রান্নাঘরের সমস্ত জিনিসের দাম যেভাবে উত্তরোত্তর বেড়েই চলেছে, তাতে করে বাঙালি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের মাথায় হাত পড়ে গেছে। একদিকে আর্থিক মন্দা অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম যেভাবে বেড়ে চলেছে, মানুষের পক্ষে সংসার সামলানো মুস্কিল হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য জিনিসের পাশাপাশি ভোজ্যতেলের দাম এতটাই বেড়ে যাচ্ছে, মানুষের ভোজ্য তেল কিনতে কিনতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে।
তবে এবার মধ্যবিত্ত মানুষের রান্না ঘর সামলানোর জন্য এগিয়ে এলো কেন্দ্র সরকার। বুধবার অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, ভোজ্য তেলের ওপর আমদানি নির্ভরতা কমাতে চায় ভারত। ইতিমধ্যেই ১১০৪০ কোটি টাকার পাম অয়েল মিশন প্রচলন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। একদিকে যেমন নির্ভরতা কমিয়ে তেমন আত্মনির্ভর হবে ভারত এই পদক্ষেপ গ্রহণ করলে। অন্যদিকে বাড়বে কৃষকদের রোজগার।
সাধারণ মানুষের ওপর অর্থনৈতিক বোঝা কমানোর জন্য সূর্যমুখী তেলের ওপর আমদানি শুল্ক কমানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কেন্দ্র। আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১৫% থেকে করা হলো ৭.৫ শতাংশ। এর আগে অপরিশোধিত পাম তেলের ক্ষেত্রেও আমদানি শুল্ক কমিয়ে দিয়েছিল মোদি সরকার। বর্তমানে মোট শুল্কের পরিমান ৩৮.৫০ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩০.২৫ শতাংশ। যদিও এই আমদানি শুল্ক রাস শুধুমাত্র আগামী মাস পর্যন্ত থাকবে।
গোটা ভারতে বার্ষিক ২৫ মিলিয়ন টন ভোজ্য তেল খরচ হয়, যার মধ্যে ১৫ মিলিয়ন টন ভোজ্য তেল আমদানি করা হয় বিদেশ থেকে। রাশিয়া এবং ইউক্রেন থেকে ২.৫ লাখ টন সূর্যমুখী তেল আমদানি করা হয়েছে এবং ৩৪ লক্ষ টন সোয়াবিন তেল আমদানি করা হয়েছে ব্রাজিল থেকে। এই সমস্ত পদক্ষেপ থেকে বোঝা যায় ভারতে ভোজ্যতেলের ব্যবস্থা কতখানি আমদানি নির্ভর। ঠিক সেই কারণে পামওয়েল মিশনের মাধ্যমে দেশকে আত্মনির্ভর করতে সচেষ্ট হয়েছেন কেন্দ্র। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্য তে শিল্প বৃদ্ধির জন্য পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত সহায়তা দেওয়া হবে। বাজারে যদি ফসলের দাম ওঠানামা করে এবং তার জন্য যদি কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হন, তাহলে ডিভিডির মাধ্যমে ফসলের উপযুক্ত দাম দিয়ে দেবে কেন্দ্র।