সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

সমুদ্রে ঘুরে বে’ড়া’তো কুকুরের আকারের বিছে, ভাবতেই আ’তঁ’কে উঠতে হয়

বিছে আমরা প্রত্যেকে কম বেশি ভয় পাই। আর সেই ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। যেকোনো বিছের দংশনই অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক। বিছে বলতেই মনে আসে এক আঙুল বা তালুর সমান লম্বা বিষাক্ত প্রাণী। বেশির ভাগ বিছে মানব জাতির জন্য ক্ষতিকারক না হলেও এদের কামড়ের ফলে তত্‍ক্ষণাত্‍ ব্যথা, অনুভূতিহীনতা অথবা ফুলে যাওয়া ইত্যাদি উপসর্গ দেখা যায়। অনেক বিছে আবার এতটাই বিষাক্ত হয় যে তার বিষের কামড়ে তাবড় তাবড় মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। সাধারণত স্থলেই বেশিমাত্রায় বিছেকে চলাফেরা করতে দেখা যায়।

কিন্তু একথা জানেন কি এরকম বিছের আকার একটা কুকুরের সমান। কি! ভেবেই আঁতকে উঠছেন তো! হ্যাঁ, বিজ্ঞানীরা সন্ধান পেয়েছেন এরকমই এক বৃহদাকার বিছের। তবে সন্ধান পেয়েছেন বললে ভুল হবে, তার থেকে বলা ভালো এরকম লম্বা বিছের ফসিল খুঁজে পেয়েছেন তারা। নানজিং ইনস্টিটিউট অফ জিওলজি অ্যান্ড প্যালিওন্টোলজির গবেষকরা জানাচ্ছেন সম্প্রতি একটি বিছের ফসিল বা জীবাশ্ম আবিষ্কার করা হয়েছে।

10 Striking Facts About Scorpions

বিপজ্জনক এই প্রাণীটির গড় আকার সাধারণ বিছের চেয়ে ১৬ গুণ বেশি। তবে এই বৃহদাকার প্রাণীটির অস্তিত্ব ছিল ৪০০ মিলিয়ন বছর আগে, যা বাস করত দক্ষিণ চিন সাগরের তলদেশে। নানজিং ইনস্টিটিউট অফ জিওলজি অ্যান্ড প্যালিওন্টোলজির গবেষকদের এই রিপোর্ট বিজ্ঞান বুলেটিনের নভেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত হবে বলে জানা গিয়েছে।

এই কুকুরের আকারের বিছেটির নাম Terropterus xiushanensis, যা বর্তমান সময়ের হর্সশু ক্র্যাব ও হুইপ স্পাইডার প্রজাতির মতোই ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এখনকার বিছের মতো এটিতেও কাঁটাযুক্ত হুল ছিল। এই বিছে সমুদ্র তলদেশে সর্ববৃহৎ শিকারি প্রাণী হিসেবে গণ্য করা হত। এরা শিকার ধরার জন্য পেডিপালপস নামক তার বিশাল কাঁটাযুক্ত বাহু ব্যবহার করত।ভয়ঙ্কর এই প্রাণীটি সিলুরিয়ান সময়কালের বলেই ধারণা বিজ্ঞানীদের। কোনো কোনো বিজ্ঞানী মনে করছেন এই সমুদ্র বিছের অস্তিত্ব ছিল ৪৪৩.৮ মিলিয়ন বছর আগে, আবার কোনও গবেষকের মতে ৪১৯.২ মিলিয়ন বছর আগে।

Terropterus xiushanensis, dog-sized sea scorpion, roamed ancient sea floors  in south China as 'top predator', study shows | The Independent

এর আগের গবেষণায় ধরা পড়ে এক তথ্য। সেখানে জানানো হয়েছিল যে ব্যারাকুডাস বা হাঙরের বিবর্তনের অনেক আগে সামুদ্রিক বিছেরা সবচেয়ে বড় শিকারী ছিল। ইউরিপ্টেরিডের জীবাশ্ম নমুনার উপর ভিত্তি করে, গবেষকরা অনুমান করেছিলেন যে সামুদ্রিক বিছেরা তাদের লেজ ব্যবহার করে তাদের দানাদার কাঁটাযুক্ত টিপস দ্বারা অস্ত্র তৈরি করে শিকার ধরত। T xiushanensis হল গন্ডোয়ানা থেকে পাওয়া প্রথম মিক্সোপ্টেরিড। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন এটি মিক্সোপ্টেরিডস-এর অন্তর্গত ছিল, যা ইউরিপ্টেরিডের একটি বিভাগ বলেই মনে করা হয়। বিজ্ঞানীরা আরও জানান, মিক্সোপ্টেরিড সম্পর্কে মোট জ্ঞান দুটি জেনারে মাত্র চারটি প্রজাতির মধ্যে সীমাবদ্ধ, যা ৮০ বছর আগে সিলুরিয়ান লরুশিয়া থেকে পাওয়া কয়েকটি জীবাশ্ম নমুনার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল। ভালোভাবে সংরক্ষিত জীবাশ্মগুলি মিক্সোপ্টেরিডের রূপগত বৈচিত্র্য বোঝার জন্য নতুন প্রমাণ তৈরি করে।