ভিন্ন মানুষের শখ-আহ্লাদ ভিন্ন ভিন্ন। মানুষ বড় আজব প্রাণী, কখন যে মাথায় কি ভূত চাপে তা বোঝা মুশকিল। তবে এই শখের জেরেই মাত্র ৮ বছরের একটি মেয়ে সমুদ্রের তলায় সাঁতার কেটে ৬০০ কেজি প্লাষ্টিক উদ্ধার করেছে! এও কি সম্ভব হয়?
একেবারে অবিশ্বাস্য তাই না! ‘স্কুবা ডাইভিং’ করে সমুদ্রের তলায় এক অন্য পৃথিবীতে গিয়ে বাবা এবং মেয়ে মিলে এই আবর্জনা উদ্ধার করেছেন। ৮ বছরের ওই একরত্তি মেয়েটির নাম থারাগাই আরাথানা, থাকেন চেন্নাইয়ের কারাপ্পাকম এলাকায়।
সম্প্রতি তার কাজের খবরই শিরোনামের আলোচ্য বিষয়। তার বাবার নাম আরবিন্দ থারুণশ্রী, যিনি পেশায় একজন স্কুবা ডাইভিং এক্সপার্ট ও ইনস্ট্রাকটর। তিনি তার মেয়েকে জন্মের কিছু দিনের থেকেই জল ও সাঁতারের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন।
আরবিন্দের কথায়, “আমি প্রায় ২০ বছর ধরে এই কাজ করছি। জলের তলায় আমাদের অজানা একটি পৃথিবী আছে, তা জানেন তো! আমি তার সাথেই আমার মেয়ের পরিচয় করাতে চেয়েছি। শুধু আমার মেয়ে বলে নয়, সকল বাচ্চাদের ছোট থেকেই জলের সাথে পরিচয় করানো ও সাঁতার শেখানো খুবই জরুরি।
আরো পড়ুন: গরমের সিজনে দা’রু’ণ ব্যবসা, বাড়িতে থেকেই আ’য় হবে মোটা টা’কা
যেহেতু আমার পেশা স্কুবা ড্রাইভিং, সুতরাং সেখান থেকেই আমি দেখেছি জলের তলায় প্রচুর প্লাস্টিক ও আবর্জনা পড়ে থাকে। যে কারণে আমি ১৭ বছর ধরে ১০,০০০ কেজি প্লাস্টিক জলের তলা থেকে উদ্ধার করেছি।” তাঁর কথা থেকে জানা যায় ৫ বছর বয়স থেকেই থারাগাই গভীর সমুদ্রে সাঁতার কাটে।
এছাড়া তিনি এও বলেন – “এখন আমি একা নই, এই কাজে আমার পরম সঙ্গী আমার মেয়ে। আমরা দুজনে একসাথে এই কাজটি চালাচ্ছি। একসাথে এখনও পর্যন্ত জলের তলা থেকে ৬০০ কেজি প্লাস্টিক বোতল উদ্ধার করেছি এবং তা প্লাস্টিক বিক্রেতার কাছে বেঁচে দিয়েছি। আর সেগুলি তারা রি-সাইকেল করে অন্য কোনো জিনিস তৈরী করবে।
আর এর থেকে আমরা যে টাকা পেয়েছি সেটা তামিলনাড়ু সরকারের অধীন ‘Department Of Environment’-এ দান করে দেবো।” আরবিন্দ সব শেষে বলেছেন – “ছোট থেকেই আমাদের বাচ্চাদের পৃথিবী সম্পর্কে জানানো এবং সচেতন করা আমাদের কর্তব্য। যার মাধ্যমে ওরা পৃথিবীকে আরও বাসযোগ্য করে তুলতে পারবে।
মাত্র ৮ বছরের এই মেয়েটি যা বোঝে তা আজকালকার সমাজের অনেক বিজ্ঞ বিজ্ঞ মানুষও বোঝেন না। তারা বাবা-মেয়ে মিলে পরিবেশকে বাঁচানোর যে অদম্য লড়াই লড়ে চলেছেন তার থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে। এই পরিবেশ সবার, তাই প্রতিটি মানুষের উচিত একে সুরক্ষিত রাখা।