মানুষ চাইলে কি না করতে পারে! মানুষের ডিকশনারিতে অসম্ভব শব্দটার অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। হ্যাঁ, তবে সবচেয়ে আগে যেটা প্রয়োজন তাহল মনের জোর। মনের জোর না থাকলে সবকিছুই অসম্ভব। তবে মনের জোর যদি অসীম হয় তাহলে কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে সে ভয় পায় না।
মনের জোরের পর আসে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। ঠিক এই কারণেই অনেক স্বপ্ন মানুষের অধরা থেকে চায়। কাজটি আরো কঠিন হয়ে ওঠে। তবে যত বাধা বিপত্তিই আসুক না কেন, আপনি সুস্থ হন বা প্রতিবন্ধী – যদি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান তাহলে একটা কথা মনে রাখবেন চেষ্টার ফল কখনও বিফলে যায় না।
আজকের প্রতি বেদনে সেরকমই এক অনন্য প্রতিভার কথা বলতে চলেছি আপনাদের। মাত্র ১৩ বছর বয়সী জিয়া রায় এর জীবন সংগ্রাম সত্যিই কঠিন। জিয়া প্রতিবন্ধী, তিনি অটিজমের শিকার। তবে তাঁর একটি বিশেষ গুণ আছে, তিনি একজন বেশ ভালোই সাঁতারু।
আরো পড়ুন: OMG: এই স্কুলের ছাত্রীরা বি’শ্বা’স ক’রে তারা “পশু”! চলাফেরা ক’রে চার হাত-পায়ে
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতের তামিলনাড়ুতে সাঁতার কেটে এসে বিশ্ব রেকর্ডে নাম লেখালেন জিয়া। প্রতিবন্ধী কথাটা যে তার কাছে নিছকই একটা শব্দ, তা তিনি প্রমাণ করে দিলেন।
বাবা মদন রাই নৌবাহিনীর এক কর্মচারী। সংবাদমাধ্যমের কাছে মেয়ের প্রসঙ্গে বলেন, “আমার মেয়ে অটিজমে ভুগছে। কথার বলার ক্ষমতাও তাঁর হারিয়েছে।
তবে তাঁর মনের জোর এতটাই যে তাকে ঘরে আঁটকে রাখা সম্ভব নয়। সেই জোরেই ও আজ এই জায়গায়। যখন শ্রীলঙ্কা থেকে ও রওনা হয়েছিল, তখন প্রথম ৩ ঘণ্টা খুবই কষ্ট হয়েছিল।
Tamil Nadu | 13-year-old autistic girl, Jiya Rai swam from Sri Lanka’s Thalaimannar to Arichalmunai’s Dhanushkodi in 13 hours on Sunday
She was received by a large gathering at the Indian shore led by DGP C Sylendra Babu pic.twitter.com/G38wbPwMaB
— ANI (@ANI) March 20, 2022
তবে আজ আমার মেয়ের জন্য গর্ব হচ্ছে। জিয়া শ্রীলঙ্কা থেকে যাত্রা শুরু করে সকাল ৪.৫০-এ, আর গন্তব্যে পৌঁছায় বিকেল ৫.২০ নাগাদ। ১৩ ঘন্টায় জিয়া যত কষ্টই পাক না কেন আজ ওটা তার কাছে আনন্দের একটা লড়াই।
ইতিমধ্যে তিনি ভারত-শ্রীলঙ্কা ফ্রেন্ডশিপ কাপ জিতে নিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় শিশু পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন। তবে এই রেকর্ড তাঁর প্রথম নয়। এর আগেও জিয়া বান্দ্রা-ওরলি সী লিঙ্ক থেকে মুম্বাইয়ের গেটওয়ে অফ ইন্ডিয়া অবধি সাঁতার কেটেছিলেন।
শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি এখনও পর্যন্ত ১৬ টিরও বেশি সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছেন আর জিতেও ফিরেছেন। তাঁর পুরস্কারের থলিও বেশ ভরপুর। তাঁর কাছে ২২ টি স্বর্ণপদক এবং একটি রৌপ্য পদক রয়েছে।