এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক মহলের সবথেকে বড় দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, আফগানিস্তানে তালিবান শাসন প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সেই দেশের আশরাফ ঘানির সরকারের পতন ঘটিয়ে তালিবান শাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে জঙ্গিরা। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের বিস্তীর্ণ এলাকায় চলে গিয়েছে তাদের দখলে। কাবুল তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ আফগানিস্তান তাদের দখলে চলে যাচ্ছে। সেই দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা রীতিমতো বিপর্যস্ত।
তবে যে দেশের সেনাবাহিনীতে অফিসারের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৫২ হাজার, রক্ষা মন্ত্রণালয়ে আর্মি, এয়ার ফোর্স এবং স্পেশাল অপারেশন ফোর্স মিলিয়ে মোট আধিকারিকের সংখ্যা ১ লক্ষ ৮৫ হাজার ৪৭৮ জন সদস্য রয়েছেন, এছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ১ লক্ষ ৩ হাজার ২২৪ জন সদস্য এবং আফগান ন্যাশনাল আর্মির পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৯ সালে সেখানেও ১ লক্ষ ৮০ হাজার সৈন্য রয়েছেন, সেখানে মুষ্টিমেয় তালিবানরা এত সুবিধা পায় কোথা থেকে? প্রশ্ন উঠছে আন্তর্জাতিক মহলে।
প্রকৃত অর্থে আফগান সেনাদের তুলনায় তালিবানদের সংখ্যা অনেক কম। ২০১৪ সালে আমেরিকা যখন এ সম্পর্কিত একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে ছিল তখন জানিয়েছিল যে তালিবান সেনার সংখ্যা মাত্র ২০ হাজার। বর্তমানে সরকারি পরিসংখ্যান বলছে তালিবানদের সদস্য সংখ্যা ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লক্ষ হতে পারে। তবে বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমের দাবি সংখ্যাটা কোনমতেই ২ লাখ এর কম নয়। এরমধ্যে ৬০ হাজার লড়াকু যোদ্ধা এবং ৯০ হাজার স্থানীয় যোদ্ধা রয়েছেন।
যদিও এই সংখ্যাটা আফগান সেনাদের তুলনায় কম। আসলে, আফগান সরকার তার সেনাদের দীর্ঘদিন ধরে বেতন দেয়নি। তাদের জন্য যথাযথ সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা নেয়নি। যার ফলে তালিবানদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকেই ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর হয়ে পড়েছিলেন। তাই এখন তালিবানরা একের পর এক সেনা ছাউনিতে আক্রমণ চালাচ্ছিল তখন বাধ্য হয়ে অনেকেই তালিবানদের দলে যোগদান করেছেন। যার ফলে মুষ্টিমেয় তালিবানরা সেনাদের অনায়াসেই হারিয়ে দিয়েছে। এবং সেই দেশ নিজেদের কুক্ষিগত করে নিয়েছে।