সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

৭০ বছরের ব্যক্তিকে বি’য়ে করতে একের পর এক ফো’ন ২০ থেকে ২৫ বছর ব’য়’সী যুবতীদের

একাকী জীবনে মিষ্টতা আনতে অনেকেই বিয়ে করে থাকেন। আবার এমন অনেক মানুষ আছেন যারা মনে করেন বিয়ে মানেই বাড়তি দায়িত্ব, উটকো ঝামেলা। আর বিয়ের জন্য পাত্র পাত্রী খোঁজা তো খুবই সাধারণ ব্যাপার। আর সেইজন্যই অনেকেই খবরের কাগজে পাত্র পাত্রী চাই বিভাগে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। আর সেখান থেকেই যোগাযোগও করেন অনেকে। বাগুইআটির বাসিন্দা মিস্টার গঙ্গোপাধ্যায় ঠিক এমনই এক বিজ্ঞাপন দিয়েছেন, আর তাতেই তাঁর নাজেহাল অবস্থা। তবে বলে রাখি এই পাত্রের বয়স ৭০ বছর।

কি অবাক হচ্ছেন! ভাবছেন এই বয়সে ও বিয়ে করবেন! তাহলে আর অ্যাডভেঞ্চার কই! কিন্তু তাতেই এনার সাথে যোগাযোগ করেছেন অন্ততপক্ষে ৭০ জন পাত্রী। পাত্রের বিবরণ স্বরূপ বিজ্ঞাপনে দেওয়া হয়েছে, “৭০/৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, অবসরপ্রাপ্ত আরবিআই ম্যানেজার, কলিতে নিজস্ব দোতালা বাড়ি, পেনশন হোল্ডার। ৫০-এর মধ্যে পাত্রী চাই।” আপনারা জানলে আরও অবাক হবেন যে যোগাযোগের তালিকায় রয়েছে ২৪ থেকে ২৫ বছরের যুবতীও। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা দুটি ফোন নম্বরে অনবরত ফোন করতে থাকেন প্রার্থীরা।

২৪ থেকে ২৫ কিংবা ৬০ থেকে ৬৫ কোনো মহিলাই বাদ দিচ্ছেন না যোগাযোগ করতে। আর সেই সাথে হোয়াটসঅ্যাপে নিরন্তর ছবি ও বায়োডাটা আসছে। এমনকি গত রবিবার পরিবার সমেত একজন দেখাও করে গিয়েছেন ৭০বছর বয়সী এই পাত্রের সঙ্গে। যদিও তার মতে, এখনও একটি মেয়েকেও মনে ধরেনি এই যুবকের।

এই বয়সে বিবাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বছর সাতেক আগে মারা গিয়েছেন স্ত্রী। মেয়ে আছে একটি। সে নিজের সংসার নিয়েই থাকে। নাতি-নাতনিরা স্কুলে পড়ে। আমার এই বিয়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া বা বিয়ের ইচ্ছা প্রকাশ করাতে তাঁদের কোনো সমস্যা নেই। বরং তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে আমার মেয়ে-জামাইও এসেছিল।” তবে অনেকেই ভাবছেন স্ত্রী গত হয়েছেন বলে নিঃসঙ্গতা কাটাতে বিয়ে করার কি ছিল। আরও তো অনেক কিছু করার রয়েছে। তেমন হলে বৃদ্ধাশ্রমে গেলেই তো নিঃসঙ্গতা কাটানো যেত। কিন্তু এ প্রসঙ্গে মিস্টার গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বৃদ্ধাশ্রমের অনেক নিয়ম-কানুন রয়েছে। চিরকাল নিজের মতন করে বেঁচে এসেছি। তাই সেখানে যাওয়ার ভাবনা হাঁটিয়েছি। আর বিয়ে করা মানে তো আমার কাছে অন্য কিছু না। একজন সঙ্গিনীকে কাছে পাওয়া।”

কিন্তু এক্ষেত্রে কমবয়সী মেয়েরাও যোগাযোগ করেছেন। সে বিষয়ে তিনি জানান, “সেটুকু যাচাই করে নেওয়ার ক্ষমতা আমার আছে বলেই আমি মনে করি। শুধুমাত্র শেষ বয়সে সময় কাটানোর জন্য, দেখাশুনা করার জন্য একজন সঙ্গিনীকে খুঁজছি।” তাঁর এরূপ সিদ্ধান্তে অনেকে অবাক হলেও তাঁর সৎ সাহস দেখে প্রশংসাও করেছেন অনেকে। মনোবিদ থেকে শুরু করে সমাজকর্মী – সকলেই কুর্নিশ জানিয়েছেন তাঁকে।

এক সমাজকর্মীর ভাষায়, “আমাদের সমাজে ৭০ বছর বয়সের লোক খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছে। এরকম সৎ সাহস ক’জনের হয় বলুনতো। দেখে সত্যিই ভালো লাগছে”। এছাড়াও পাভলভের মানসিক হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডঃ শর্মিলা সরকার জানিয়েছেন, “এটি অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। যেকোনও বয়সেই যে নতুন করে জীবন শুরু করা যায় তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ এই ব্যক্তিত্ব”।