সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

বি’রা’ট ফুলের বাজার, তাকে ঘিরেই য’তো কা’ন্ড! এটি একটি ইতিহাস

এশিয়ার বৃহত্তম ফুলের বাজার চেনেন নিশ্চয়ই!হ্যাঁ, মল্লিক ঘাট ফুলবাজার, যা হাওড়া ফুল বাজার নামেই বেশি পরিচিত লোকমুখে। তবে এ যেন ঠিক ফুলের বাজার নয়, আস্ত জ্বলজ্যান্ত একটা ইতিহাস। টলিউড তো ছাড়ুন, বলিউডের বহু ছবির শ্যুটিং হয়েছে বিখ্যাত এই মল্লিক ঘাটে।

ভারত নদীমাতৃক দেশ। তাই সেই নদীর যে ঘাট থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। আর সেই নদী আবার ভারতের দীর্ঘতম নদী গঙ্গা। আমাদের এই দেশে নদীর ঘাটে নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান হয়ে থাকে মাঝেমধ্যেই।

ফলে প্রায় প্রতিটি ঘাটেরই নিজস্ব সংস্কৃতি, নিয়ম নীতি রয়েছে। হুগলি তথা গঙ্গার ধারে অবস্থিত কলকাতা শহরেও রয়েছে বহু ঘাট। এরই মধ্যে অন্যতম হল মল্লিক ঘাট। আসলে বিভিন্ন স্থানে নির্মিত এই ঘাটগুলি শহরের এক-একটি ঐতিহ্যপূর্ণ অংশ।

আরো পড়ুন: নি’ষে’ধে’র বেড়াজাল ভে’ঙে সৌদি আরবের প্রথম মেয়ে হিসেবে এভারেস্ট জ’য় করলেন তরুণী

গঙ্গার ধারে হাওড়া ব্রিজের নীচে অবস্থিত এশিয়ার সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে পুরনো ফুলের বাজার হল মল্লিক ঘাট ফুল বাজার। ফুলের বাজার এই অঞ্চলটিকে সারাদিন জমজমাট রাখে।

১৮৫৫ সালে কলকাতার বাবু নয়নচাঁদ মল্লিকের ছেলে রামমোহন মল্লিক এই মল্লিক ঘাট নির্মাণ করেন। এই ঘাটের অপর একটি নাম রয়েছে – ‘ছোটুলাল ঘাট’। কলকাতার ইতিহাস পড়লেই জানতে পারবেন এক সময় এখানে একটি আকর্ষণীয় চাঁদোয়া সহ বিশাল এক মণ্ডপ ছিল।

এই ফুল বাজারটি প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে গভীর রাত অবধি খোলা থাকে। রং বেরঙের সুগন্ধি ফুলের সমাহার সেখানে। ফুল কেনা তো রয়েছেই, তাছাড়াও শুধুমাত্র এই অভিনব বাজারকে চাক্ষুস করতে বহু পর্যটন এই বাজারে আসেন।

কেউ বা আসেন বাহারি ফুল কিনতে, আবার কেউ আসেন সুন্দর সুন্দর ছবি তুলতে। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রীরাও এই বাজারে ভিড় করে নানান ফুল চেনার জন্য।

সূর্য ওঠার সাথে সাথেই হাজার হাজার পাইকার ব্যবসায়ী এখানে কেজি কেজি রঙিন সুগন্ধী ফুল নিয়ে হাজির হন। আর প্রতিটি ফুলই টাটকা এবং তাজা।

আরো পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁ’পে উ’ঠ’লো মঙ্গলে থাকা সব যন্ত্রপাতি, তাতে বিজ্ঞানীদের কি লা’ভ হ’লো?

এছাড়া এখানে পাওয়া যায় কুচো ফুল, বিভিন্ন ধরনের মালা, ফুলের গয়না, ফুলের চাদর, ফুলের তোড়া, ফউল গাছের বীজ। অর্ডার দিলে ফুলের নানা জিনিও তৈরি করে দেন শিল্পীরা। এটিই একমাত্র জায়গা যেখানে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের ফুল বিক্রি হয়।

ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য – দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সারা বছর এখান থেকেই ফুল রপ্তানি হয়। দুর্গাপুজো, কালীপুজো ইত্যাদি বড় বড় উৎসবের সময় কোটি কোটি টাকার ফুলও এই বাজার থেকে কেনাবেচা হয়।

কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকায় ফুলের পুজো মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে মন্দির, মসজিদ, বিয়েবাড়ি, উৎসব অনুষ্ঠানের বাড়ি, হোটেল রিসর্ট প্রভৃতি সাজাতেও এখান থেকেই ফুল কেনা হয়। অনেকেরই দাবি, বিশ্বের যে কোনো ফুলের বাজারের তুলনায় এখানকার ফুলের দাম অনেক সস্তা।

আগেই বলেছি এখানে গেলেই বুঝতে পারবেন ফুল কেনা বেচা ছাড়াও এখানে অনেকে আসেন শুধুই এই বাজার ঘুরে দেখতে। আর শীতের সকাল হল এই মল্লিক ঘাটের ফুলের বাজার ঘুরে দেখার আদর্শ সময়। কুয়াশা মাখা গঙ্গার ধারে সূর্যোদয় দেখার যে কি অসীম মুগ্ধতা তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না।

আরো পড়ুন: বিরাট অ’ফা’র দি’চ্ছে iPhone, কম টাকায় Android ফোন থেকে চ’লে আ’সু’ন Apple-এ

আর শুধু ফুল নয়, ফুল বাজারে ঘুরতে গিয়ে সেখানকার কুস্তির আখড়াটিও আপনাকে অন্যরকম এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন করতে পারে। মল্লিক ঘাটের ঠিক পাশেই রযেছে একটি কুস্তির আখড়া। ভোর বেলায় কুস্তিগীররা এখানে কুস্তি খেলেন।

এছাড়া মল্লিক ঘাটের পাশেই রয়েছে চা এবং অন্যান্য খাবারের স্টল। তাই খিদে পেলে গরম গরম কচুরি খেয়ে পেট ও মনের জ্বালা জুড়াতে ভুলবেন না। আর সেই সাথে রয়েছে শান্ত সকালে গঙ্গাবক্ষে নৌকায় একটি স্নিগ্ধ ভ্রমণ।