সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

মা ও বৌমার অন্য রকম গল্প, বিধবা পুত্রবধূকে লেখাপড়া শি’খি’য়ে বি’য়ে দিলেন শাশুড়ি

শাশুড়ি-বৌমার মধ্যে শুধুই একঘেয়ে অশান্তির সম্পর্ক নয়, শাশুড়ি মা চাইলেই স্নেহ, কর্তব্য এবং দায়িত্বপালনে গর্ভধারিণীকেও টেক্কা দিয়ে যেতে পারেন। সম্প্রতি সেই নজির রাখলেন রাজস্থানের একজন শাশুড়ি মা। 2016 সালে তার ছোট ছেলে শুভমের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল সুনীতার। বিয়ের পরই এমবিবিএস পড়তে গিয়ে ব্রেন স্ট্রোকে মৃত্যু হয় শুভমের। অন্ধকার নেমে আসে সুনীতার জীবনে।

সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা কমলা। পুত্রশোক সামলে পুত্রবধূর ভাল মন্দে মন দেন। সুনীতাকে তাঁর পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে বলেন।

এই সময় তার শাশুড়ি কমলাদেবী হয়ে ওঠেন তার একমাত্র অভিভাবক। তিনি তার ছেলের বিধবা স্ত্রীকে নিজের মায়ের মতো আগলে রাখেন। কমলাদেবী একজন সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা। তিনি পুত্রশোক সামলে নিয়ে পুত্রবধূর ভালো-মন্দ খেয়াল করতে শুরু করেন। পুত্রবধূকে পড়াশোনা করান। শাশুড়ির থেকে উৎসাহ পেয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন সুনীতা। তারপর বিয়ের সম্পূর্ণ করে চার বছরের মধ্যেই শিক্ষকতার চাকরি পেয়ে যান সুনীতা।

পড়শিরা বলেন, সুনীতাকে প্রথম দিন থেকেই ঘরের লক্ষ্মী বলে ডাকতেন তাঁর শাশুড়ি। ছেলের থেকেও বেশি ভালবাসতেন বউমাকে। তবে মুখে বলা এবং কাজে করে দেখানোর মধ্যে এক কথা নয়। সহজও নয়। কমলা সেই কঠিন কাজ করে দেখিয়েছেন।

বর্তমানে রাজস্থানের একটি স্কুলে ইতিহাসের শিক্ষিকা সুনীতা। প্রথম স্বামীর মৃত্যুর 5 বছরের মাথায় ছেলের বউয়ের দ্বিতীয় বিবাহ দিলেন কমলা দেবী। বিয়ের সমস্ত রীতিনীতি মেনেই পুত্রবধূ ওরফে মেয়ের বিয়ে দিলেন তিনি। পাত্র ভোপালের বাসিন্দা। তিনি কন্ট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেলের হিসাব রক্ষক হিসেবে কাজ করেন। পুত্রবধূর জন্য দ্বিতীয় পাত্র নির্বাচন করেছেন খোদ কমলা দেবী।

স্বাবলম্বী সুনীতার জন্য পাত্র চয়ন করেছেন কমলা নিজেই। সাজিয়ে গুছিয়ে আত্মীয়-স্বজনকে ডেকে বিয়েও দিয়েছেন। শ্বশুরবাড়িতেই বসেছে সুনীতার বিয়ের আসর। কন্যাদান করেছেন শাশুড়ি কমলা।

মহা ধুমধাম করে তিনি পুত্রবধূর বিয়ে দিয়েছেন। কন্যা দান করেছেন নিজের হাতে। কমলাদেবী এই উদ্যোগের খবর সোশ্যাল মিডিয়া মারফত প্রচার হয়ে গিয়েছে। ঘরের বউকে লক্ষ্মী বলে তো অনেকেই ডাকেন। কিন্তু তাকে লক্ষ্মী প্রতিমার মত আগলে রাখেন কজন? কমলাদেবী প্রকৃত অর্থেই নজির গড়লেন।