সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

আমাদের দেশেই ঘটে এমন কা’ন্ড, পি’রি’য়’ডে’র ৭ দিন থা’ক’তে হয় জঙ্গলের কুঁড়েঘরে!

বিশ্বের প্রত্যেকটি নারীকে প্রত্যেক মাসে পিরিয়ড এর সময় অসম্ভব নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, কিন্তু বর্তমান জগতে এই সমস্যা অনেকটাই সকলের মানানসই হয়ে গেছে। পুরনো দিনের নারীদের এই সময়টাতে নানান রকম সমস্যা বেশি করে সামনে এসেছে, যেমন তাদের আলাদা ঘরে রাখা হতো এবং এই সময়টাকে নারীদের অপবিত্র বলে মনে করা হতো।

এই রকম প্রথা বর্তমান যুগে কমে গিয়ে থাকলেও দেশের কোথাও কোথাও এই প্রথাটি এখনও প্রচলিত রয়েছে। পিরিয়ডের সময় পাঁচ থেকে সাত দিন সেই নারীদের রাখা হয় কুঁড়েঘরে, সেখানে কিশোরীরা নিজেরা ইচ্ছে মত থাকতে পারে তাও নয়, তাদেরকে একপ্রকার বাধ্য করা হয়ে থাকে ওই ঘরে থাকার জন্য। এই ধরনের ঘটনাটি এখনও প্রচলিত রয়েছে ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের অনুন্নত জেলা গাডচিরোলির মাদিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে।

এই সময় এই সম্প্রদায়ের মধ্যে থাকা নারীদের একেবারে অশুচি বলে মনে করা হয় এবং তাদের একদম জঙ্গলের মধ্যে থাকা একটি কুঁড়ে ঘরে রেখে দেওয়া হয়। যে ঘরটিতে তাদের রাখা হয় সে ঘরটিকে বলে গাওকর। এ সময়টাতে নারীদের সমস্ত ধর্মীয় এবং সামাজিক কাজগুলি থেকে বিরত রাখা হয় এবং রান্নাঘরেও তাদের ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়। যারা বাড়ির অন্যান্যরা থাকে তারাই একমাত্র খাবার এবং জল সেই সমস্ত নারীদের দিয়ে থাকে।

এই ঘটনাটাই ভুক্তভোগী রয়েছেন ৩৫ বছরের সুরেখা হালামি। সে বলেন যে, গরমকালে যখন ওই কুঁড়েঘরে তাদের থাকতে হয় তখন প্রচন্ড গরম এবং মশার কামড়ে তাদের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে যায়। অন্যদিকে শীতকালে যেমন প্রচন্ড ঠান্ডা থাকে, তেমনি বর্ষাকালে দেখা যায় জলের নানা রকম সমস্যা ওইরকম সময় বাইরের নানান পশুও সেই ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়ে।

এখন থেকে প্রায় ১০ বছর আগে একজন ২১ বছরের এক কিশোরী ওই ঘরে থাকাকালীন সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিল। সাপের কামড় খেয়ে যখন সে বাইরে এসে চেঁচামেচি করে তখন তার নারী আত্মীয়-স্বজনরা যারা ছিল তারাই ওষুধ দিয়েছিল, কোন পুরুষ আত্মীয় তখন তাকে স্পর্শ করতে পারেনি, কারণ বলা হয় যে কোনো পুরুষ যদি সেই রকম অসুচী নারীকে স্পর্শ করে থাকে তবে তাকে তখনই স্নান করতে হয়।

এরকম একটি প্রথার বিরুদ্ধে কিছুটা হলেও অগ্রসর হয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তারা ওই কুঁড়ে ঘরটাকে ভেঙে আধুনিক বাড়ি করে দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু সেই ব্যাপারে একটি সমালোচনা শুরু হয়েছিল যে, পরোক্ষভাবে ওই স্বেচ্ছাসেবীরা এই প্রথাকে আরো বেশি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছে। এইরকম একটি প্রথা উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারকে। কিন্তু বছর গড়িয়ে গেছে এই প্রথা উচ্ছেদের কোন নাম নেই।

ওই গ্রামের এক প্রবীণ ব্যক্তি এই প্রথা সম্পর্কে বলেন যে, “এই রকম প্রথা কখনোই বন্ধ করা যাবে না, এটা এক প্রকার ঈশ্বরের তৈরি করা। এটা যদি কেউ না মানে তবে তাকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এই প্রথা যে মানবে না, তাকে পুরো গ্রামের সকল মানুষকে মদ এবং মাংস শাস্তি হিসেবে খাওয়াতে হবে, এমনকি তার পরেও আর্থিক জরিমানা দিতে হবে।