সব খবর সরাসরি পড়তে আমাদের WhatsApp  Telegram  Facebook Group যুক্ত হতে ক্লিক করুন

ভু’তু’ড়ে পাথর দৌড়াদৌড়ি করছে এখানে! আজও র’হ’স্য ঘে’রা আমেরিকার মৃ’ত্যু উপত্যকা

লোকমুখে প্রায়ই শোনা যায় আমেরিকার Death Valley-তে নাকি ভূতুড়ে পাথর আছে। কিন্তু একথার মানে কি? এখানকার পাথর কি তবে হাঁটতে পারে? জানি একথা শুনেই আপনার চোখ কপালে উঠছে। ভাবছেন তো এমন কথা বাবার জন্মেও শোনেননি। পাথর আবার কি করে হাঁটবে! আসলে বালির উপরে পাথরের দাগ দেখে মনে হয় বিরাট চেহারার পাথরগুলো একটু আগেই ছুটোছুটি করে এখন খানিক বিশ্রাম নিচ্ছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় এই যে অ্যামেরিকার ডেথ ভ্যালির হ্রদ অঞ্চল রেসট্র্যাক প্লায়ার পাথরেরা কীভাবে নিজে নিজে স্থান পরিবর্তন করে!

ডেথ ভ্যালি নামটার সাথে বাস্তবের সত্যিই মিল রয়েছে। এখানে বৃ্ষ্টি প্রায় হয় না বললেই চলে৷ এখানে বছরের একটা সময় ভালো শীত পড়ে। কিন্তু এটি পৃথিবীর অন্যতম বিপজ্জনক উষ্ণ অঞ্চল৷ আবহাওয়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২০-র গ্রীষ্মে তাপমাত্রা ছিল ১৩০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। উষ্ণতার নিরিখে ১৯৩০ সালে গিনেস রেকর্ডও আছে ডেথ ভ্যালির। সেই বছর তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ৫৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১৩৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে। আর বছরের গড় তাপমাত্রা ৪৭ ডিগ্রি ৷ সব মিলিয়ে একটি প্রাণহীন উপত্যকা, যেখানে উদ্ভিদ ও প্রাণীর লেশমাত্র নেই।

বালি, কাঁকড়, পাথর, ন্যাড়া পাহাড় নিয়েই আমেরিকার ‘মৃত্যু উপত্যকা’। ডেথ ভ্যালিতে রয়েছে রেসট্র্যাক প্লায়া নামে একটি জলশূন্য হ্রদ। আর এই শুকনো হ্রদেই ভূতুড়ে পাথরগুলো আশ্চর্যজনকভাবে কখনও সরলরেখায়, কখনও বা বক্রাকারে নিজে থেকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়। এক থেকে সাড়ে তিনশো কেজি ওজনের পাথর ১ হাজার ফুট দূর পর্যন্ত ছুটোছুটি করে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো পাথর আবার পুরোনো অবস্থানেও ফিরে আসে। যদিও কেউ এই পাথরদের স্থান পরিবর্তন কেউ কখনও প্রত্যক্ষ করেনি।

আরো পড়ুন: পৃথিবী ছা’ড়া আরো ৬০ টি গ্রহে প্রাণের অ’স্তি’ত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে! দা’বি ভারতীয় গবেষকদের

তবে এমনটা কেন হয় সে সম্পর্কে অনেকে মনে করেন, ডেথ ভ্যালির মাটির নিচে চৌম্বকক্ষেত্র আছে। কারো মতে, মানুষকে ঘাবড়ে দিতে এলিয়েনরাই রাতের বেলায় এইসব কাণ্ড ঘটায়৷ কেউ কেউ আবার বলেন, এসব অপদেবতার কর্ম। তবে কল্পনায় তো আর জীবন চলে না। চলমান পাথরের রহস্য সন্ধানের জন্য অনেক ভূবিজ্ঞানী গ্রহবিজ্ঞানী উদগ্রীব হলেও তারা তাদের কৃতকার্যে সফল হননি। এরপর দিনের পর দিন সেই ডেথ ভ্যালিতে পড়ে থেকে শেষমেষ বিজ্ঞানী এম স্ট্যানলি সত্যের সন্ধান পান।

আরো পড়ুন: LIC: জানেন কি দাবিদারহীন কত হাজার কোটি টা’কা তহবিলে আ’ছে এলআইসি-র?

তাঁর মতে, বছরের কোনও কোনও সময় ডেথ ভ্যালির পাহাড়গুলি থেকে বৃষ্টির জল গড়িয়ে নামে রেসট্র্যাক প্লায়াতে। তখন রেসট্র্যাক প্লায়া একটি স্বাভাবিক হ্রদে পরিণত হয়। তবে জলের উচ্চতা খুব বেশি হয় না, ৭-৮ মিটার। আর রাতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নামলে হ্রদের জল পাতলা বরফে পরিণত হয়। এই সময় বরফ ও বাতাসের তীব্র ঠেলায় ভূতুড়ে দৃশ্যের মতো সরতে থাকে রেসট্র্যাক প্লায়ার পাথরগুলি।