একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও মানুষ আজও কুসংস্কারের কড়াল গ্রাস থেকে মুক্তি পায় নি। সেই কুসংস্কারের দোহাই দিয়ে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীকে ঝাড় ফুঁকের নামে ওঝার অত্যাচারের ঘটনা চারিদিকে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
শুধু তাই নয়, এই ভুয়ো কাজকর্মে বাধা দিতে গেলে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের গালিগালাজ ও হুমকি দিয়েছেন ওই ওঝা। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার মেজিয়া থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাউরী পাড়ায়।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সূত্রে খবর, মেজিয়া থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা তেলেন্ডি পুরুনিয়া হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী গতকাল সন্ধ্যে থেকে অদ্ভুত সব আচরণ করতে শুরু করে। ছাত্রীর পরিবারের লোকজন ভাবছেন ছাত্রীকে হয়তো ভূতে ধরেছে।
আরো পড়ুন: পেট্রোলের শুধু গ’ন্ধ পেলেই ছোটে এই কোম্পানির বাইক! দেশের নম্বর-১ মোটরসাইকেল কোনটি?
তাই এই আশঙ্কায় তারা বেলিয়াতোড় থানার গদারডিহি এলাকার এক মহিলা ওঝাকে খবর দেয়। বুধবার সকালে ওই মহিলা ওঝা দুই পুরুষ সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে রামচন্দ্রপুর গ্রামে যায় এবং ছাত্রীর বাড়ির কাছেই তাকে ঝাড়ফুঁক শুরু করে।
তবে ভূত তাড়ানোর নামে কার্যত ছাত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচার চলতে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার খবর পেয়ে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীরা তৎক্ষণাৎ ওই গ্রামে পৌঁছান।
তারা গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে বলেন যে ওঝার কান্ড কারখানা সব ভুয়ো। কিন্তু গ্রামবাসীরা তা মানতে রাজি নন। সেক্ষেত্রে তারা ওই ছাত্রীকে ওঝার কবল থেকে মুক্ত করা তো দূর, উপরন্তু ওই ওঝা, তাঁর সহযোগী এবং গ্রামবাসীরা একত্রিত ভাবে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের লক্ষ করে ব্যাপক গালিগালাজ করতে শুরু করেন।
এহেন ঘটনায় বিজ্ঞানমঞ্চের তরফে মেজিয়া থানার পুলিশকে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে পৌঁছান মেজিয়া থানার পুলিশ। অনেক বচসার পর পুলিশ সেখান থেকে বিজ্ঞান মঞ্চের কর্মীদের উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তবে ছাত্রীর পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা উপরোক্ত বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে একেবারেই নারাজ।