গোল মরিচ চাষ সুযোগের দরজা খুলে দিয়েছে। কারণ এই চাষ করে দারুণ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। যদি চাষবাসের দিকে মন থাকে এবং সফল হওয়ার দৃঢ় ইচ্ছে থাকে তা হলে হাতের সামনেই রয়েছে একটি দুর্দান্ত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা। চাষের মাধ্যমে মাস ফুরোলে ঘরে আসতে পারে লাখ লাখ টাকা। গোল মরিচ চাষ সম্প্রতি এমনই এক সুযোগের দরজা খুলে দিয়েছে। কারণ এই চাষ করে দারুণ লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। আর এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ হলেন মেঘালয়ের বাসিন্দা চাষি নানাদ্রো বি মারক। ৫ একর জমিতে গোল মরিচ চাষ করেন তিনি। এই চাষের জন্য তাঁকে পদ্মশ্রী অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিতও করা হয়।
মেঘালয়ে নানাদ্রো নিজের জমিতে সর্বপ্রথম কারি মুন্ডা নামে এক জাতীয় গোল মরিচের চাষ শুরু করেন। প্রাথমিকভাবে ১০ হাজার টাকা দিয়ে প্রায় ১০ হাজার গোল মরিচের গাছ লাগান এবং সর্বদা নিজের জমিতে জৈবিক সারই ব্যবহার করেছেন তিনি। যত সময় এগিয়েছে ততই জমিতে বেড়েছে গোল মরিচ গাছের সংখ্যা। আর দেশের বহুচর্চিত পশ্চিত গারো পার্বত্য অঞ্চলের বাসিন্দা কৃষক নানাদ্রোর ক্ষেতের এই গোল মরিচের চাহিদা রয়েছে বিশ্ব জুড়ে। আর নানাদ্রোর এলাকায় প্রবেশ করলেই সর্বদা গোল মরিচের গন্ধ মেলে। এই গন্ধ শুধু এদেশ নয়, ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব জুড়ে।
নানাদ্রোর এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয়, এর নেপথ্যে কারণও রয়েছে বিস্তর। যারা মরিচের চাষ করবেন, তাঁদের পথ দেখাচ্ছেন তিনি। ৮- ৮ ফুটের দূরত্বে গোল মরিচের গাছ লাগান নানাদ্রো। আসলে গাছের মধ্যে এই দূরত্ব রাখার কারণ হল, যাতে সহজে গাছটি বেড়ে উঠতে পারে ও ঠিকভাবে নিজের শাখা-প্রশাখা মেলে ধরতে পারে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই এই চাষে অধিক যত্নশীল হতে হয়।
গাছ থেকে গোল মরিচ তোলার পরও তা শুকোনোর জন্য এবং মরিচ বের করার জন্য অত্যন্ত সাবধানী হতে হয়। গোল মরিচের দানা বের করার জন্য এটিকে কিছুক্ষণ জলে ডুবিয়ে রাখতে হয়, পরে আবার শুকোতে হয়। এতে দানাগুলির রঙও উজ্জ্বল হয়। চাষের সময় প্রতিটি গাছে ১০- ১২ কিলো পর্যন্ত গোবর সার ও ভার্মি কম্পোস্ট সার দিতে হবে।
গাছ থেকে গোল মরিচ তোলার সময় সাধারণত থ্রেশিং মেশিনের ব্যবহার করা হয়। যাতে খুব সহজে ও দ্রুত গোল মরিচ তোলা যায়।প্রথমের দিকে এই গোল মরিচে ৭০ শতাংশ ভেজাভাব থাকে, পরে যাকে শুকিয়ে ঠিক করা হয়, কারণ বেশি ভেজাভাব থাকলে দানা খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও প্রবল থাকে।