কথায় কথায় চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যায় এই কথাটি আমরা সব সময় শুনি। কিন্তু খাদ্য হিসেবে ছানাবড়া ইতিহাস হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ছানাবড়ার জন্ম হয়েছিল কোথায়। আমাদের মুর্শিদাবাদ একসময় নবাবী আমলের জন্য বিখ্যাত ছিল। এই মুশিদাবাদ নাকি একসময় বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী হিসেবে পরিচিত ছিল। এখনো সেখানে প্রাচীন স্থাপত্য এবং শিল্পকলা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
মুর্শিদাবাদের অন্যতম একটি বিখ্যাত মিষ্টি হলো ছানা বড়া। শুনতে পাওয়া যায়, নবাবী আমলের প্রায় শেষের দিকে মুর্শিদাবাদে নিমাই মন্ডল নামে এক মিষ্টি ব্যবসায়ী ছানা বড়া বানাতে শুরু করেছিলেন। রাজা মনীন্দ্র চন্দ্র নন্দী ছানাবড়া খেতে খুবই ভালবাসতেন। তিনি এই মিষ্টি মুর্শিদাবাদের বাইরে প্রচার করার জন্য পাঠিয়ে দেন। আস্তে আস্তে সেই মিষ্টি সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
তবে এখন মুর্শিদাবাদে সেইভাবে ছানাবড়ার জন্য বিখ্যাত কোন দোকান নেই বটে তবে সদর শহর বহরমপুরে ছানাবড়ার একাধিক দোকান দেখতে পাওয়া যায়। নবাবী আমলের একটি ছানাবড়া সাইজ এতটাই বড় হয়ে যেত, সেখান থেকেই চক্ষু ছানাবড়া কথাটি এসেছে। এই মিষ্টি নাকি প্রথম বানিয়েছিলেন খাগড়া সোনাপট্টি এলাকার প্রসিদ্ধ মিষ্টি ব্যবসায়ী পটল ওস্তাদ। ছানা কে ঘি দিয়ে ভাজা হতো বলে এটির নাম ছানাবড়া।
তবে ইতিহাস যাই হোক না কেন এই ছানাবড়া প্রশংসা করেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে স্বামী বিবেকানন্দ। ১৯৩৮ সাল থেকে বহরমপুর থেকে নামিদামি ব্যক্তিদের এক মণ ওজনের ছানাবড়া দেওয়া হতো উপহার, নিঃসন্দেহে সেগুলো পেয়ে ভীষণ আনন্দিত হতেন তারা।