আজ অনেক কটা মাস হয়ে গেলো বীরভূম জেলার তৃনমূল সংসদ অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হয়েছেন। বর্তমানে তার ঠিকানা হয়েছে দিল্লীর তিহার জেলে। গরু পাচার সহ আরো অনেক গুলি অভিযোগ নিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন তিনি। এখনও সেই কেস চলছে। বৃহস্পতিবার আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে গরু পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত অনুব্রত এবং তাঁর প্রাক্তন নিরাপত্তারক্ষী সহগল হোসেনের ভার্চুয়াল শুনানি ছিল।
তিহাড় জেল থেকে উপস্থিত ছিলেন দু’জনেই। অনুব্রতকে দেখে বিচারক তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘আপনাকে খুব ক্লান্ত লাগছে। অনুব্রতবাবু, কেমন আছেন?’’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘‘শরীর ভাল নেই। সব রকম অসুবিধা হচ্ছে।’’ বিচারক বলেন, ‘‘ডাক্তার দেখছে তো ?’’ কেষ্ট তখন উত্তর দেন, ‘‘ডাক্তার দেখাচ্ছি। জেলের মেডিক্যাল ওয়ার্ডে পড়ে আছি।’’ বিচারক বলেন, ‘‘বুঝতে পারছি।’’
তিনি এভাবেই তার শারীরিক অবস্থার কথা জানান বিচারক কে। এরপর বিচারক সহগলকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘তোমার গয়না রিপোর্ট অর্ধেক এসেছে।’’ তার পর সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘গয়নার রিপোর্টটা কী হল?’’ সরকারি আইনজীবী উত্তর দেন, ‘‘তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি।’’ এর পর বিচারক সহগলকে বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি দেখছি। অনেক দিন ধরেই বিষয়টা ঝুলে আছে। এ বার দ্রুত ব্যবস্থা হবে।’’
আরো খবর: ভারতের এই জায়গাগুলোতে ছবি তুললেই দিতে হয় জরিমানা, আগেভাগেই সাবধান হয়ে যান
তদন্তকারী আধিকারিকের সঙ্গে ফোনে কথা বলার পর সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘স্যর ওঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির দিনই সম্পূর্ণ রিপোর্ট জমা করা হবে।’’ কিন্তু এর পর অনুব্রত যে আবেদন বিচারকের কাছে করেন তা কেও আন্দাজ করতেও পারেন নি।
কারণ শেষ কয়েক মাস জুড়ে আমরা জানতে পেরেছি অনুব্রত কিভাবে নিজের রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যাবহার করে কত মানুষের ক্ষতি করেছেন। সেই অনুব্রত বলেন বিচারক কে, ‘‘স্যর চালকলের অ্যাকাউন্টটা ডিফ্রিজ (খুলে) দিন।’’
বিচারক তখন জিজ্ঞাসা করেন, ‘‘কোন চালকল?’’ অনুব্রত জবাব দেন, ‘‘ভোলেব্যোম চালকল। ওই দু’টি অ্যাকাউন্ট যেন খুলে দেওয়া হয়। শ্রমিকেরা বেতন পাচ্ছেন না। ২০০ শ্রমিক আছে। বহু জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে।’’
তার কথা শোনার পর বিচারক তখন বলেন, ‘‘আপনার মুখের কথায় আমি কোনও অ্যাকাউন্ট তো খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারি না। আইনজীবীর মাধ্যমে আবেদন করুন। আপনার এবং সিবিআই দু’পক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
বৃহস্পতিবার অবশ্য অনুব্রত এবং সহগল, দু’জনের কারও আইনজীবী ছিলেন না। এর পর বিচারক ৭ জুন পরবর্তী শুনানি হবে বলে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, অনুব্রতের সবরকম চিকিৎসার ব্যবস্থা করার নির্দেশও তিনি দিয়েছেন তিহাড়ের জেল সুপারকে। এত কিছুর পর এই কথা স্পষ্ট যে তার এত সহজে নিস্তার নেই। জেলার ভোগান্তি আরো কিছু মাস ভোগ করতে হবে তাঁকে।