের কোনও কম্পনে ১০-১৫ মিটার সরে যেতে পারে প্লেটগুলি।”