মহামারীর হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য আমাদের একমাত্র অস্ত্র হলো টিকাকরণ। কিন্তু এই টিকা করন করার পরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে বলে অনেকেই ভয় পাচ্ছেন টিকা নিতে। এমন একটি গ্রামের কথা সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে যেখানে টিকাকরণ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য গ্রামের বাসিন্দারা এদিক-ওদিক লুকিয়ে পড়ছেন। কেউ লুকিয়ে পড়েছেন আমবাগানে কেউবা আবার ঝাঁপ দিচ্ছেন পুকুরে। যে যেখানে পারছেন লুকিয়ে পড়ছেন শুধুমাত্র টিকাকরণ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য।
এবার প্রশ্ন হল কেন এরকম করছেন তারা? শুধুমাত্র ভয়ে নাকি অন্য কিছু? খবর পাওয়া গেছে যে, গ্রামজুড়ে গুজব ছড়িয়েছে যে পঞ্চায়েত এর তরফ থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে গ্রামের মানুষদের নাকি করোনা পরীক্ষা করবেন তারপর টিকাকরণ করবেন। তাই মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুর সহ একাধিক গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা সকলেই লুকিয়ে পড়ছেন টিকাকরণ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য।
কেউ পালিয়ে যাচ্ছেন পাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে কেউ বা আবার লুকিয়ে পড়েছেন আম বাগানে। আবার কেউ কেউ পুকুরে স্নান করতে নেমে পড়েছেন টিকাকরণ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য। অবাক এই গানটা রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে সমস্ত এলাকা জুড়ে। মানুষের এই বিচিত্র আচরণে রীতিমতো হতবাক হয়ে গেছেন পঞ্চায়েত দপ্তরের স্থানীয় কর্তা থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মী পর্যন্ত।
অথচ গণহারে টিকাকরণের প্রকল্প সম্পর্কে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কিছুই জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। শুধুমাত্র গুজবের কারণে এত বড় হুলুস্থুলু পড়ে গেছে গোটা এলাকা জুড়ে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই মানুষের জ্বর সর্দি-কাশি উপসর্গ দেখা গেছে, কিন্তু অর্ধেক মানুষ শুধুমাত্র করোনা পরীক্ষার ভয় হাসপাতাল মুখ হচ্ছেন না অথবা চিকিৎসা করাচ্ছেন না।
এরই মধ্যে বহু মানুষ বাধা-নিষেধ মানছেন না বলে শুনতে পাওয়া গেছে, তাই মানুষকে সচেতন করতে উদ্যোগী হয়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য, আশা কর্মী থেকে শুরু করে অঙ্গনারী কর্মী, সকলেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করেছেন এবং সচেতন করতে চাইছেন সাধারণ মানুষকে। তারই মধ্যে হঠাৎ করে কি করে চালু হয়ে যায় যে স্বাস্থ্যকর্মীরা পুলিশ নিয়ে করণা টিকা দেওয়ার জন্য আয়োজন করছেন, তার ফলেই এই হুলুস্থুল কাণ্ড বেধে যায়।
যদিও পঞ্চায়েতের প্রধানসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা অনেক বুঝিয়ে বহু মানুষকে গ্রামে ফেরানোর চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি সকল কে বোঝানোর চেষ্টা করছেন কেন নিয়ম বিধি মেনে চলতে হবে। এ প্রসঙ্গে গ্রামের এক বাসিন্দা তারিকুল শেখ বলেছেন যে, আমরা শুনেছি সকল কে ধরে নিয়ে গিয়ে টিকাকরণ করানো হবে তাই ভয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
অন্যদিকে স্থানীয় ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুল লস্কর বলেছেন যে, কেউ হয়তো বিনা কারণে গ্রামের মধ্যে একটি গুজব ছড়িয়ে দিয়েছে এবং ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে আপ্রাণ বোঝানোর।