সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

স্বামীর মৃ’ত্যু’র পর লো’ন শো’ধ করতে হ’বে! শুরু করেন চাষাবাদ, এখন লক্ষ টা’কা আ’য় করেন সবিতা

একটি নারী চাইলে কতটা জীবনের সাথে সংগ্রাম করতে পারে তারই আসল দৃষ্টান্ত হলো এই সবিতা লাভাড়ে। এই মহিলা হলেন নাসিকের এক বাসিন্দা। খুবই দরিদ্র পরিবারে মানুষ। এবং তাঁর বিয়েরও হয় একটা নিম্নবিত্ত পরিবারে। তবে বিয়ের পর স্বামী সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন তিনি। ভালোই চলছিলো তাঁর জীবন। সংসারে অল্প সল্প অভাব থাকলেও শান্তির কমই ছিল না। তবে এই সুখ তাঁর কপালে বেশি দিন সইলো না। অল্প বয়সেই সে তাঁর স্বামীকে হারায়। তাঁর স্বামী আত্মারাম ২০০৮ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাদের জীবনে নেমে আসে এক কঠিন সময়। একজন গৃহবধূ ছিলেন তিনি আর এখন কি করে সে তার সংসার চালাবে বা ছেলে মেয়েকে মানুষ করবে সেই নিয়ে চিন্তায় পড়ে সবিতা। এমন কিছু পড়াশোনাও করেনি সে যে, একটা মোটামুটি বেতনের চাকরি পাবে। তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র অষ্টম শ্রেণী। তাতে কোনো কাজই যে তিনি পাবেন না বুঝতে পারছিলেন। যাহোক করে দিন কাটাচ্ছিলেন তিনি।

আর এর মধ্যেও গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মত হটাৎ একদিন তাঁর বাড়িতে নোটিস নিয়ে হাজির হন সমবায় ব্যাঙ্কের কর্মীরা। তাঁর স্বামী আত্মারাম নাকি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে রেখেছিলেন। আর এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। ব্যাংক থেকে জানায় ঋণের সময় পেরিয়ে গেছে। তাই এখন তাকে প্রায় সাত লক্ষ টাকা তাকে শোধ করতে হবে। আর এটা শুনে আকাশ থেকে পড়েন সবিতা। তিনি ভাবতে থাকেন তার সম্বল বলতে  একটা আঙ্গুরের ক্ষেত আর একটা সোনার চেন কিভাবে শোধ করবেন এত টাকা। তিনি যে আঙ্গুর চাষ করবেন সেই চাষ বাস ও পারেন না তিনি।

আরো পড়ুন: বি’য়ে’র দা’বি’তে ভাসুরপোর বাড়িতে অনশনে বসলেন কাকিমা, বে’পা’ত্তা যুবক

কিভাবে দেবেন এত টাকা। অনেক ভেবে চিন্তে তিনি ভাবেন ওই জমিতে সবজি চাষ করবেন। সেই মত কাজ শুরু করেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও মাসের শেষে ১০ হাজার টাকার বেশি রোজগার করতে পারেন নি তিনি। তাঁর সামনে দুটো লক্ষ্য এক তাকে ঋণ শোধ করতে হবে দুই তার ছেলে মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ করতে হবে। সে ভাবতে শুরু করে। আর কিভাবে চেষ্টা করলে সে সফল হবে।

আর তার কিছুদিন পরেই তার জীবনে অন্য একটি মোর নেয়। হটাৎ করেই জানতে পারেন মসলা তৈরির এক বিশেষ যন্ত্র আছে আর তার বন্ধু তাকে জানায় সেই যন্ত্রের দাম ৬৫ হাজার টাকা। সে তখনই ভাবে যেভাবেই হক এই যন্ত্র সে কিনবে এবং এই বিজনেসই করবে। অবশেষে সে তার সোনার হার বিক্রি করে দেয়। আর সেই টাকা দিয়ে ওই যন্ত্র কিনে সে প্রথম মাসে উপার্জন করে ৫০ হাজার টাকা। এই ভাবেই তাঁর নতুন পথ চলা শুরু হয়।

এভাবেই সে নিজের ছেলে কে ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়ায় ও bortome তাঁর ছেলে একটি চাকরিও করছে। মেয়েকেও যথেষ্ট শিক্ষিত করেন তিনি। তাঁর মেয়ে একজন রাজ্য পুলিশের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর তাঁর বিজনেস শুরু করার ৬ বছরের মধ্যে সব ঋণ সে শোধ ও করে দেয়। শুধু তাই নয় অতিরিক্ত উপার্জনের জন্য সে গম ও সয়াবিন চাষ ও শুরু করেন।  সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারে সবিতা বলেন, ২০১৫ সালে সে প্রতি মাসে ৬০০০০ টাকা করে উপার্জন করতেন। কিন্তু তাঁর যাত্রা এখানেই শেষ হয়নি। সবিতা জানান, ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বাজারে উন্নত মানের মশলা পাওয়া যায়।

সেই সময় তাঁর বিক্রিও হয় বেশি। বছরের বাকি সময়ে তিনি নানা ধরনের সব্জি বিক্রি করে থাকেন। এছাড়াও, ২০১৮ সালে আখ চাষ করতে শুরু করেন তিনি । আর তাতে তিনি প্রায় ৫৪ হাজার টাকা উপার্জন করেন। এইভাবেই তিনি এগিয়ে চলেছেন। তবে সে কোনো সাহায্য পেয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি তেনার জীবন থেকে এটাই শিখেছেন যে অসময়ে পাশে কেউ থাকে না। কোনো আত্মীয় স্বজন কাউকে পাশে পান নি তিনি।

আজ যা কিছু তার হয়েছে তিনি নিজের চেষ্টায় করেছেন এখনও তিনি ভোর ৫ টা থেকে কাজ করতে শুরু করেন আর সেই মাঝরাতে শুতে যান। শুধু তাই নয় নিজের জীবনের এই লড়াই থেকে তিনি যা শিখেছেন সেই প্রসঙ্গে তিনি সমস্ত মহিলাদের একটাই বার্তা দেন, প্রতিটা মেয়েরই অর্থনৈতিক দিক থেকে সাবলম্বী হাওয়া উচিত।