সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

দর্শকদের রু’চি না ব’দ’লা’লে সিরিয়ালে ১০ টা বি’য়ে ও প’র’কী’য়া থাকবেই: কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্প্রতি টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ধারাবাহিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। বাংলা ধারাবাহিকের মান এবং নিম্ন রুচির প্লটের বিরুদ্ধে সিরিয়ালের অন্যতম খ্যাতনামা লেখিকা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের দিকে প্রত্যক্ষভাবেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন তিনি।

আজকালকার সিরিয়ালগুলির মূল কন্টেন্টই হল নারী চরিত্র এবং সমাজের অবক্ষয়। কিন্তু এ বার সরাসরি সংবাদমাধ্যমে কাছে মুখ খুললেন ধারাবাহিক ‘আয় তবে সহচরী’র মুখ্য চরিত্র‘সহচরী’ ওরফে অভিনেত্রী কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়।

স্টার জলসার জনপ্রিয় সিরিয়ালগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘আয় তবে সহচরী’। ধারাবাহিকের কাহিনীকার সাহানা দত্ত। এক মাঝবয়সী নারীর উচ্চশিক্ষা, উত্তরণের পথে এগিয়ে যাওয়ার গল্পই দেখানো হয়েছিল এই ধারাবাহিকের শুরুতে। আর সেই কারণেই প্রথম থেকেই দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছিল সহচরী। প্রথম থেকে এই সিরিয়ালের টিআরপিও ছিল তুঙ্গে।

আরো পড়ুন: ইউক্রেনের মারিওপলে ১২০০ স্থানীয় বাসিন্দাদের মৃ’ত্যু হয়েছে রুশ হা’ম’লা’য়, বলছে রিপোর্ট

তবে কিছু দিন ধরেই ‘সহচরী’র গল্প নিয়েও তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমে। আচমকাই অন্যান্য সিরিয়ালের মতো এখানেও পরকীয়া, দ্বিতীয় নারী, তথাকথিত শাশুড়ি-বউমার কূটকচালির মতো ধারাবাহিকের একঘেয়ে কাহিনী ঢুকে পড়েছে। আর সেই কারণেই ধারাবাহিকের প্রথম পরিচালক পরিচালনা ছেড়ে দিয়েছেন।

এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, গল্প আগের জায়গায় ফিরিয়ে না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত তিনি আর পরিচালনা করবেন না। অন্যদিকে নারী দিবসের এক বিশেষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন অভিনেত্রী কণীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে অভিনেত্রী বলেন, “এই ধারাবাহিকের গল্প আমার এতটাই ভালো লেগেছিল যে তা শোনার পর আমি আর দ্বিতীয় বার ভাবিনি।

অসমবয়সী বন্ধুত্ব, সংসার সামলে এক নারীর উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন এসব নিয়েই চিত্রনাট্য লেখা হয়েছিল ধারাবাহিকের। আমিও তাই রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু অভিনয় করতে করতে দেখলাম, লেখাপড়ার গল্পে কোনোভাবেই ইন্টারেস্ট নেই দর্শকদের। তখন ধারাবাহিকের টিআরপি ছিল ৫-৬-এর আশপাশে।

কিন্তু যেই মাত্র ধারাবাহিকের কাহিনীতে পরকীয়ার গল্প যোগ করা হল ওমনি টিআরপি একলাফে ৯-এর ঘরে গিয়ে পৌঁছালো!আর তা দেখেই শুধু আমি নই, গোটা ‘সহচরী’ টিম হতবাক হয়েছে। বিনোদনে বিশ্ব অনেকটা এগিয়ে গেলেও বাংলা এখনও তাদের বস্তা পচা মানসিকতা থেকে বেরোতেই পারে নি।”

দর্শকদের রুচিবোধের প্রসঙ্গে কণীনিকা বলেন, প্রত্যেকেরই শিক্ষা তাদের বাড়ির পরিবেশের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে। সেই অনুযায়ী কেউ দেখেন নেটফ্লিক্স। কেউ বা পড়েন সংবাদপত্র। আবার কোনো নারী ধারাবাহিকের অন্য নারীর উপরে ঘটতে থাকা অত্যাচার, তার চোখের জল দেখতে ভালবাসে।

আরো পড়ুন: নে’শা’র বি’রু’দ্ধে যু’দ্ধ, একসময় তিনিই ছিলেন প্রচন্ড নে’শা’গ্র’স্ত! মা’দ’কে’র জন্য করেছেন পাগলামি

লীনা গঙ্গোপাধ্যায় থেকে শুরু করে সাহানা দত্ত সমস্ত লেখিকাই সিরিয়ালের কন্টেন্ট হিসেবে ভালো গল্প দিতেই পছন্দ করেন। কিন্তু ঘুরেফিরে দর্শকদের চাহিদা মেটানোর জন্য সমস্ত কাহিনী সেইদিকেই মোড় নেয়। তাই যতদিন না দর্শকের রুচি বদলাবে, ততদিন ধারাবাহিকে পরকীয়া, এক পুরুষের ১০টা বিয়ে থাকবেই।

দর্শক আগে তাঁদের রুচি বদলান। তা হলে আমরাও ধারাবাহিকের গল্প বদলাব। ভালো বিষয় দেখালে যেখানে টিআরপি পড়ে যায় সেখানে আর কি ভালো আশা করা যায়? একটা কথা মাথায় রাখবেন ধারাবাহিক বন্ধ মানেই অভিনেতা, কলা-কুশলীদের উপার্জনও বন্ধ।’’