করোনা মহামারীর দরুন বিগত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিপর্যস্ত ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা। অনলাইনে ক্লাস অবশ্য চলছে, তবে সেই ক্লাস করার মতো প্রয়োজনীয় স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করার মত সামর্থ্য নেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামগুলির ছাত্র-ছাত্রীদের পরিবারের। তবে তার মধ্যে থেকেও হার না মানার অদম্য জেদকে সঙ্গী করেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো কাশ্মীরের দশম শ্রেণির এক ছাত্র।
জম্মু ও কাশ্মীরে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক দরিদ্র পরিবারের ছেলে মনদীপ সিংহ জেলার মধ্যে প্রথম হয়েছে। ৯৮.০৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছে সে। অথচ স্মার্টফোন এবং ইন্টারনেটের ব্যবস্থার অভাবে সে অনলাইনে পড়াশোনায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তবে বাড়িতে থেকে নিজে একা পড়াশোনা করেই আজ সে এই সফলতা অর্জন করেছে।
প্রসঙ্গত চলতি বছরে জম্মু-কাশ্মীরে দশম শ্রেণীর পরীক্ষা শুরু করেও করোনার অতিমারীর দরুন মাঝপথেই তা থামিয়ে দিতে হয়। এরপর ঠিক হয় যে ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের মাধ্যমেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। সেইমতো জেলায় প্রথম স্থান অর্জন করেছে মনদীপ। ছেলের এই সাফল্যে খুশি বাবা-মা। তার স্বপ্ন সে বড় হয়ে চিকিৎসক হবে। সর্বভারতীয় ডাক্তারী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে সে।
প্রসঙ্গত মনদীপ সিংহ পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই বাবা-মাকে ঘরের কাজ এবং ক্ষেতের কাজে সাহায্য করেছে। মনদীপের এই সাফল্যের পেছনে তার দাদা শিবদেব সিংহের ভূমিকাও কিন্তু কিছু কম নয়। তিনি জম্বু কলেজে পড়েন। লকডাউনে এবার বাড়িতে এসে ভাইয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব তিনি নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। পাশাপাশি তার স্কুলের শিক্ষকরাও তাকে বেশ সাহায্য করেছেন। তাকে তার প্রয়োজন মতো পড়ার বই জোগান দেওয়া থেকে শুরু করে তার লেখা উত্তর দেখেও দিয়েছেন শিক্ষকরা।