মাদক অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয় অনেককেই। নিজের তো ক্ষতি হয়ই, সেই সঙ্গে অপরজনেরও মৃত্যু ঘনিয়ে আসে। মাদক দ্রব্যের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এত বিজ্ঞাপন এত সচেতনতামূলক প্রচারের পরেও কোনো পরিবর্তন দেখা যায় না মাতালদের মধ্যে।
তারা কোনো কিছুর পরোয়া না করে মদ খেয়ে উন্মত্তের মতো গাড়ি চালায় এবং দুর্ঘটনা ঘটায়। আর এহেন পথ দুর্ঘটনা দিনের পর দিন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। কোনো ভাবেই মানুষকে বাগে আনা যাচ্ছে না। তাই মানুষের হুশ ফেরাতে এবার এক যুগান্তকারী আবিষ্কার ঘটালেন ঝাড়খণ্ডের তিন ইঞ্জিনিয়ার!
মাদক অবস্থায় কেউ যাতে আর কেউ গাড়ি চালাতে না পারে তার জন্য এই অভিনব আবিষ্কার। ঝাড়খণ্ডের পূর্ব ঝরিয়া অঞ্চলের কর্মরত তিন ইঞ্জিনিয়ার অজিত যাদব, সিদ্ধার্থ সুমন ও মনীশ বালমুচু একটি অনন্য ডিভাইস তৈরি করেছেন।
এই ডিভাইস সম্বন্ধে জানা যাচ্ছে যে মাতাল অবস্থায় ড্রাইভার যদি গাড়িতে ওঠে তাহলে এর ফলে গাড়ি আর চালু হবে না। ভারতীয় তিন ইঞ্জিনিয়ারের এহেন পদক্ষেপ শুধুমাত্র দুর্ঘটনা কমানোর জন্য। তাদের এই ডিভাইস তৈরির কাজে সাহায্য করেছেন দুইজন ওভারম্যান।
এখন এটাই দেখার এই ডিভাইসটি আদৌ সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে কিনা। এই ডিভাইস প্রসঙ্গে ইঞ্জিনিয়ারদের বক্তব্য, তাদের আবিষ্কৃত এই ডিভাইসের নাম Smart Safety System Against Alcohol in Vehicle (SSSAV)।
এই ডিভাইসটি কোন গাড়িতে ইন্সটল করা থাকলে মাতাল ব্যক্তি হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও সেই গাড়ি চালু করতে পারবেন না। এই ডিভাইসটি তৈরি করা হয়েছে এলসিডি, সেনসর, ও মাইক্রো কন্ট্রোল ইত্যাদি আরও অনেক প্রয়োজনীয় ইলেকট্রিক জিনিস দিয়ে।
গাড়িতে এই ডিভাইসটি ইনস্টল করা থাকলে এই ডিভাইসের সেন্সর ড্রাইভিং সিটে বসা ব্যক্তির শ্বাস পরীক্ষা করবে আর যদি ড্রাইভিং সিটে বসা ব্যক্তি মাতাল হয় তবে তাকে গাড়ি স্টার্ট করতে দেবে না।
এছাড়া যদি গাড়িটি আগে থেকেই চালু অবস্থায় থাকে এবং মাতাল ব্যক্তি পরে এসে ড্রাইভিং সিটে বসেন তাহলেও তার শ্বাস পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গাড়িটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে।
এই যন্ত্র তৈরির চিন্তাভাবনা প্রসঙ্গে ভারতীয় ওই তিনজন ইঞ্জিনিয়ার বলেন, কয়লা পরিবহনের সময় অনেকগুলি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছিলো চালক মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালানোর জন্য।
আর সেই সময় থেকেই এই চিন্তার আবির্ভাব।তারা ভেবেছিলেন যদি এরকম কোনো যন্ত্র তৈরি করা যায়, যা গাড়ি চালু করা থেকেই মাতাল চালককে বাধা দেবে, তবেই দুর্ঘটনার পরিমাণ কমানো সম্ভব। অন্যথায় নয়।