প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের কেন্দ্র বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ ধাম করিডোরের উদ্বোধন করবেন আজ অর্থাত সোমবার। প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী বহুদিন ধরে এই প্রকল্পে কাজ করে চলেছেন। ৩২ মাস পর অবশেষে বাবা বিশ্বনাথ করিডোরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাবা বিশ্বনাথ মন্দির এর বিস্তৃতি আজ গঙ্গা পর্যন্ত তাই বিশ্বনাথের দর্শন করার আগে গঙ্গা স্নান করতে পারেন যে কোন দর্শনার্থী। মন্দির প্রাঙ্গণে সব কিছুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাবা বিশ্বনাথ করিডোরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক করার জন্য ইতিমধ্যেই সমস্ত প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে।
প্রায় সোয়া ৫ লাখ বর্গফুট নির্মিত কাশী বিশ্বনাথ ধামে রয়েছে ২৩ টি ছোট বড় ভবন, ২৭ টি মন্দির। বর্তমানে যে সমস্ত ভক্তরা কাশী বিশ্বনাথের মন্দির দর্শন করতে আসবেন তাদের আর সরু রাস্তা দিয়ে যেতে হবে না।এই পুরো করিডোরটা প্রায় ৫০ হাজার বর্গমিটার এর একটি বড় কমপ্লেক্সে তৈরি করা হয়েছে। করিডোরটি তিনটি ভাগে বিভক্ত, এতে রয়েছে ৪ টি বড় ফটক, প্রদক্ষিণ পথে ২২ টি মার্বেল শিলালিপি। যার মধ্যে রয়েছে কাশির মহিমা বর্ণনা করা। এছাড়াও কলিডরে মন্দির চক, মুমুক্ষু ভবন, তিনটি যাত্রী সুবিধা কেন্দ্র, মাল্টিপারপাস হল, সিটি মিউজিয়াম, চারটি শপিং কমপ্লেক্স, বারানসি গ্যালারি।
এই মন্দিরের পুনর্নির্মাণ নিয়ে অনেকের অনেক রকম ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন এই মন্দিরটি আকবরের নবরত্নদের একজন রাজা টোডরমল নির্মাণ করেছিলেন। সংবাদমাধ্যমে সামনে রাজিব ত্রিবেদী,যিনি কিনা বারানসি ভিত্তিক কাশী বিদ্যাপীঠ এর ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন, তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেছিলেন, এই মন্দিরটি রাজা টোডরমল তৈরি করেছিলেন এবং এমন কিছু ঐতিহাসিক প্রমাণ রয়েছে যেখান থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় রাজা টোডরমল এই বিশ্বনাথ নির্মাণ করেছিলেন। আকবরের নির্দেশে এই কাজটি করা হয়েছিল এমন কথা মনে হলেও অনেকে মনে করেন রাজা টোডরমল এমনই প্রতিপত্তি ছিল, যে এই কাজের জন্য আকবরের আদেশের প্রয়োজন ছিল না তার।
মনে করা হয় ওই রঙ্গ যে এই মন্দিরটি ভেঙে দিয়েছিল এবং ১৭৩৫ সালে ইন্দুরের মহারানী দেবী অহল্যা বাই এই মন্দিরটি আরো একবার নির্মাণ করেছিলেন। বর্তমানে ২৮৬ বছর পর নতুন অবতারে এই মন্দিরটি বিশ্বের সামনে উপস্থাপিত হবে। দুই হাজার বর্গ মাইল জুড়ে বিস্তৃত এই মন্দিরটি দেখার জন্য কিছু বছর আগে ভক্তদের সরু রাস্তা ধরে আসতে হতো কিন্তু এবার লম্বা বড় করিডোর দিয়ে খুব সহজে বাবা বিশ্বনাথ কে দেখতে পাবেন।
কাশীকে পবিত্র শহর গুলির মধ্যে অন্যতম বিবেচনা করা হয়। ভগবান শিবের বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি হলো এটি। এটি গঙ্গা নদীর পশ্চিম ঘাটের অবস্থিত। কাশীকে ভগবান শিব এবং মা পার্বতীর সবথেকে প্রিয় স্থান বলে মনে করা হয়। মনে করা হয় এই স্থানে একবার মানুষ এলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পায় এবং মোক্ষলাভ করে।