সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

অ’দ্ভু’ত প্র’তি’ভা! ১২৫ টিরও বে’শি ব্যালেন্সিং আ’র্ট তৈরি করে ভা’ই’রা’ল বাংলা’র এই বি’জ্ঞা’নী

অদ্ভুত প্রতিভা! ১২৫ টিরও বেশি ব্যালেন্সিং আর্ট তৈরি করে ভাইরাল বাংলার এই বিজ্ঞানী

গতানুগতিক শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যেও নিজেকে ক্রিয়েটিভ করে তোলার বৈশিষ্ট্য অনেকের মধ্যেই প্রকাশ পায়। তাই পেশায় ব্যারাকপুর রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যাপক হয়েও তাঁর আগ্রহ জন্মায় পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্টের। বহু বছর তিনি এই কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। সেই সাথে তিনি ইলেকট্রনিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ও পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক্স বিষয়টির স্নাতক স্তরের বোর্ড অফ স্টাডিজের একজন সদস্য। তিনি হলেন অধ্যাপক ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার। তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনই তাঁর এই জ্ঞানের ভান্ডারের বিস্তৃতি ঘটিয়েছে।

আজ থেকে ঠিক বছর দুয়েক আগে সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় ইজরায়েলের জিম প্রশিক্ষক মোঃ আল-শেনবারির কথি। গৃহস্থালির এক বা একাধিক জিনিসকে অবিশ্বাস্যভাবে একটি বিন্দুতে ভারসাম্য করার মাধ্যমে তিনি নাম তুলেছিলেন সংবাদপত্রে। আর এই খবর পড়ার পর থেকেই পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্টের প্রতি এই অধ্যাপকের আগ্রহ আরও খানিকটা বেড়ে ওঠে। ইতিমধ্যে অধ্যাপক ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার ১২৫ টিরও বেশি ব্যালেন্সিং আর্ট তৈরি করে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসেও নিজের নাম তুলেছেন। শুধু তাই নয়, সর্বাধিক পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্টের জন্য ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার স্বীকৃতিও পেয়েছেন।

পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্টের কথা খুব কম লোকই জানেন। অধিকাংশেরই এই বিষয় সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই এই ধরনের আর্টের শিল্পীও খুব বিরল। এই পারফর্মিং আর্টে একটি বা একাধিক জিনিসকে একসঙ্গে একটি বিন্দুতে ব্যালেন্স করা হয়।‌ শুধু ছোট জিনিসই নয়, যে কোনো বড় আর অত্যন্ত ভারী জিনিসকেও একটা কোণের উপর দাঁড় করানো সম্ভব। ডঃ প্রিয়দর্শী মজুমদার অবলীলায় তা করেও দেখিয়েছেন। বড় বা ভারী জিনিস বলতে যা কিছু হতে পারে যেমন – ট্রলি ব্যাগ, সোফা, চেয়ার, টেবিল, কাঠের আলমারি, গ্যাস সিলিন্ডার, টিভি ইত্যাদি আরও অনেক কিছু।

এটি সম্পূর্ণভাবে একটি বি’শু’দ্ধ মন এবং হাত নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া। নাগেরবাজারের বাসিন্দা ওই অধ্যাপক এই খেলা দেখানোর জন্য বেছে নিয়েছেন ইটের টুকরো বা সামান্য কাঁচের বোতল। পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্টের প্রতি তাঁর আগ্রহ আজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে চটজলদি যে কোনো জিনিসকে একটা বিন্দুতে দাঁড় করিয়ে দেওয়া এখন তাঁর কাছে ভীষণ সহজ একটি ব্যাপার। এই শিল্পে এখন তিনি যথেষ্ট পারদর্শী।

আপনিও কি এই কাজের প্রতি আগ্রহ পাচ্ছেন? তাহলে চলুন দেরী না করে দেখে নেওয়া যাক এই শিল্পকে আয়ত্ত করার জন্য কী কী প্রয়োজন? এক্ষেত্রে অতি শক্তিশালী মনস্তাত্বিক শক্তি, দুর্দান্ত পরিমাপ দক্ষতা, নিরঙ্কুশ ধৈর্য, সৃজনশীলতা এবং প্রাথমিক মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে বোঝার প্রয়োজন আছে। আর কীভাবেই বা করা হয় এই পয়েন্ট ব্যালেন্সিং? জানতে ইচ্ছা করছে তো! আসলে মাধ্যাকর্ষণের প্রভাব যে কোনও বস্তুতে বল এবং টর্ক তৈরি করে। পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্ট এই টর্ককে শূন্য করে দেয়। আর তাই বস্তু বা বস্তুসমষ্টির ভরকেন্দ্র বেস পয়েন্টের উপরে উল্লম্বভাবে দাঁড়িয়ে থাকে।

এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতামত, সাধারণ ব্যালেন্সিং এবং পয়েন্ট ব্যালেন্সিংয়ের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। মূল পার্থক্য হল সাধারণ ব্যালেন্সিং-এ বেস পয়েন্টের ক্ষেত্রফল বড় হতে পারে তবে পয়েন্ট ব্যালেন্সিংয়ে বেস ক্ষেত্রটি খুব ক্ষুদ্র বা জ্যামিতিক বিন্দুর কাছাকাছি হয়। পয়েন্ট ব্যালেন্সিং আর্ট সাধারণত দুটি অংশে সম্পন্ন হয়। প্রথমে আর্টের পরিকল্পনা করতে হয় অর্থাৎ কোন কোন বস্তুকে একটি বিন্দুতে ধরে রাখা হবে, সেটা ঠিক করতে হবে এবং পরবর্তী পর্যায়ে আর্টটিকে কার্যকর করতে হবে।