ব্রাজিলে ঘটল এক বিরল ঘটনা। পুরো ঘটনাটিই প্রকাশিত হয়েছে ‘জার্নাল অফ পেডিয়াট্রিক সার্জারি কেস রিপোর্ট’-এ। সেই সঙ্গে উপযুক্ত ছবিও দেওয়া হয়েছে। সেখানে এক সদ্যোজাত শিশুর শরীরে দেখা মিলল লেজের। মেরুদণ্ডের শেষাংশে নরম-সরম, ১২ সেন্টিমিটার লম্বা একটা লেজ, আর তার ডগায় মাংসের একটি পিণ্ড যেন বলের মতো দুলছে। দেখে ঠিক যেন মানবশিশুর সত্যিকারের লেজ বলে মনে হচ্ছে। বলা বাহুল্য, শিশুটির শরীরের এমন গঠন দেখে সেখানকার চিকিৎসকরা খুবই অবাক হয়েছেন। যদিও সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসকদের প্রচেষ্টায় সেই লেজ বাদ দেওয়া সম্ভব হয়। তবে, রিপোর্টে শিশুটির পরিচয় সম্পূর্ণভাবে গোপন রাখা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল, কিভাবে এই লেজ গঠন হয়?? চিকিৎসকদের মতে, ৪-৮ সপ্তাহের গর্ভাবস্থায় ভ্রূণের এমন লেজ গঠন হয়। কিন্তু ৮ সপ্তাহ পর থেকে লেজের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় এবং সংকুচিত হতে থাকে, সেটাই ধীরে ধীরে টেইল বোনের রূপ নেয়। কিন্তু এই শিশুর ব্যাপারটা একটু অন্যরকম। ব্রাজিলের এই শিশুটির ভ্রূণ অবস্থার লেজের বৃদ্ধি আর বন্ধ হয়নি। এমনকি, সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল, শিশুটি জন্ম নেওয়ার আগে করা আল্ট্রাসাউন্ডেও শিশুর লেজের অস্তিত্ব ধরা পড়েনি।
অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসকরা সম্পূর্ণ পরীক্ষানিরীক্ষা করেন এবং তাতে দেখেন যে ওই লেজটিতে কোনো হাড় বা অস্থিমজ্জার অস্তিত্ব নেই। সেটি ১২ সেন্টিমিটার লম্বা আর পরিধিও প্রায় ৪ সেন্টিমিটার। বোঝাই যাচ্ছে, এটি অন্য কিছু নয়, মানবদেহে বিরল লেজের উপস্থিতি। তবে বলে রাখা ভালো যে এই ঘটনা নতুন নয়, এর আগে ৪০টি শিশু এমন লেজ-সহ জন্মগ্রহণ করেছে এবং সেই ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
তবে ব্রাজিলের শিশুটির জন্মগ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো রকম ব্যতিক্রম ঘটেনি। এমনকি কোনোরকম জটিলতাও সৃষ্টি হয়নি। ৩৫ সপ্তাহ পর শিশুটি স্বাভাবিক ভাবেই ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তবে, শিশুটিকে এখনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া হচ্ছে না বলে খবর। কারণ লেজটি মেরুদণ্ড তথা স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিল। আর এই অস্ত্রোপচারে লেজটিকে বাদ দেওয়ার ফলে যদি কোনো সমস্যা হয় সেই বিষয়টি দেখার জন্য বাচ্চাটিকে বেশ কয়েক দিন পর্যবেক্ষণে রাখতে চান চিকিৎসকরা। যদি কোনো স্নায়ু সংক্রান্ত সমস্যা হয়, সেসব দিকেই নজর রাখবেন চিকিৎসকরা।