আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রধান মন্ত্রী হিসেবে শুধু দেশেই নয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বলে জানা যায় মুড অফ দ্যা নেশন সার্ভে থেকে। জানা যায়, যেখানে, আমেরিকার জো বাইডেন, ফ্রান্সের ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ, কানাডার জাস্টিন ট্রুডো, জাপানের কুমিও কিশিদার মতো রাষ্ট্রনেতাদের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে, সেখানে মোদি একাই যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন সকলের কাছে।
যদিও তাঁর সময়ে আর্থিক সমস্যা ও বেকারত্ব একটা বিরাট সমস্যা দেখা দিয়েছে তবুও তাঁর রেটিং বেশ ভালো বলেই জানা যাচ্ছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে একটি সার্ভে করা হয়। সেখানে দেখা যায়, আগামী লোকসভা নির্বাচনে জোর টক্কর লাগতে পারে মোদি-মমতার। কিন্তু সম্প্রতি সার্ভের রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, এই মুহুর্তে মোদির জনপ্রিয়তার ধারে কাছে কোনও ভারতীয় রাজনীতিক নেই।
আমেরিকার এক সার্ভে থেকে জানা গিয়েছে বিশ্বে মোদীর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশী। তার রেটিং ৭৫ শতাংশ। তার ধারে কাছেও কোনো দেশের মন্ত্রীরা নেই।এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্র আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জনপ্রিয়তার রেটিং মাত্র ৩৮ শতাংশ। তাঁর এই সাফল্যের প্রধান কারণ হলো ভারতের অর্থনীতিক অবস্থা।
আরো পড়ুন: সাদা গরুর স্বপ্ন দেখা কি খু’ব ভা’লো? কি বলছে স্বপ্নশাস্ত্র?
আমাদের বিশ্বে করোনা আসার আগেও অন্যান্য দেশ গুলো আমাদের দেশের থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল কিন্তু এই মহামারী আসার পর সব দেশেরই ভিত নড়ে গিয়েছিল। সব দেশেরই অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে গেছিলো। ফলস্বরূপ পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কার অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি দেখতেই পাচ্ছি আমরা।
সেখানে ভারতের উপর এত বেশি আঁচ লাগেনি বলেই জানিয়েছে আইএমএফ, ব্লুমবার্গের মতো সংস্থাগুলি। ভোটার এবং ইন্ডিয়া টুডে ২০২২ সালে যৌথ ভাবে মুড অফ দা নেশন সার্ভে করে। সেখানে দেখা যায় ভারতে মোদির জনপ্রিয়তা ৬৬ শতাংশ। আগস্ট ২০২১-এর থেকে প্রায় ১২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
কোভিড মহামারির আগে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জনপ্রিয়তা ছিল প্রায় ৭৮ শতাংশ। সেই অঙ্ক কিছুটা কমে দাঁড়িয়েছে ৫৩.৪ শতাংশ। মোদির নিকটবর্তী রাহুল গান্ধী এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের থেকে অনেকটাই এগিয়ে। এই দুজনেরই জনপ্রিয়তা দুই এর ঘরে পৌঁছায় নি। স্বাধীনতার পর সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী প্রথম স্থানে রয়েছেন নরেন্দ্র মোদি।
দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন অটল বিহারি বাজপেয়ী। এর পর যথাক্রমে রয়েছেন ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং এবং জওহরলাল নেহেরু।মোদীর সাফল্য ও কিছু ব্যর্থতার কারণ গুলো আসুন জেনে নেওয়া যাক।
১. ক্ষমতায় আসার পরেই ব্ল্যাক মানি বা কালো টাকার উপর কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিলেন তিনি।
২. তাঁর আমলেই অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের শুভ সূচনা হয়।
৩. তিনি কাশ্মীর থেকে আর্টিকেল ৩৭০ এবং ৩৫ এ অবলুপ্ত করার নির্দেশ দেন।
৪. করোনা কালে ভারতকে সঠিক দিশা দেখানো তাঁর একটি বিরাট কাজের পরিচয় দেয়।
৫. বেশ কিছু মন্ত্রীর আমলেই বড়ো সরো দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও মোদীর আমলে এখনও পর্যন্ত কোনও বড় দুর্নীতি সামনে আসে নি। রাফাল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলেও তা প্রমাণ হয়নি।
৬. তাঁর একটি অন্যতম নীতি যা বিশ্বের ইতিহাসে জনপ্রিয় টা হলো তাঁর আগ্রাসী পররাষ্ট্রনীতি।
তবে এই সাফল্যেতে বেশ কিছু ব্যর্থতাও লুকিয়ে আছে। সেগুলো হলো যথাক্রমে,
১. করোনার সময় সব দিক সামাল দেওয়ার চেষ্টা করলেও পরিযায়ী শ্রমিকদের অনেক ভোগান্তি হয় তাই অনেকেই তাদের দুর্দশার জন্য মোদিকে দায়ী করেন।
২. সমাজের যুব সম্প্রদায় তার প্রতি খুশি নয়। গত ৩ বছর ধরে চাকরির বাজারে মন্দা বেকারত্ব এখনও আকাশ ছোঁয়া। আকাল দেখা দিয়েছে সরকারি চাকরির বাজারেও।
৩. একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থাকে ব্যক্তিগত মালিকানায় বিক্রি করে দেওয়া ভয়ঙ্কর অভিযোগ বারবারই উঠেছে মোদির বিরুদ্ধে। অনেক সরকারি সংস্থা গুলি আজ আর নেই সব বেসরকারিকরণ হয়ে যাচ্ছে যত দিন যাচ্ছে।
৪. তিন কৃষি বিল নিয়েও বেশ কোনঠাসা অবস্থা হয় বিজেপির।
৫. আর্থিক বৃদ্ধি হ্রাস মোদির বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযোগ। তাঁর আমলেই সমস্ত জিনিসের উপর জিএসটি বসেছে। তাছাড়াও সব জিনিসের দাম আগে কখনো এত বাড়েনি অথচ তাঁর আমলেই বেড়েছে।
পেট্রল থেকে জ্বালানি তেলের দাম এই বছর সাধারন মানুষের হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে এগুলো নিয়েও দেশের মানুষ যথেষ্ট বিক্ষুব্ধ আমাদের দেশের প্রধান মন্ত্রীর উপর।