ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, এতে ক্যান্সার হয়- এই কথা আমরা বহুদিন ধরেই শুনে আসছি। কিন্তু তাতে কার কি! এতে হুঁশ নেই মানবজাতির। ধূমপানেই ডুবে থাকে তারা। কিন্তু এবার এক বিস্ময়কর দাবি করলেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, পিতামহ ও প্রপিতামহের যদি অল্পবয়স থেকে ধূমপান করার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে তার প্রভাব পড়তে পারে তৃতীয় প্রজন্মের মহিলাদের উপরে। ব্রিটেনে একটি গবেষণায় এমনটাই জানা গিয়েছে।
গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামের এক জার্নালে। ওই গবেষণাপত্রের লেখক প্রফেসর জিন গোল্ডিং। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ওই গবেষণা থেকে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানা যাচ্ছে। প্রথমত, বয়ঃসন্ধির আগে কেউ যদি ধূমপান শুরু করে তাহলে তার প্রভাব বহু প্রজন্ম পরেও পড়তে পারে। দ্বিতীয়ত, অল্পবয়সিদের মেদবৃদ্ধি পেলে সব সময় সেটার জন্য তার বর্তমান খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম না করাকেই দায়ী করা যায় না। বরং সেটা আসলে তার কোনও পূর্বপুরুষের খুব কম বয়সে ধূমপানের বদভ্যাসের কারণেও হতে পারে। তবে আশ্চর্যের বিষয় যে, এক্ষেত্রে দাদুর বদভ্যাসের কুপ্রভাব নাতনিদের উপরে পড়লেও নাতিদের উপরে পড়ছে না।
প্রায় ১৪ হাজার জনের উপরে গবেষণা চালিয়েছেন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন, সবক্ষেত্রেই প্রভাব পড়েছে নাতনিদের উপরে। যে সব মহিলাদের শরীরে অতিরিক্ত মেদ রয়েছে, তাঁদের ঠাকুরদা ও প্রপিতামহরা ১৩ বছর বা তারও আগে ধূমপান শুরু করেছিলেন। আবার ১৩ থেকে ১৬ বছরের ক্ষেত্রে সেই প্রবণতা অপেক্ষাকৃত কম।
স্বাভাবিক ভাবেই গবেষকদের এমন দাবিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ওয়াকিবহাল মহলে। যদি শেষ পর্যন্ত এই গবেষণার ফল যে সত্যি তা প্রমাণিত হয় তাহলে তা নিঃসন্দেহে এক অভিনব প্রাপ্তি হবে। প্রমাণ মিলবে যে চার প্রজন্ম পর্যন্ত জিনগত প্রভাব এভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সেই গবেষণা আদতে সত্যি না মিথ্যে এখন শুধু সেই দিকেই তাকিয়ে থাকার অপেক্ষা।