সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

তিনি জনগণের বিচারপতি, জানুন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবন কা’হি’নী

অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যেটি এখন একটি পরিচিত নাম। ২০১৯ সালে তিনি হাইকোর্টে বিচারপতি হিসেবে কাজ করছিলেন, অবশেষে ২০২০ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে জায়গা করে নেন তিনি। যদিও এর আগে তিনি ১০ বছর কাজ করেছেন আইনজীবী হিসেবে। তাঁর জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলা তিনি লড়েছেন যার জন্য আজ সকলের কাছেই তিনি একটি বিশেষ পরিচিত নাম।

তবে জানা গিয়েছে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথমদিকে একজন সরকারি চাকরিজীবী ছিলেন কিন্তু পরে তিনি আইনের সঙ্গে যুক্ত হন। প্রথম দিকে তিনি কোম্পানি সংক্রান্ত মামলায় লড়তেন তবে সেই সময়ে তাঁর সমস্ত রায়গুলি বিচার প্রার্থীদের সমর্থনে থাকত। কলকাতা হাইকোর্টে একাধিক মামলার রায় দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

কিছুদিন আগেই ৭৬ বছরের শ্যামলী ঘোষের মামলাটিতে তিনি রায় দিয়েছিলেন যেটি মানবিক রায় বলে পরিচিত লাভ করেছে। তবে সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতার স্কুলে চাকরি পাওয়ার মামলাটির লড়ছেন যেখানে অঙ্কিতা তাঁর চাকরি হাড়িয়েছেন যেটি একটি সঠিক বিচার। এছাড়া একটি ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষিকার বেতন কেটে ছিলেন প্রধান শিক্ষক তারপর এই মামলাটির রায় দেন হাইকোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

আরো পড়ুন: শুধু অঙ্কিতা এ’কা নন, আ’রো অনেকেই অনৈতিক ভা’বে চাকরি পেয়েছেন! তালিকা তৈ’রি করছে CBI!

সেই প্রধান শিক্ষকের চাকরি সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নিয়েছিলেন এমনকি ক্যান্সারে আক্রান্ত শিক্ষিকার ১২ দিনের বেতনও মিটিয়ে দিতে বলেছিলেন। এরপরেই এসএসসিতে নিয়োগের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন ক্যান্সার আক্রান্ত এক তরুণী, যাকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে ডেকে এনে অন্য চাকরির জন্য প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু, সেই তরুণী সেই প্রস্তাব মেনে নেয়নি তবে তিনি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “আপনি আমাদের মত আন্দোলনকারীদের কাছে একটি আশার আলো ।

আমাদের লড়াইতে কিন্তু একা নই এতে আপনিও যে আমাদের সঙ্গে আছেন সেটাই আমরা বুঝতে পারছি”। একসময় তৃণমূলের একটি অংশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিয়েছল, কিন্তু সেই সময় তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, বন্দুক মাথায় ধরতে হয়, মারতে হয় তো মরবো। কিন্তু দুর্নীতির সঙ্গে কখনো আপস করব না”। স্কুলের শিক্ষক, অশিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কিন্তু সেই সিবিআই তদন্তকে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।

এরপরে তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের বার কাউন্সিলর চেয়ারম্যান অশোক কুমার দেব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবকে এবং সেই চিঠিতে অশোক কুমার দেব বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লিখে জানান,” এই গোটা ব্যাপারটি হাইকোর্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে সুপ্রিম কোর্টে ব্যাপারটিকে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করেছেন, কিন্তু এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে উপেক্ষা করা হয়েছে”।

এই ঘটনার পরেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল সভাপতিকে। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্মত মামলার রায় গুলোকে উদ্দেশ্য করে বিচারপ্রার্থীরা জানিয়েছেন,” যেভাবে আইনের গণ্ডির মধ্যে থেকে একজন বিচারপতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছেন সবার ক্ষেত্রে তা সত্যিই একটি আশার আলো”। অনেকের মতে “দ্রুত সুবিচার পেতে হলে অবশ্যই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নাম প্রথমে আসবে”।