কেনিয়ার নাগরিক অ্যানা কাবালে দুবা, বয়স তাঁর ৩১। তার মে গ্রাম রয়েছে সেই গ্রামের ও তার পরিবারের ১৯ জন ভাইবোনের মধ্যে তিনিই প্রথম যে স্কুলের গন্ডি পেরিয়েছে। তিনি একজন স্নাতকোত্তর পাঠরতা। এখন তিনি কেনিয়ার সরকারি হাসপাতালের দায়িত্ব প্রাপ্ত নার্স। কিন্তু তার এই পথ চলা কোনোমতেই সহজ ছিল না।
তাকে দিনের পর দিন দৈনিক বললেও ভুল বলা হবে না অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। তিনি যে জায়গা থেকে উঠে এসেছে সেখানে মহিলাদের সম্মান সমাজে নেই বললেই চলে। সেখানে মহিলাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়।
বাল্যবিবাহ থেকে শুরু করে সামাজিক বিভিন্ন কুপ্রথার শিকার মহিলারা, তার মধ্যে যৌ’না’ঙ্গ চ্ছে’দ’ন ও আরো অকথ্য অ’ত্যা’চা’র এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয় মহিলাদের। আফ্রিকার অর্ধ যাযাবর গোষ্ঠীগুলির মধ্যে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ এর চিহ্ন খুবই গাঢ়।
আরো পড়ুন: এক ব্যক্তি অর্ডার দিয়েছিলেন মশলাদার “চিলি ব্যাঙ”, প্লেট থেকে লা’ফ দিয়ে উঠলো মাথাহী’ন ব্যাঙ
বহুবিবাহ বাল্যবিবাহ ধ’র্ষ’ণ এর সাথে ফিমেল জেনিটাল মিউটেলেশন অর্থাৎ, শৈশবেই কন্যা সন্তানদের যৌ’ন সহানুভূতির প্রত্যঙ্গ বা ক্লিটোরিস কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। আ্যানা নিজেকে কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে শিক্ষিত করে তুলেছে।
কিন্তু তার এই শিক্ষা জগতে প্রবেশ যতটা অমসৃণ ছিল, তার থেকেও বেশী অমসৃণ তার এই উদ্যোগ। তিনি কিন্তু শুধু নিজে শিক্ষিত হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়নি। সে চেয়েছে যাতে তার মতো বহু মেয়ে তার দেখানো পথে অগ্রসর হয়।
এমনকি সমাজের কুসংস্কারের আবদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।তার লক্ষ্য ছিল একটাই যাতে তার শিক্ষার প্রতি ফলন হয় সমাজের পিছিয়ে পরা নারীদের ওপর। তবে হ্যা তার যেবিষয় নিয়ে লড়াই, তার চলার পথ এতটা মসৃণ ছিল না।
যেখানে মহিলাদের যৌ’না’ঙ্গ বিকৃতি করা রাষ্ট্রপুঞ্জের হিসেবে মানবাধিকার লংঘন হলেও, বিভিন্ন দেশের মহিলারা সংখ্যায় যেটা ২০ কোটি তারা এখনো অন্ধকারেই । আর কত? এবার সমাজের এই ঘৃ’ণ্য কুসংস্কার প্রথার বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে মেয়েদের বাঁচানো সম্ভব নয়।
তাই এবার অ্যানা বাল্যবিবাহ, ধ’র্ষ’ণ, বহুবিবাহ সহ বিভিন্ন কিছুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তবে সেটা কিভাবে মানুষের মন থেকে দূর করা সম্ভব? এটা জানতে তিনি সমস্যার একেবারে গোরায় পৌঁছেছেন, সেখানে গিয়েই তিনি দেখতে পেরেছেন সমাজে শিক্ষার অভাব। যদি কুসংস্কারকে দূর করতে হয় সমাজ থেকে তাহলে, সমাজে নিয়ে আসতে হবে শিক্ষার জোয়ার।
এইসব চিন্তা করতে করতেই তার ভাবনা কাবালে দুবা ফাউন্ডেশন। সেখানেই তিনি মেয়েদের মা-বাবাদের এমনকি মেয়েদের বোঝাতেন, যৌনাঙ্গ ছেদনের ক্ষতিকারক দিক গুলি কি কি? এমনকি ঋ’তু’স্রা’বে’র সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করাও যে কতটা দরকারি সেই সম্পর্কেও সচেতনতা গড়ে তোলেন তিনি। তার এই কঠিন কর্মকাণ্ডের জন্যই, এমন বিস্ময়কর নারী অ্যানা সম্প্রতি ‘অ্যাস্টর গার্ডিয়ানস গ্লোবাল নার্সিং’ পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছেন।