সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

এই পশ্চিমবঙ্গেই এক রেলস্টেশন কোনো বি’খ্যা’ত মহিলার না’মে, গ’র্ব হবে আপনার

বিভিন্ন মণীষীদের কে সম্মান জানানোর উপায় হিসেবে বিভিন্ন রেলস্টেশন, এয়ারপোর্ট, রাস্তা, স্টেডিয়াম ইত্যাদির নামকরণ করা হয়। সেরকমই এক মহিলা বিপ্লবীর নামে প্রথম বারের জন্য এক স্টেশনের নামকরণ করা হয়, আর ওই স্টেশনটি অন্য কোথাও নয়, আমাদের বাংলাতেই অবস্থিত। স্টেশনটির নাম ‘বেলানগর’।

পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন এটি। ভারতের প্রথম কোনো স্টেশন যা কোনো মহিলার নামে নামাঙ্কিত করা হয় তাহল এটিই। ১৯৫৮ সালের ২৩ নভেম্বর এই স্টেশনটি উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন ভারতীয় রেলের উপমন্ত্রী শাহনওয়াজ খান। তবে কোন মহিয়সী নারীর নামে এই স্টেশনের নাম রাখা হয় তা জানেন কি! নিশ্চয়ই না। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কে সেই মহিয়সী নারী।

তিনি হলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর ভাইঝি বেলা মিত্র। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে এই মহীয়সী নারীর অবদান অসামান্য। নামটার সাথে নিশ্চয়ই খুব একটা পরিচিত নন আপনারা। কারণ তিনি কখনোই প্রচারের আলোয় আসতে পছন্দ করতেন না। দেশের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদানের কারণেই তিনি এতবড়ো সম্মানের অধিকারী হতে পেরেছেন।

আরো পড়ুন: ক্যালকাটা সা’ই’ক্লো’ন, বাংলার বুকে মৃ’ত্যু ৬০ হাজার মানুষের, জানুন বি’শ’দে

তবে তাঁর পরিচয় শুধুই এক স্বাধীনতা সংগ্রামী বা নেতাজীর ভাইঝি নয়, বেলা মিত্র হলেন রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের মা। ১৯২০ সালে মাতুলালয় ভাগলপুরে তাঁর জন্ম। সেই সময়কার ২৪ পরগনা জেলার কোদালিয়া নিবাসী হরিদাস মিত্রদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর ১৯৩৮ সালে তিনি একটি মহিলা সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন।

তার ঠিক বছর দুই পর ১৯৪০ সালে কংগ্রেসের রামগড় অধিবেশনের পর নেতাজী ডাক দেন আপস-বিরোধী সম্মেলনের, সেই সম্মেলনে নেতাজীর সাথে যোগ দিয়েছিলেন বেলা মিত্র। মাত্র ১৯ বছর বয়সে এই সম্মেলনের মহিলা শাখার কমান্ডারের দায়িত্ব পান তিনি। সেই সময় তিনি এবং তাঁর স্বামী এখানকার সমস্ত বার্তা সিঙ্গাপুরে পাঠিয়ে দিতেন।

এরপর ১৯৪৫ সালে হরিদাস সহ মোট ২২ জন বিপ্লবীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়। তখন সকলের ফাঁসি আটকাতে গান্ধীজির কাছে যান তিনি। সমস্তকিছু বিচার করে গান্ধীজী পত্রালাপের মাধ্যমে বন্দীদের ফাঁসির পরিবর্তে যাবজ্জীবনের ব্যবস্থা করতে সফল হন। এভাবেই বেলা মিত্র লোকচক্ষুর অন্তরালে আজীবন বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গেছেন। ১৯৫২ সালের ৩১ জুলাই মাত্র ৩২ বছর বয়সেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।