তালিবানি শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরপরই আফগানিস্তানের মানুষেরা চরম দুঃসহ জীবন কাটাতে শুরু করেছেন। খাদ্য, অর্থ, বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব দেখা দিয়েছে সেখানে। আবার অর্থ উপার্জনের জন্য বিশেষ কোনো পথও খোলা নেই। কাজেই পুরনো সেই আদিম বর্বরতা শুরু হয়েছে আফগানিস্তানের মাটিতে।
9 বছরের মেয়েকে যেখানে 55 বছর বয়সী এক বৃদ্ধের হাতে বিক্রি করে দিতে হয়, আফগানিস্তানের মাটিতে সেই বর্বর দিন ফিরে এসেছে। সদ্য আফগানিস্তানের এক বাসিন্দা নিজের মেয়েকে 2 লক্ষ আফগানি মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি করে দিলেন এমনই এক বৃদ্ধের কাছে। এই টাকা দিয়ে আফগানিস্তানে তালিবানি জঙ্গি রাজত্বে আরো কযেকমাস টিকে থাকার আশায় নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দিলেও সুখ নেই তাদের মনে।
ওই মেয়েটির বাবা আব্দুল জানিয়েছেন তিনি এর আগে বহু জায়গায় কাজ খুঁজেছেন। আত্মীয়দের থেকে টাকা ধার নিয়েছেন 8 জনের সংসার চালাবেন বলে। শেষমেষ সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর নিজের মেয়েকে বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। পরিবারের সদস্যরা যখন কয়েক দিন না খেয়ে থাকতে বাধ্য হলেন, তখন নিজের নয় বছরের মেয়েকেই বিক্রি করে দিতে বাধ্য হলেন আবদুল।
Food shortages in Taliban-controlled Afghanistan are forcing hungry families to sell their children https://t.co/CTsOTbBkj0
— CNN (@CNN) November 2, 2021
বিক্রি করার আগে একজন অসহায় বাবার মালিকের কাছে করুণ আর্তি, ” ওকে মারধর করবেন না! ও এখন থেকে আপনার বেগম!” সংবাদমাধ্যম সূত্রে এই খবর জেনে শিউরে উঠছেন নেটিজেনরা। ছোট্ট মেয়েটি পড়তে চেয়েছিল। বড় হয়ে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। তবে তালিবান জঙ্গিদের কাছে মেয়েদের স্বপ্ন বলে কিছু হয়না। তাই শেষমেষ জঙ্গী রাজত্বের বলি হতে হলো মেয়েটিকে।
9 বছরের ওই মেয়েটির নাম পরবানা। তাকে কয়েকদিন আগেই জানানো হয়েছিল যে তাকে বিক্রি করে দেওয়া হবে। সে নিজের বাবাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল। তবে খিদের কাছে হার মেনেছে পিতৃত্ব। মেয়েকে বিক্রি করে দিলেও রাতে ঘুম আসেনা আব্দুলের। এমন কতশত আব্দুল প্রতিনিয়ত ভাগ্য আর তালিবানি জঙ্গিদের কাছে পরাজয় স্বীকার করছেন আফগানিস্তানের মাটিতে।