সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মাতা সীতার অ’ভি’শা’পে আজও ক’ষ্টে জী’ব’ন যা’প’ন করছেন এই ৪ জন

হিন্দু ধর্ম অনুসারে রামচন্দ্রকে বিষ্ণুর অবতার এবং দেবী সীতাকে মা লক্ষ্মীর অবতার হিসেবে গণ্য করা হয়। মহাকাব্যে দেবী সীতাকে ত্যাগের প্রতীক বলা হয়েছে। পিতৃ আদেশ পালন করার জন্য যখন রামচন্দ্র ১৪ বছরের জন্য বনবাস পালন করার জন্য গিয়েছিলেন, তখন সাম্রাজ্যের সমস্ত সখ আহ্লাদ ত্যাগ করে স্বামীর সঙ্গে বনবাসে গিয়েছিলেন সীতা। এরপর ছদ্মবেশে লঙ্কাধিপতি রাবন যখন সীতা হরণ করেন তখন তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করার জন্য ভগবান শ্রীরামকে লড়াই করতে হয় রাবণের সঙ্গে। এই ভাবেই রচিত হয় রামায়ণ।

তবে এমনও বলা হয়, সীতা হরণের ঘটনা আগে থেকেই জানতেন সীতা, তাই তিনি আগে থেকেই বৈকুণ্ঠধাম চলে গিয়েছিলেন এবং নিজের বদলে মনে রেখে গিয়েছিলেন ছায়া সীতাকে। রামায়ণে যে সীতাকে উদ্ধার করা হয় তিনি কিন্তু ছিলেন ছায়া সীতা। অগ্নিপরীক্ষার সময় অগ্নিদেব ছায়া সীতাকে গ্রহণ করে দেবী সীতাকে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন ভগবান শ্রী রামের কাছে। এই সীতা যাকে আমরা ত্যাগের প্রতীক হিসাবে জানি, যিনি ভগবান লক্ষ্মীর স্বরূপ, তিনি একবার ক্ষুব্ধ হয়ে চারজন কে অভিশাপ দিয়েছিলেন এবং সেই অভিশাপের ফল ভোগ করে আজও কষ্ট পাচ্ছেন ওই চারজন। জানেন এই চারজন কারা? কেনই বা এনাদের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন সীতা?

রাজা দশরথের মৃত্যুর পর যখন রাম এবং লক্ষণ পিন্ডদানের সমস্ত সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে চলে যান, তখন বিলম্ব হওয়াতে সীতাদেবী নিজেই যাবতীয় বিধি-বিধান মেনে স্বর্গীয় শশুরের পিন্ডদান করে দেন। চালের অভাবে সীতাদেবী বালুকার পিন্ড প্রস্তুত করেছিলেন এবং দশরথের প্রেতাত্মা সীতাদেবীর হাত থেকেই নিয়েছিলেন পিণ্ড।

হিন্দু শাস্ত্র মতে মহিলাদের পিন্ডদান নিষিদ্ধ থাকায় এই ঘটনাটি করার সময় সীতাদেবী পুরোহিত, গরু কাক ও ফলগু নদী কে সাক্ষী রেখে ছিলেন। দুই ভাই যখন ফিরে আসেন তখন সীতাদেবী তাদের জানান, পিন্ডদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে গেছে। একথা শুনে রামচন্দ্র বিস্মিত হয়ে যান এবং বিশ্বাস করতে চান না কথাটি। তখন সীতাদেবী ওই চারজনকে ডেকে পাঠান যাতে তিনি সাক্ষী হিসেবে রেখেছিলেন। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ওই চারজন রামচন্দ্রের কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন। এরফলেই ভীষণভাবে রেগে যান সীতাদেবী।

রামচন্দ্র যখন চার সাক্ষীকে জিজ্ঞাসা করেন, পিন্ডদান কাজ সম্পন্ন হয়েছে কিনা, তখন তারা সকলেই অস্বীকার করেন। তবে সব শেষে বটগাছ রামচন্দ্রের কাছে সীতাদেবীর হয়ে সত্য সাক্ষ্য প্রদান করেছিলেন বলে খুশি হয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করেছিলেন সীতাদেবী। সেই অভিশাপ এবং আশীর্বাদ আজও ফলপ্রসূ হয়েছে। আপনি কি জানেন কি ছিল সেই আশীর্বাদ এবং অভিশাপ?

মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য সীতাদেবী পুরোহিত কে অভিশাপ দিয়েছিলেন, তোমাদের দারিদ্র কোনদিন কাটবে না। পুজোর পরে যা দক্ষিণা পাবে, তাতে তোমাদের আশা কখনো পূরণ হবে না। আজ থেকে অভাব তোমার নিত্যসঙ্গী হল।

সীতাদেবী ফল্গু নদীকে অভিশাপ দিয়েছিলেন, এই নদী সারাবছর শুকনো থাকবে। এমনকি বর্ষাকালেও এই নদীতে খরা থাকবে। আজও ফল্গু নদী একইভাবে জল বিহীন অবস্থায় রয়েছে।

সীতাদেবী কাককে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন, তোমাদের কখনো পেট ভরবে না। মারামারি করে তোমাদের খেতে হবে, কখনো কখনো খাওয়ার জন্য তোমাদের মৃত্যু ঘটবে।

সীতাদেবী গরুকে অভিশাপ দিয়ে বলেছিলেন, তোমাকে মানুষ পুজো করবে ঠিকই কিন্তু সকল বাড়ির মানুষের এঁটো খাবার খেয়ে তোমায় বেঁচে থাকতে হবে।

সর্বশেষে সীতাদেবী বটগাছকে আশীর্বাদ দিয়ে বলেছিলেন, আজ থেকে তুমি হবে ঈশ্বরের স্বরূপ। কোন মন্দিরে কেউ পুজো দিতে গেলে তোমাকেও পুজো করবে। সেদিন থেকে আজ ও বৃহৎ বট গাছে জল দিয়ে পুজো করলে ব্যক্তির সমস্ত মনস্কামনা পূর্ণ হয়ে যায়।