সুপারহিট ‘হরর’ ছবিগুলির মধ্যে অন্যতম হল আশির দশকে প্রকাশ পাওয়া ‘পোল্টারগেইস্ট’ ছবিটি। টোব হুপারের পরিচালনায় তৈরী হয়েছিল এই মারাত্মক হরর ছবিটি। ছবিটি দেখে ভয় পাননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তবে এই ছবিটি অনেক রহস্যে মোড়া। জোবেথ উইলিয়ামস ছবিতে ডায়ান ফ্রিলিংয়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছবির এক দৃশ্যে দেখানো হয়েছে, ডায়ানকে এক অদৃশ্য শক্তি সুইমিং পুলের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। সেই অশুভ শক্তির হাত থেকে বাঁচতে চায় ডায়ান, তাই সে তার বাচ্চাদের কাছে যাবে বলে পালাতে থাকে। কিন্তু তাতে সে এক ক’ঙ্কা’ল ভর্তি জায়গায় গিয়ে পড়ে।
শ্যুটিং সেটের অনেক সদস্য জানতেন যে কাজের ক্ষেত্রে নকল ক’ঙ্কা’লই ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ছবি মুক্তির পর কর্মীদলের সকল সদস্য জানতে পারেন, ক’ঙ্কা’লগুলি আসল ছিল। এ প্রসঙ্গে কর্মীদলের এক সদস্যের বক্তব্য, তখন এত সহজে নকল ক’ঙ্কা’ল কিনতে পাওয়া যেত না। এছাড়া দামও ছিল প্রচুর। তাই আসল ক’ঙ্কা’ল বিক্রিকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল প্রোডাকশন হাউস। মূলত মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষামূলক গবেষণার জন্য এই ক’ঙ্কা’লগুলি বিক্রি করা হত।
পরে অভিনেত্রী ডায়ান জানিয়েছিলেন, তাঁকে টানা চার-পাঁচ দিন ক’ঙ্কা’লে’র মধ্যেই শ্যুটিং করতে হয়েছে। সত্যিটা জানার পর বেশ ভয় লেগেছিল তাঁর। যদিও শ্যুটিং চলাকালীন কিছু হয় নি, তবে ছবি মুক্তির আগে কর্মীদলের পাঁচ সদস্যের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছিল। আরও এক সদস্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, সেটে আসল ক’ঙ্কা’লে’র ব্যবহারের জন্যই রহস্যজনক ভাবে মারা যান তারা।
আরো খবর: নিজেদের চা’বু’ক ফিগারের সি’ক্রে’ট ফাঁ’স করলেন বলি অভিনেত্রীরা, কে কি করেন?
ছবিতে বড় মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করা ডমিনিক ডুনেকে তাঁর প্রেমিক গলা টিপে খুন করেন বলে শোনা যায়। ওই অবস্থায় পাঁচ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও ডমিনিক বাঁচেননি। শুধু তাই নয়, ‘পোল্টারগেইস্ট’ ছবির দ্বিতীয় পর্বের অভিনেতা অভিনেত্রীরাও এই ব্যাপক অভিশাপের কবলে পড়েছিলেন। জুলিয়েন বেক মারা যান ছবি মুক্তির কয়েক মাস আগেই পাকস্থলীজনিত রোগে ।
এই ছবির অন্য এক অভিনেতা উইল স্যাম্পসন অপুষ্টি ও লিভারজনিত সমস্যার কারণে মারা গিয়েছিলেন। এই দুই অভিনেতার মৃত্যুর কারণ স্বাভাবিক হলেও অনেকেই বিশ্বাস করেন তাঁদের মৃত্যুর জন্য অশুভ শক্তিই দায়ী। ‘পোল্টারগেইস্ট’ ছবির প্রথম পর্বে শিশু-অভিনেতা হিথার ও’রাউরকের অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন দর্শকমন্ডলী। তবে এই ছবির তৃতীয় পর্ব মুক্তির সময় হৃদ্রোগজনিত কারণে মাত্র ১২ বছর বয়সে হঠাৎই মৃত্যু হয় হিথারের।
এই ছবির প্রথম পর্বের পার্শ্ব অভিনেতা লো পেরিম্যান নিজের বাড়িতেই কুঠারের আঘাতে খুন হয়েছিলেন এক আততায়ীর হাতে।এই ছবির ক্রুয়ের সদস্য রিচার্ড লসন ভাগ্যের ফেরে কোনোক্রমে মৃ’ত্যু’র মুখ থেকে বেঁচে ফেরেন। ১৯৯২ সালে এক ইউএস এয়ার ফ্লাইট ৪০৫ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এই বিমান দুর্ঘটনায় ৫১ জন যাত্রীর মধ্যে ২৭ জন মারা যান। হলিউডের অনেকে এই ঘটনাগুলিকে কাকতালীয় বলে মনে করলেও এই অভিশাপ যে সত্যি তার বিশ্বাস আছে অনেকেরই মধ্যে।