বাংলা চলচ্চিত্র যাদের ছাড়া অসম্পূর্ণ তারা হলেন খলনায়ক। টলিউড বিগত কয়েক দশকে এমন বেশ কিছু দাপুটে খলনায়ক পেয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন রাজেশ শর্মা। তিনি যেন বাংলা সিনেমার ‘গব্বর’! খলনায়ক হিসেবে পর্দায় তার উপস্থিতি দর্শককে শিহরিত করেছে। আবার দুঁদে পুলিশ অফিসার হিসেবেও পর্দায় তার উপস্থিতি অকপট লেগেছে। তবে জানেন কি যিনি বাংলা সিনেমার এমন ব্যাপক হয় নায়ক হয়ে উঠেছিলেন একসময় তিনি ছিলেন ট্যাক্সিচালক?
টলিউডে প্রবেশ করার আগে তিনি তারকাদের জন্য ট্যাক্সি চালাতেন। সেভাবেই উপার্জন করে কোনোমতে দিন কাটাতেন। তবে একদিন অবশ্য তিনি তার গন্তব্যে পৌঁছানোর রাস্তাটাও খুঁজে পেয়ে যান। যে তারকাদের ট্যাক্সিচালক হিসেবে কাজ করতেন তিনি, একসময় তাদের বিপরীতে অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে যান রাজেশ। তার জন্ম হয়েছিল পাঞ্জাবের লুধিয়ানায়। নয়াদিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে স্নাতক হয়েছিলেন তিনি। তারপর কলকাতার একটি নাট্য সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত হন।
টুকটাক অভিনয় করে সংসার চালানো সম্ভব ছিল না। তাই মুম্বাইয়ের রাস্তায় ট্যাক্সি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন তিনি। এরপরে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ছবি ‘মাচিস’ এ অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। যদিও প্রথম ছবি থেকে তিনি পরিচিতি গড়ে তুলতে পারেননি। আসলে বলিউডে বহিরাগত হওয়াতে তিনি সেভাবে পরিচিতি অর্জন করতে পারেননি। তখনই তিনি চলে আসেন বাংলাতে। এখানে এসে থিয়েটারে কাজ করতে শুরু করেন। তার অভিনয় চলচ্চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেনের বেশ পছন্দ হয়।
তিনি তাকে ‘পারমিতার একদিন’ ছবিতে কাজের সুযোগ করে দেন। এরপর অবশ্য তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। বাংলা সিনেমার একের পর এক ছবিতে ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে ‘প্রতিবাদ’ ছবির ‘টিনু গুন্ডা’কে আজও ভুলতে পারেননি দর্শক। ২০০১ সালের ‘দাদা ঠাকুর’ থেকে ২০০৪ সালের ‘বাদশা দ্য কিং’ পর্যন্ত টলিউডের সব ছবিতে তিনিই ছিলেন ভিলেন। তারপর অবশ্য আবার ফিরেছেন বলিউডে। বিদ্যা বালানের ‘পরিণীতা’ ছবিতে অভিনয় করে তিনি আবার বলিউডে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন। এরপর হিন্দি, বাংলা, তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিতে রাজত্ব করেছেন রাজেশ শর্মা।