গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে রাশিয়া। এর পর থেকেই দুই দেশের মধ্যেই নানা রকমের আর্থিক সমস্যা লেগেই রয়েছে।আর্থিক দিক থেকে টান পড়তে পারে মনে হওয়ার পরই পশ্চিমি দুনিয়া পুতিনের দেশের বিরুদ্ধে ১১ হাজারের বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেই সঙ্গে রাশিয়ার বিদেশি অর্থভাণ্ডারের প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার আটকে দেওয়া হয়েছিল।
আর্থিক চাপে পড়ে যাতে পুতিন হামলা থেকে পিছিয়ে আসেন, তারজন্যই এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। রুশ শিল্পপতি ওলেগ ডেরিপাস্কা রাশিয়ার অবস্থা ভালো বুঝছেন না তা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন এক বছরের মধ্যে রুশ সরকারি অর্থনীতিতে টান পড়তে পারে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধুর দেশগুলিকে রাশিয়ায় বিনিযোগের আবেদন জানালেন রুশ শিল্পপতি।
গত বৃহস্পতিবার সাইবেরিয়ায় অর্থনীতি সংক্রান্ত একটি বৈঠকে ওই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন রুশ শিল্পপতি। তিনি জানান মূলত ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধের জন্যই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আর পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদেশি বিনিয়োগের উপর জোর দিচ্ছেন তিনি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমি দুনিয়া।
এর রেশ রাশিয়ার অর্থনীতিতে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। যদিও এই আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বরাবর বলে গেছেন রুশ অর্থনীতি চাঙ্গা আছে। কিন্তু আদপে যে সেটা নয় কিছুদিনের মধ্যেই সেটা জানা যাচ্ছে রুশ শিল্পপতির এই আশঙ্কাকে কেন্দ্র করে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও নিজের জেদ বজায় রেখেছে পুতিন। ইউক্রেনের সাথে যুদ্ধ আজও বহাল রেখেছে রাশিয়া। রুশ সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় সরকারের আয় কমেছে ২.১ শতাংশ। চলতি বছরে জানুয়ারিতেই রাজস্ব কমেছে প্রায় ৩৫ শতাংশ। খরচ বেড়েছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। এর প্রভাব পড়েছে রুশ বাজেটে।
বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে প্রায় ২৩.৩ বিলিয়ন ডলার। রফতানিও কমেছে প্রায় ৫১ শতাংশ। কিন্তু যেহেতু যুদ্ধ এখনও চলছে, তাই পশ্চিমি দুনিয়া রাশিয়ার উপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে বলে আশঙ্কা করেছেন রুশ শিল্পপতি ওলেগ ডেরিপাস্কা।
আর সেটা বুঝতে পেরেই পুতিন প্রশাসন তেল উৎপাদনে কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে পুতিনের আশ্বাস ভাঁওতা কিনা, তা নিয়ে ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন নানা মহল।