ব়্যায়াল ব্রিটিশ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট বা RBIAর পক্ষ থেকে সেরা স্থাপত্যকলার সম্মান পেল সাধারণ ইটের তৈরি বাংলাদেশের সাতক্ষীরার হাসপাতাল। এই পুরস্কার স্থাপত্যকলায় অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। বাংলাদেশের এই গ্রামীণ হাসপাতালটি চালায় দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশের সাতক্ষীরায় বেসরকারি একটি এনজিও। নাম ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল। হাসপাতালের ডিজাইন করেছিলেন বিশিষ্ট স্থপতি কাশিফ চৌধুরী। পরিবেশবান্ধব নকসা আর প্ল্যানিংকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যই এই পুরস্কার।
বিশ্বের ১১টি দেশের ১৬টি বাছাই করা স্থাপত্য নিয়ে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। মূল প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল জার্মানির বার্লিনের এরটি গ্যালারি, যেটি ডিজাইন করেছেন ডেভিড চিপারফিল্ড । দ্বিতীয় প্রতিদ্বন্দ্বি ছিল ডেনমার্কের একটি সাইকেল ফুটব্রিজ। তাই প্রত্যন্ত গ্রামের ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের লড়াই কিন্তু বেশ কঠিন ছিল।
বর্ষার জল ধরে রাখাই হল ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের অন্যতম বিশেষত্ব। গ্রীষ্মের সময় সেই জল সরবরাহ করা আর প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যাবে। এছাড়া পরিবেশকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের মধ্যে দিনের বেলা কোনও কৃত্রিম আলোর প্রয়োজন নেই। হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন স্থানীয় শ্রমিকরা। গ্রামীণ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে হাসপাতালে বাইরে ব্যবহার করা হয়েছে লালচে রংঙের ইট।
পুরস্কার প্রাপ্তিতে হাসপাতালের স্থপতি কাশেফ চৌধুরীর বক্তব্য, এই প্রাপ্তি আরও অনেককেই পরিবেশবান্ধব বাড়ি তৈরি করতে উৎসাহ দেবে। এ ধরণের হাসপাতাল তৈরী প্রসঙ্গে কাশেফ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই এলাকার জল লবণাক্ত হওয়ায় মিষ্টি জলের খুবই অভাব। সেইকারণেই বৃষ্টির দল ধরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তাই হাসপাতালের ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে যাতে বৃষ্টির জল হাসপাতালের ছাদে বা বারান্দায় পড়ে তা সরাসরি চলে যায় হাসপাতালের মধ্যে তৈরি করা কৃত্রিম খালে।
সেই খাল হাসপাতালের দুইপাশে দুটি জলাধারে যুক্ত। সেখানেই জল জমে থাকে। তাই প্রবল গরমের সময়ও হাসপাতাল ঠান্ডা থাকে। বিল্ডিংগুলি কোনাকোণি করার কারণে হাওয়া-বাতাস খেলে। তিনি আরও জানিয়েছেন জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে লড়াই করা জন্য এই হাসপাতাল একদম উপযুক্ত।