সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

নিরামিষাশী! পছন্দ ন’য় মাছ-মাংস, মন্দিরের পুকুরেই বাস, ৭০ বছর ধরে প্রসাদ খেয়েই বেঁ’চে আছে এই কুমির

দীর্ঘ প্রায় 70 বছর ধরে কেরালার একটি মন্দির সংলগ্ন পুকুরে বাস করছে একটি নিরামিষাশী কুমির। নাম তার বাবিয়া। মন্দিরের পুরোহিতের বিশেষ আদুরে সে। প্রতিদিন মন্দিরের পুরোহিত নিজের হাতে ভাত মেখে নিয়ে আসেন তার জন্য। নিরামিষ খাবার খেয়েই মন্দির সংলগ্ন পুকুরে সাত্ত্বিক জীবন যাপন করছে বাবিয়া। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি।

কেরলের এক মন্দিরের লাগোয়া পুকুরে থাকে বাবিয়া। মন্দিরের সিঁড়ি যেখানে থেমেছে, সেখান থেকেই শুরু পুকুর ঘাট। মাছ-মাংস খাওয়া তো দূর, ছোঁওয়াও ‘পাপ’ সেখানে। কুমির হলেও ছাড় পায়নি বাবিয়া।

সাধারণত কুমির মাংসাশী প্রাণী। মাছ মাংস ছাড়া তার রোচে না। তবে বাবিয়া সাধারন কুমিরদের মত নয়। নিরামিষ খাবার খেয়েই জীবন যাপন করছে সে। এই মন্দিরে বিষ্ণু দেবতার পূজা হয়।

এ মন্দিরের বিষ্ণু পূজিত হন। নাম শ্রী অনন্ত পদ্মনাভস্বামী। কথিত আছে, কেরলের তিরুঅনন্তপুরমের পদ্মনাভস্বামীর আদিরূপ এই বিগ্রহ। দিন-রাত তারই প্রসাদান্নে তুষ্ট থাকে বাবিয়া।

শ্রী অনন্ত পদ্মনাভস্বামী হিসেবে বিষ্ণুর আরাধনা করা হয় সেখানে। স্বভাবতই মন্দিরে মাছ-মাংস নিষিদ্ধ। দিনরাত আর প্রসাদ পেয়ে জীবন ধারণ করছে বাবিয়া।

মন্দিরের পুরোহিতের দাবি এই ব্যবস্থায় বাবিয়ার অসুবিধা হয় না। কুমির হয়ে জন্মালেও আসলে সে শাকাহারি। মাছ বা মাংস নয়, তার প্রিয় খাবার ভাত।

প্রতিদিন দুপুরে থালা সাজিয়ে অন্নভোগ নিয়ে পুকুরে নামেন পুরোহিত। তিনি নিজের হাতে বাবিয়াকে ভাত খাইয়ে দেন। কুমির হয়ে জন্মালেও বাবিয়ার প্রিয় খাবার।

চন্দ্রশেখরের কথায়, বাবিয়া আসলে বিষ্ণুর দেবালয়ের প্রহরী। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

দুপুরের খাবার, রাতের খাবার নির্বিশেষে ভাতই খায় সে। প্রতিদিন তার জন্য এক কেজি চালের ভাত রান্না হয়। পুকুরে অবশ্য অন্যান্য মাছও রয়েছে। তবে বাবিয়া তাদের শিকার করে না।

কিন্তু কুমির কি সত্যিই নিরামিষাশী হয়? তার স্বাভাবিক খাবার মাংস বা মাছ না খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে? তা-ও বছরের পর বছর! কেরলের ওই মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের ব্যখ্যা, সাধারণ কুমির হয়তো পারত না। কিন্তু বাবিয়া তো আর ‘সাধরণ’ নয়। সে স্বয়ং ‘ঈশ্বরের দূত’। দেবালয়কে রক্ষা করতে স্বয়ং ঈশ্বরই পাঠিয়েছেন তাকে। তাই সে অসাধ্য সাধন করতে পারে।

গত 70 বছর ধরে এভাবেই জীবন যাপন করছে সে। বাবিয়ার বন্ধু মন্দিরের প্রধান পুরোহিত চন্দ্রশেখর জানাচ্ছেন এই প্রাণীটি বড়ই নিরীহ।

একরকম ‘ভেতো’ই বলা যায় এই কুমিরকে! দুপুরে সে পেট ভরে ভাত খায়। রাতের খাবারও তাই। মেনু তেমন বদলায় না।

প্রতিদিন পুকুরে নেমে তিনি দুবার স্নান করেন। তবে বাবিয়া তার কোনো ক্ষতি করে না। মন্দিরে আসা প্রত্যেক ভক্তকে বাবিয়ার কাছে যাওয়ার উৎসাহ দেন তিনি। তাকে ঈশ্বরের দূত হিসেবে দেখেন এখানকার মানুষ।