একজন নারীর জীবনের সার্থকতা মাতৃত্ব। গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে যাওয়ার মতো দুঃখ হয়তো একটা মায়ের জীবনে আর কিছু হতে পারে না। আর তাতে যখন মায়ের জীবনের ঝুঁকি থাকে তখন তো সত্যিই আর চুপচাপ বসে থাকা যায় না। প্রতি বছর এমনিতেই ৯০ থেকে ১০০ জন মাতৃমৃত্যু হয় এই দেশে। তবে গত মে মাসে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ চলাকালীন ডেল্টা ভেরিয়েন্টে মাতৃমৃত্যুর রেকর্ড গড়েছে দেশটি। সেই সময় মৃত্যু হয়েছে ৪১ জন গর্ভবতী মহিলার। রেকর্ড অনুযায়ী দেশটিতে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৫,৫০০ গর্ভবতী মা করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।
দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে মহিলাদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা এক বছর কোনোরকম গর্ভধারণ না করে। প্রায় ৭০ শতাংশ শ্রীলঙ্কাবাসীর সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে বলেই জানিয়েছে হেলথ প্রমোশন ব্যুরোর পরিচালক চিত্রমালি ডি সিলভা। তারপরেও সরকার কোনোরকম ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হর্ষ আতাপট্টু বলেন, নবদম্পতিদের পাশাপাশি যারা বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাদের কোভিড -১৯ এর ঝুঁকির কারণে কমপক্ষে এক বছর অপেক্ষা অবশ্যই করা প্রয়োজন। সবকিছু স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরলে তখনই সন্তান ধারণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে। করোনার থার্ড ওয়েভে পরিস্থিতি যদি আরও বিপর্যস্ত হয় তাহলে সবকিছু সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই এই ক্ষেত্রে কোনোরকম লাগাম যদি না টানা যায় তাহলে আবারও শ্রীলঙ্কাকে দেখতে হবে প্রসূতি মায়ের মৃত্যু।
আর যাতে কোনো প্রাণ এই সুন্দর পৃথিবীর আলো দেখার আগেই মৃত্যুর মুখে ঢোলে না পড়ে এবং সেই গর্ভবতী মাকেও অকালে এই পৃথিবী থেকে বিদায় না নিতে হয় সেই জন্য এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুক্রবার অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় শ্রীলঙ্কায় নারীদের এক বছর গর্ভধারণ না করার আহ্বান জানিয়েছে।