মাত্র কয়েক মাস আগেই দিল্লির এক মহিলা আইপিএস অফিসার সংযুক্তা পরাশরকে দিল্লি পুলিশের বিপক্ষে মুখ খুলতে দেখেছিল আপামর ভারতবর্ষ। লিঙ্গ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন তিনি। সরকারের থেকে প্রাপ্ত গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করতে গিয়ে রাস্তায় দিল্লি পুলিশের নজরে পড়ে যান সংযুক্তা। তিনি যে একজন আইপিএস অফিসার, এবং তিনি নিজের গাড়ি নিজেই চালাচ্ছিলেন, এই কথাটা যেন কিছুতেই দিল্লি পুলিশ মানতে চাইছিল না। একজন মহিলা আইপিএস অফিসার নিজেই গাড়ি ড্রাইভ করছেন! মানতে বেজায় কষ্ট হয়েছিল পুলিশের।
পুলিশের এই মনোভাব এবং আচরণ সংযুক্তার মোটেই সহ্য হয়নি। তিনি তাই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন। তবে শুধু দিল্লি পুলিশই নয়, সমাজের অভিজাত সম্প্রদায়ের বহু মানুষের মধ্যেও এমন মানসিকতা থেকে থাকে।
সেই মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সংযুক্তা। তার মধ্যে এই প্রতিবাদী মনোভাব কিন্তু বরাবর ছিল। সংযুক্তা অসম সাহসী এবং ততোধিক বুদ্ধিমতী আইপিএস অফিসার। তিনি একাই কর্তব্যরত অবস্থায় ১৬ জন বোড়ো জঙ্গিকে নিজে হাতে খতম করেছেন।
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর সংযুক্তা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর উচ্চশিক্ষার জন্য এম ফিল করেন এবং আমেরিকার বিদেশ নীতি নিয়ে ডক্টরেটও করেন। ইউপিএসসি পরীক্ষাতে ৮৫ তম স্থান অর্জন করেছিলেন তিনি। চাকরি পাওয়ার পর প্রথমে আসামের মাকুন্দে, তারপর সোনিপতে এবং বর্তমানে দিল্লিতে কর্তব্যরত রয়েছেন তিনি। অসময় থাকাকালীন তার কড়া নজরে অসমের জঙ্গল থেকে বোড়ো জঙ্গিরা পালাতে বাধ্য হয়েছিল তার ভয়ে।
শুধু জঙ্গিদের বিরুদ্ধেই নয়। এই মহিলা আইপিএস অফিসার প্রকাশ্য রাস্তায় ইভটিজিংও রুখে দিয়েছিলেন। স্কুল-কলেজের সামনে সাদা পোশাকের মহিলা পুলিশ নিযুক্ত করে রাখতেন তিনি। বহু অপরাধীই ধরা পড়েছিল তার হাতে। স্কুল কলেজের ছাত্রীদের নির্ভয়ে যাতায়াতের আশ্বাস প্রদান করেছিলেন তিনি। এহেন মহিলা আইপিএস অফিসারকে সকলে লৌহ কন্যা বলেই চেনেন। ৪১ বছর বয়সি সংযুক্তার একটি ৮ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে। আইপিএস অফিসার হিসেবে নিজের ডিউটি পালন করার পাশাপাশি নিজের সন্তানকে যথেষ্ট সময় দেন তিনি।