এটি এমন একটি দেশ যেখানে মেয়েরা বাড়ীর বাইরে পা রাখতে গেলে বার বার চিন্তা করে। কোন সিদ্ধান্ত নিতে গেলে বাবা অথবা স্বামীর অনুমতি নিতে হয় দেশের নারীদের। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া কোথাও বেরোতে পারি না এই দেশের নারীরা। মহিলাটা গাড়ি চালাতে গেলে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নাই আবার ফুটবল খেলতে চাইলে জোটে নিন্দা।
তবে এই দেশ থেকেই এমন একজন তরুনী উঠে এসেছেন সকলের সামনে জিনিস সোজা এভারেস্টে শিক্ষক পর্যন্ত পৌঁছে গেছেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে। অস্বীকার করেছেন মেয়েদের পরনির্ভরশীল হয়ে থাকার সমস্ত নিয়মকে। সৌদি আরবে বড় হওয়া এই মেয়ের নাম রাহা মোহাররক।
রা বিশ্বের কনিষ্ঠ আরবিও মেয়ে এবং প্রথম সৌদি তরুণী যিনি মাউন্ট এভারেস্ট শৃঙ্গ জয় করলেন। সৌদি আরবে বড় হওয়া মেয়েদের অনুশাসন মেনে চলতে হয় ছোটবেলা থেকেই সে সমস্ত দেখে এসেছেন রাহা। কিন্তু কোন চোখ রাঙানি কে ভয় না পেয়ে সমস্ত বাধা-নিষেধ কে অতিক্রম করে তিনি নিজের লক্ষ্যে অনড় ছিলেন।
আরো পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁ’পে উ’ঠ’লো মঙ্গলে থাকা সব যন্ত্রপাতি, তাতে বিজ্ঞানীদের কি লা’ভ হ’লো?
শারজার আমেরিকান ইউনিভার্সিটি থেকে ভিজুয়াল কমিউনিকেশনে স্নাতক হন রাহা। উচ্চতর শিক্ষা অথবা সংসার কোন দিকে না গিয়ে তিনি একেবারে অন্য দিকে চলে গেছেন তারপর। নিজের লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছেন পর্বতারোহণকে।
যে দেশে মেয়েদের শিক্ষার অধিকার, বাক স্বাধীনতার অধিকার, ভোটারাধিকার কোন কিছুই সম্ভব নয় সেই দেশ থেকে এই মেয়েটি উঠে এসে নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে আজ বিশ্ব জয় করেছে।
কাজটি ভীষণভাবে কঠিন ছিল স্বাভাবিক ভাবে এবং এই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছে রাহা। যদিও শুরুটা হঠাৎ করেই হয়েছিল। স্নাতক হবার পর বন্ধুদের সঙ্গে আফ্রিকা যাবার জন্য জেদ করেছিলেন রাহা।
কিলিমাঞ্জারো পর্বত অভিযানে যাওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। অন্যদিকে রাহার বাবা মোটামুটি খোলা পরিবেশে মেয়েদের বড় করলেও এতোখানি স্বাধীনতা দিতে প্রস্তুত ছিলেন না।
আরো পড়ুন: পুরুষ সে’জে’ই রয়েছেন ৩০ বছর ধ’রে! মেয়েকে মানুষ করতে মায়ের অনবদ্য জীবন সং’গ্রা’ম
কিন্তু অদম্য জেদ নিয়ে অভিযানে বেরিয়ে পড়েন রাহা। কিলিমাঞ্জারো জয় করার পর থেকেই পর্বতারোহণের নেশা চেপে ধরে তাকে। নেপালের কালাপাথর, ইউরোপের মাউন্ট এলব্রুস, আন্টার্কটিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট ভিনসন, সবকিছুই একের পরে এক জয় করতে শুরু করেন তিনি।
তারপর বেরিয়ে পড়েন বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয়ের লক্ষ্যে। 25 বছর বয়সে অবশেষে 2013 সালের 18 ই মে পৃথিবীর সর্বকনিষ্ঠ পর্বতারোহী হওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। আজ ঠিক সেই কারণেই আরব দুনিয়ার মেয়েদের কাছে স্বপ্ন দেখার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়েছেন তিনি।